এসএমই খাত বিকাশে আমাদের আরও গবেষণা প্রয়োজন
আমাদের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতটি পুরোপুরি সমৃদ্ধ করার জন্য এসএমই পণ্যের চাহিদা, উৎপাদন এবং বিপণনের বিষয়ে আরও গবেষণা করা দরকার। এটা অস্বীকার করার কোনো কারণ নেই। সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময় আমাদের প্রধানমন্ত্রী এই জরুরি বিষয়টিতে যথাযথভাবে জোর দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী এসএমই পণ্যের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের চাহিদা মেটাতে অনুসন্ধান করতে বলেছেন। তিনি এটাও বলেছেন, কাঁচামালগুলো যেন স্থানীয়ভাবে সরবরাহ করা যায় তা নিশ্চিত করতে হবে। তার উল্লেখ করা আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, ক্রেতার চাহিদা বিবেচনায় রেখে পণ্য তৈরি করা উচিত।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের মাধ্যমে অসংখ্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) বড় অবদান রাখার সুযোগ আছে। কিন্তু, দ্য ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন অরগানাইজেশন ফর স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজেস ইন এশিয়া পরিচালিত একটি গবেষণা থেকে জানা যায়, আমাদের অর্থনীতিতে এই খাতের অবদান এখনো খুবই কম। মোট জিডিপিতে এসএমই খাতের অবদান বাংলাদেশে মাত্র ২০ দশমিক ২৫ শতাংশ। ভারতে যা ৮০ শতাংশ এবং চীনে ৬০ শতাংশ। আর্থিক ঝুঁকি নিতে ভয়, পরিচালনাগত সমস্যা, অর্থায়ন ও আমলাতান্ত্রিকতা এই খাতটি সঠিকভাবে বিকশিত না হতে পারার মূল কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম। গত বছর বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে গড় হিসেবে বাংলাদেশেই এসএমই খাতে বিনিয়োগ সবচেয়ে সীমিত পরিমাণে হয়।
এসএমই খাতের এগিয়ে চলার পথে সমস্যাগুলো ইতোমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। এখন সরকারের পক্ষ থেকে এই সমস্যাগুলো সমাধান করা ও এই খাতকে উত্সাহ দেওয়া উচিত। বর্তমানে এই খাতটি বাংলাদেশের মোট কর্মসংস্থানের ৩৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ পূরণ করছে। সঠিকভাবে বিকশিত হলে দেশের বেকারদের একটি বড় অংশের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করার সক্ষমতা আছে এসএমই খাতের। এ বিষয়টি মাথায় রেখেই আমাদের উচিত এ খাতে গবেষণা বাড়ানোসহ নীতিগত উদ্যোগ নেওয়া।
Comments