নিরাপত্তা ঝুঁকিতে শাহজালাল বিমানবন্দর

অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের ঘাটতি, ফ্লাডলাইট ও দুর্বল সিসিটিভি ক্যামেরার কারণে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আছে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। কি পয়েন্ট ইনস্টলেশন (কেপিআই) জরিপ দলের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
dhaka airport
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফাইল ছবি

অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের ঘাটতি, ফ্লাডলাইট ও দুর্বল সিসিটিভি ক্যামেরার কারণে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আছে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। কি পয়েন্ট ইনস্টলেশন (কেপিআই) জরিপ দলের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

গত বছরের শেষ দিকে গোয়েন্দা সংস্থা, সিভিল এভিয়েশন এবং ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত এই দলটি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরিপ চালায়। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের কাছে ওই জরিপের প্রতিবেদন জমা দেন তারা।

গত বছরের এপ্রিল মাসে একই ধরনের আরও একটি জরিপ চালানো হয়েছিল। ওই জরিপে যেসব সুপারিশ করা হয়েছিল তার সামান্য অংশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলে সর্বশেষ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে আছে বলে জরিপ দলটি জানিয়েছে।

দ্য ডেইলি স্টার সর্বশেষ জরিপ প্রতিবেদনের একটি অনুলিপি হাতে পেয়েছে। যাতে বিমানবন্দরটির নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে, নিরাপত্তাজনিত কারণে এতে সমস্যাগুলো নিয়ে বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কার্গো ও রপ্তানি এলাকায় অগ্নিনির্বাপন সরঞ্জামের ঘাটতি আছে। তাই এ অঞ্চলগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

বিমানবন্দরের খুব কাছেই অনেক উঁচু উঁচু ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এ কারণেও এর নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। আগের জরিপেই বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছিল। তবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

বিমানবন্দরে প্রবেশকারী যানবাহন নিচ থেকে স্ক্যান করার জন্য চারটি গেটে ক্যামেরা বসানোর জোরালো সুপারিশ করা হয়েছে।

জরিপ দলটি প্রতিবেদনে বলেছে, ২০১২ সালে বাউনিয়ার বেড়িবাঁধে মানুষ চলাচল বন্ধ করতে একটি আন্ডারপাস বা সুড়ঙ্গ নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত সে ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, রানওয়ে-১৪ থেকে বিমানের ওঠা-নামা দেখতে প্রচুর মানুষ বাউনিয়া অঞ্চলে ভিড় করেন। এমনকি, রাতে সেখানে কিছু লেজার লাইটও ব্যবহার করা হয়। যা চালক, উড়োজাহাজ ও বিমানবন্দরের নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিমানবন্দরের এ অঞ্চলটিতে আলোক স্বল্পতা রয়েছে। কারণ, ৫৭টি ফ্লাড লাইটের আলো বিমানবন্দরের ১ হাজার ২৯৮ একর জায়গার সব কোণায় পৌঁছায় না। এছাড়া, এখানে সিসিটিভি কাভারেজও আশানুরূপ না এবং কিছু কিছু সিসিটিভি ক্যামেরা রাতে ভালো কাজ করে না বলে জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে কিছু এলাকায় নাইট-ভিশন সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং সেগুলো কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণের সুপারিশ করা হয়েছে।

বলা হয়েছে, বিমানবন্দরের ভেতরে অনেক ঝোপ রয়েছে। যা নিরাপত্তা কর্মীদের দৃষ্টিসীমায় বাধা তৈরি করে। এগুলো নির্দিষ্ট সময় পরপর ছাঁটাইয়ের সুপারিশ করা হয়েছে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, এই পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে এবং বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বাড়াতে অনেক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব পালনে কোনো ধরনের অবহেলা সহ্য করবো না। সবাইকে অবশ্যই পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে হবে। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’

বাংলাদেশ পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ক্যাপ্টেন সাজ্জাদুল হক বলেন, কাজের অগ্রগতি আপাতত কম হলেও বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ চলছে। আশা করা যায় শিগগিরই এ অবস্থার উন্নতি হবে।

তিনি বলেন, লেজারগুলো খুব বিপজ্জনক। পাইলটরা কাছাকাছি এসে এগুলোর কারণে ঠিকমতো দেখতে পান না।

মানুষের মধ্যে এ ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টির পরামর্শ দেন ক্যাপ্টেন সাজ্জাদুল হক।

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago