অধিনায়ক মাশরাফির বিদায়ে কী বলছেন মুশফিক-তামিমরা

কারও কারও খেলোয়াড়ি জীবন শুরুই হয়েছে তার অধিনায়কত্বে, কেউ সতীর্থ-অধিনায়ক সব ভূমিকাতেই পেয়েছেন মাশরাফি বিন মর্তুজাকে।
Mashrafe Mortaza & Mushfiqur Rahim
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

কারও কারও খেলোয়াড়ি জীবন শুরুই হয়েছে তার অধিনায়কত্বে, কেউ সতীর্থ-অধিনায়ক সব ভূমিকাতেই পেয়েছেন মাশরাফি বিন মর্তুজাকে। অনেকের কাছে তিনি কেবল অধিনায়কই নন, অনেকটা পরিবারের ‘বড় ভাই’। খারাপ সময়ে কাঁধে মাশরাফির ভরসার হাত কম-বেশি পেয়েছেন সবাই। মাশরাফির আকস্মিক অধিনায়কত্ব ছাড়ার দিনে তাই আবেগঘন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম থেকে লিটন দাস, মোস্তাফিজুর রহমান- সকলেই।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডের আগের দিন বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঘোষণা দিয়ে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন মাশরাফি। যে সতীর্থদের লম্বা সময় নেতৃত্ব দিয়েছেন, মাশরাফির সিদ্ধান্ত তারা জেনেছেন সংবাদ সম্মেলনের ঘণ্টাখানেক আগে।

মুশফিকুর রহিম

মাশরাফি ভাইয়ের রিপ্লেসমেন্ট কখনও আসবে না। পাশাপাশি এটিও বলব, মাশরাফি ভাই পরিবারেরই একটি অংশ। মাশরাফি ভাই শুধু আমাদের জন্য বড় ভাই-ই নন, আমাদের একাংশ। অধিনায়ক হিসেবে অনেক মিস করব। উনি অধিনায়ক হওয়ার পর আমাদের দলকে আমূল বদলে দিয়েছেন। মাঠের ভেতরই নয় শুধু, মাঠের বাইেরও অনেক বদলে দিয়েছেন। অবশ্যই অনেক মিস করব। আশা করব, উনি যতদিন পারেন, যেন খেলা চালিয়ে যেতে পারেন। উনার নেতৃত্বে খেলা বা উনার সঙ্গে খেলার অন্যরকম মেজাজ আছে। আশা করি, বাংলাদেশকে ভবিষ্যতেও অনেক কিছু দিতে পারবেন।

তামিম ইকবাল

এত অল্প সময়ে মাশরাফি ভাইকে নিয়ে কথা বলা কঠিন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য উনি যা করেছেন, তা কোনো ক্রিকেটার, ক্রিকেট বোর্ড, বাংলাদেশের ক্রিকেটের সমর্থক- কারও কোনোদিন ভোলা উচিত নয়। আমাদের সবার মনের ভেতর থাকা উচিত। ২০১৫ সালে আমরা একটি জায়গায় ছিলাম, ২০১৯ সালে একটা অবস্থা এসেছি। উনার হাত ধরেই। ওয়ানডেতে, বিশেষ করে, গোটা ক্রিকেট বিশ্ব আমাদের এখন যেভাবে মূল্যায়ন করে, এটা উনার জন্যই সম্ভব হয়েছে। আমার জন্য, আমাদের জন্য যা করেছেন, কখনোই ভোলার নয়।

আমার পক্ষ থেকে উনাকে শুভকামনা জানাই। খেলোয়াড় হিসেবে তাকে কখনও পাব আমরা। আশা করি, আরও অনেক দিন তাকে পাব আমরা।

মাহমুদউল্লাহ

আমি যেটা বলতে চাই, মাশরাফি ভাই যখন অধিনায়ক ছিলেন, ভাই, বন্ধু বা অধিনায়ক যা-ই বলেন, আমি পুরো সময়টা খুব উপভোগ করেছি। আজ প্রায় ছয় বছর হলো উনি অধিনায়কত্ব করেছেন। মাশাআল্লাহ, অনেক সাফল্যও পেয়েছেন। তো আমি ওনার পরবর্তী জীবনের জন্য শুভকামনা জানাচ্ছি এবং এটায় কোনো সন্দেহ নেই যে, উনি বাংলাদেশের একজন কিংবদন্তি।

