আইইডিসিআরের ‘ধীর গতি’র ব্যবস্থা
করোনাভাইরাসে তিন জন শনাক্ত হওয়ার পরে ভাইরাস প্রতিরোধে আইইডিসিআরের নেওয়া ব্যবস্থা উদ্বেগ তৈরি করেছে।
গত ৮ মার্চ সংবাদ সম্মেলনে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) দেশে প্রথম করোনো আক্রান্ত রোগী পাওয়ার ঘোষণা দেয়। সেসময় বলা হয় দুজন ইতালি প্রবাসীসহ তিনজন বাংলাদেশি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, সংক্রমিতদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল এমন আরও তিনজনকে হাসপাতালে ও একজনকে নিজ বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
প্রশ্ন এসেছে— আক্রান্ত দুজন যে ফ্লাইটে ইতালি থেকে দেশে ফিরেছেন সে ফ্লাইটের যাত্রী ও ঢাকা বিমানবন্দরে যে যাত্রীদের সংস্পর্শে এসেছেন তাদের কী হবে?
আইইডিসিআর ওই ফ্লাইটের কয়েকজন যাত্রীর তথ্য চেয়েছিল বলে জানতে পারে দ্য ডেইলি স্টার। আইইডিসিআর এই তথ্য চেয়েছিল তিনজনের করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়ার দুদিন পর গত সোমবার।
আইইডিসিআর ও বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার পর্যন্ত আইইডিসিআর বাংলাদেশে এই তিনজনের সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাদের চিহ্নিত করতে পারেনি।
ইতালি থেকে আসা একজন বাংলাদেশি গত ২৬ ফেব্রুয়ারি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন বলে জানা যায় তার এক আত্মীয় ও বিমানবন্দর সূত্রে। তার মাধ্যমে ভাইরাসে আক্রান্ত হন তার স্ত্রী।
করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার আগে তিনি তার শহরে একটি স্থানীয় ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়েছিলেন বলে নিশ্চিত হয়েছে ডেইলি স্টার। সেই ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে কাউকে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, অপর ইতালি প্রবাসী এ মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশে ফিরেছিলেন।
সূত্র আরও জানায়, আইইডিসিআর দুটি ফ্লাইটের প্রতিটি থেকে আটজন যাত্রীর তথ্য চেয়েছিল। তারা আরও জানিয়েছে, বিমানবন্দরের কোনো কর্মকর্তাই কোয়ারেন্টাইনে থাকেননি।
৮ মার্চ সংবাদ সম্মেলনে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা ফ্লাইট দুটির অন্য যাত্রীদের তথ্য প্রকাশ করেননি গোপনীয়তার প্রসঙ্গ সামনে এনে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফোনে যোগাযোগ করা হলে, আর কোনো যাত্রীকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে কিনা তা তিনি জানাতে পারেননি।
অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, ‘আপনি কেন যাত্রীদের ব্যক্তিগত তথ্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন? আমি কারো কোনো ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করতে পারি না।’
তার দাবি, এরইমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী করোনাভাইরাস আক্রান্ত তিনজনের সংস্পর্শে আসা সবাইকে শনাক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘প্রটোকল অনুযায়ী কোনো ফ্লাইটের যাত্রী সংক্রামিত হয়েছে বলে শনাক্ত হলে ফ্লাইটে তার সামনে ও পিছনের সারিতে বসা যাত্রীদের ফলোআপ করতে হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে আইইডিসিআর প্রধান জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস আক্রান্ত দেশ থেকে আসা সব উড়োজাহাজ জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বিধি মোতাবেক সব এয়ারলাইনস তাদের উড়োজাহাজ সঠিকভাবে জীবাণুমুক্ত করতে বাধ্য এবং তারা তা করে।’
বিমানবন্দর সূত্রে ডেইলি স্টার জানতে পারে, উড়োজাহাজগুলোকে জীবাণুমুক্ত করার বিষয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ কেবল গত মঙ্গলবার ক্লিনিং সেবা প্রদানকারী সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সঙ্গে বৈঠক করেছে।
বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ-উল আহসান গতকাল বুধবার ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস অন্যান্য এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজ পরিষ্কার করার জন্য দায়বদ্ধ। আমরা গতকাল (মঙ্গলবার) একটি সভা করেছি। তারা এখন থেকে এটা করবে।’
(সংক্ষেপিত, পুরো প্রতিবেদনটি পড়তে এই IEDCR was ‘slow to act’ লিংকে ক্লিক করুন)
Comments