পিরোজপুরের আউয়ালের অভিযোগ: মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে জামিন নামঞ্জুর হয়েছিল

পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়াল মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেছেন, তার হস্তক্ষেপেই বিচারক প্রথমে জামিন নামঞ্জুর করেছিলেন।
পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়ালের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: স্টার

পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়াল মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেছেন, তার হস্তক্ষেপেই বিচারক প্রথমে জামিন নামঞ্জুর করেছিলেন।

গতকাল মঙ্গলবার জামিন নামঞ্জুর হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিচারক বদলি ও পরে আবার জামিন পাওয়ার পর আজ সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ তুলেছেন আউয়াল।

দুপুরে পিরোজপুরে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আউয়াল বলেন, জামিন পাওয়া তার আইনগত অধিকার। কিন্তু পিরোজপুর-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের হস্তক্ষেপে বিচারক প্রথমে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছিলেন। রেজাউল দুদককে প্রভাবিত করে মামলা করিয়েছে দাবি করে আউয়াল বলেন, যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তার সবগুলো ভিত্তিহীন।

আউয়ালের স্ত্রী লায়লা পারভীন, তার আইনজীবী ও আওয়ামী লীগের জেলা-উপজেলা পর্যায়ের কয়েকজন নেতা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগের ব্যাপারে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এই অভিযোগ নিয়ে বিশেষ কিছু বলতে চাই না, শুধু বলব সর্বৈব অসত্য ও মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়।’

মঙ্গলবার আউয়াল সস্ত্রীক পিরোজপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হওয়ার পর আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন ওই আদালতের বিচারক আব্দুল মান্নান। এর আড়াই ঘণ্টা পর বিচারককে তাৎক্ষণিক বদলি করে যুগ্ম জেলা জজকে ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে বিকেলে আউয়ালের আইনজীবীরা জামিনের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করলে ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ নাহিদ নাসরিন আউয়াল দম্পতিকে জামিন দেন।

জেলা জজকে বদলির এই ঘটনায় আজ রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আব্দুল মান্নানকে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ কেন অবৈধ হবে না, জানতে চেয়েছেন আদালত। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগীয় সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আসার পর বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এ রুল জারি করেন।

পিরোজপুর-১ থেকে ২০০৮ ও ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন এ কে এম এ আউয়াল। পিরোজপুর শহরে একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন পুকুর দখল, নাজিরপুরে সরকারি জমি দখল করে ভবন নির্মান করে জালিয়াতির মাধ্যমে পল্লী বিদ্যুত অফিসের কাছে ভাড়া দেওয়া এবং নেছারাবাদে সরকারি জমিতে ভবন তুলে দখল করার অভিযোগে আউয়াল এবং তার স্ত্রী লায়লা পারভীনের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করে দুদক। 

আরও পড়ুন:

আ. লীগ নেতাকে কারাগারে পাঠানো বিচারককে তাৎক্ষণিক বদলি, বিকেলে জামিন

Comments