লিটন কুমার দাস

মিস তো করবই। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সেরা অধিনায়ক তিনি। ক্রিকেটারদের যেভাবে সমর্থন করে গেছেন, এটা বলার মতো নয়। বিশেষ করে জুনিয়র ক্রিকেটারদের। আমার যখন অভিষেক হয়, উনার নেতৃত্বে খেলেছি। আমার জন্য সেটি বড় পাওয়া। আমার পাশে থেকেছেন সবসময়। নতুন যারাই আসে দলে, সবাইকে সমর্থন করেন। অধিনায়ক যখন এত জোর দিয়ে একজন ক্রিকেটারের পাশে থাকে, সেটা অনেক বড় ব্যাপার। উনার ভেতর এই ব্যাপারটি অনেক বেশি আছে। আমরা তাকে অনেক মিস করব।

মোস্তাফিজুর রহমান

জানার পর থেকেই মন খারাপ। ভাইয়ের কোনো ব্যাখ্যা নাই আমার কাছে। আমাকে তিনিই নিয়ে এসেছিলেন দলে। আমার মন এখনও খারাপ।

মোহাম্মদ মিঠুন

আমরা সবাই জানি, অধিনায়ক হিসেবে তিনি ক্রিকেটারদের কাছে কেমন ছিলেন। বড় ভাই হিসেবে তিনি অসাধারণ। আমরা যে কোনো সমস্যা হলেই তার কাছে যেতাম। তিনি বুদ্ধি দিয়ে হোক, নিজে চেষ্টা করে হোক, সবসময় যে কোনো সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছেন। আমি কিছুক্ষণ আগেই শুনেছি, উনি আর অধিনায়কত্ব করছেন না। এটাই শেষ ম্যাচ। অবশ্যই উনাকে অনেক বেশি মিস করব। তারপরও তার সঙ্গে যেখানেই খেলব, অধিনায়ক না থাকলেও সবাই তাকেই নেতা হিসেবে চিন্তা করব।

তাইজুল ইসলাম

আমার ক্ষেত্রে বলব না, বাংলাদেশের প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের জন্যই মাশরাফি ভাইয়ের প্রভাবটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যখন নতুন জাতীয় দলে ঢুকছি, আসলে তখনের সহায়তাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটা যেকোনো পর্যায়ের ক্রিকেটারের জন্যই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এদিক থেকে মাশরাফি ভাইয়ের সাপোর্টটা একটু অন্যরকম ছিল। আর অধিনায়ক বলেন আর ব্যক্তি মানুষ হিসেবেই বলেন, আমরা তাকে অনেক মিস করব।

আল-আমিন হোসেন

অধিনায়ক হিসেবে তো বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল। তিনি যতদিন খেলেছেন, আমাদের আগলে রেখেছেন। কখনও অভ্যন্তরীণ বা বাইরের নেতিবাচক বিষয়গুলো আমাদের বুঝতেই দেননি, তিনি দারুণভাবে সব সামলেছেন। তিনি অধিনায়ক হিসেবে আরও কিছুদিন আমাদের সঙ্গে থাকলে ভালো হতো। কিন্তু এ বিষয়গুলো নীতিনির্ধারক যারা আছে, তারা যেটা ভালো মনে করবে, সেটাই করবে। অধিনায়ক হিসেবে কালকের ম্যাচটাই তার শেষ। আমি দোয়া করব, ভাই যেন খেলোয়াড় হিসেবে হলেও আরও কিছুদিন আমাদের সঙ্গে থাকেন।

মেহেদী হাসান মিরাজ

অনেকগুলো ওয়ানডে খেলেছি। প্রায় ৪০টার মতো ওয়ানডে খেলা হয়েছে। যে কয়দিনই ছিলাম, খুবই আগলে রেখেছেন সবাইকে। আমরা বেশিই মিস করব। বিশেষ করে আমরা। আমরা তো তাকে অল্প পেয়েছি। তারপরও যতটুকু পেয়েছি, নিজেকে সৌভাগ্যবান বলতে হয়। তার নেতৃত্ব খেলেছি, এটা জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া ছিল। অনেক সিরিজ জিতেছি তার নেতৃত্বে। অনেক মিস করব।

Comments

The Daily Star  | English
Garment factory owners revise minimum wage upwards to Tk 12,500

Workers’ minimum wage to be reviewed

In an effort to bring normalcy back to the industries, the government will review the workers’ wage through the minimum wage board, the interim government has decided.

4h ago