করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জনসচেতনতার বিকল্প নেই

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবার মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। দ্য ডেইলি স্টার এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভাইরাসটির ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও অ্যান্টিসেপটিক কিনতে ভিড় করছেন অনেকেই।
পুরান ঢাকার বাবু বাজারে পাইকারি ওষুধের দোকানে মাস্ক ফুরিয়ে যাওয়ার নোটিশ। ছবি: শাহীন মোল্লা

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবার মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। দ্য ডেইলি স্টার এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভাইরাসটির ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও অ্যান্টিসেপটিক কিনতে ভিড় করছেন অনেকেই।

ঢাকার বেশিরভাগ ফার্মেসি ও সুপারস্টোর এই পণ্যগুলোর ঘাটতির কথা জানিয়েছে। করোনাভাইরাস আতঙ্কে অনেকেই এগুলো মজুদ করছে। এমনকি ভাইরাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয় এমন তথ্য না থাকলেও টিস্যু পেপারের চাহিদাও রাতারাতি প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। এই ধরনের ক্রয় উন্মত্ততা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ তা সহজেই অনুমেয়। এভাবে মজুদ করার ফলে যাদের এই পণ্যগুলো প্রয়োজন তারা নাও পেতে পারে। যদি নিয়ন্ত্রণ করা না হয় তাহলে এভাবে আতঙ্কগ্রস্ত ক্রেতারা বাজারের নিত্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য পণ্যও কেনা শুরু করতে পারে। যার ফলে বাজারে তৈরি হবে বিশৃঙ্খলা।

বিশেষজ্ঞরা এমন আতঙ্কের কিছু ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তার মধ্যে অন্যতম, মানুষ এই রোগ কী এবং কেন হয় তা জানেন না। তারা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের কাছে এ সম্পর্কে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা পাচ্ছেন না। কারণ যাই হোক সরকারের এটি সমাধানের উপায় অবশ্যই খুঁজে বের করতে হবে। জনসাধারণকে সঙ্গে নিয়ে এই ঝুঁকি মোকাবেলার দুটি দিক আছে। প্রথমত, সবাইকে সচেতন করতে হবে। সবাই দায়িত্বশীল আচরণ করলে তা সহায়ক হবে। যার ফলে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে কেউ কিছু কিনবে না। বিদেশ থেকে যারা আসছেন তাদের অনেকেই প্রাথমিক স্ক্রিনিংয়ে করোনায় আক্রান্ত বলে শনাক্ত হচ্ছেন না। পরবর্তীতে যদি করোনার লক্ষণ দেখতে পান তবে তাদের অবশ্যই তা কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। যারা মজুত করার মাধ্যমে বাড়তি লাভ করার চেষ্টা করছেন তাদেরও কঠোরভাবে মোকাবেলা করা উচিত।

দ্বিতীয়ত, স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের এবং এই সঙ্কট মোকাবিলার দায়িত্বে যারা আছেন তাদের ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে প্রতিদিন সচেতনতামূলক প্রচার চালাতে হবে। কী করণীয় সে সম্পর্কে স্পষ্ট নির্দেশিকা সরবরাহ করতে হবে।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস দেরিতে আসার একটি সুবিধা আমরা পেয়েছি। আমরা বিশ্বব্যাপী এই ভাইরাস নিয়ে কে কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা থেকে শিখতে পারছি। উদাহরণ হিসেবে ধরা যায় কেরালার কথা। তারা ভুল তথ্য যাতে ছড়িয়ে না পরে সেজন্য একটি বিশেষ সেল গঠন করেছে। সিঙ্গাপুর বড় পরিচ্ছন্নতা প্রচারণা চালিয়েছে। দেশের প্রতিটি ঘরে বিনামূল্যে মাস্ক সরবরাহের জন্য তাদের সেনাবাহিনীকে নিযুক্ত করেছে। এমন কিছু উদাহরণ থেকে আমরা শিখতে পারি। দেশের নাগরিকরা যদি দায়িত্বশীল আচরণ না করে এবং পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণ না করা হয় তাহলে কোনো কিছুই কার্যকর হবে না।

 

Comments