অর্থের অভাবে আটকে গিয়েছিল করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক পরীক্ষা

কয়েক বছর আগেই করোনাভাইরাসের কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরির প্রায় কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন একদল আমেরিকান বিজ্ঞানী।
Dr Peter Hotez
টেক্সাস শিশু হাসপাতালের ভ্যাকসিন ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের সহ-পরিচালক ডক্টর পিটার হোটেজ। ছবি: এপি ফাইল ফটো

কয়েক বছর আগেই করোনাভাইরাসের কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরির প্রায় কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন একদল আমেরিকান বিজ্ঞানী।

দলটির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন টেক্সাস শিশু হাসপাতালের ভ্যাকসিন ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের সহ-পরিচালক ডক্টর পিটার হোটেজ।

২০১৬ সালে বিজ্ঞানীদের ওই দলটি সার্স নামক করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক নিয়ে কাজ করছিলেন। সে সময় তারা ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য অর্থের খোঁজ করছিলেন বলে সংবাদমাধ্যম এনবিসির প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে।

তবে, অর্থের যোগান না থাকায় দীর্ঘ গবেষণার পরেও ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা তারা সে সময় পরীক্ষা করতে পারেননি।

বিষয়টি নিয়ে আফসোস করে ড. পিটার এনবিসিকে জানান, এখন কোভিড-১৯ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য বিশ্বের হাতে হয়তো একটা প্রতিষেধক থাকতে পারত।

এটাকে বড় সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে বলে মনে করছেন পিটারসহ অন্যান্য ভ্যাকসিন গবেষকরা।

তারা মনে করেন, মারাত্মক করোনাভাইরাস সার্স ও মার্সের প্রাদুর্ভাবের পর এ নিয়ে গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ হওয়া উচিত ছিল।

২০০৩ সালে চীনা চিকিৎসকরা সার্স ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসার জন্য ‘সেরে ওঠা আক্রান্তের প্লাজমা’ ব্যবহার করেন। তখন এতে তারা বেশ ভালো ফল পাওয়া গিয়েছিল।

২০১৪ সালে, ইবোলায় আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘সেরে ওঠা আক্রান্তের দান করা প্লাজমা’ ব্যবহার করতে নির্দেশ দিয়েছিল।

‘সেরে ওঠা আক্রান্তের প্লাজমা’ ব্যবহারের পদ্ধতি হলো, মূলত রোগীদের রক্ত থেকে ভাইরাস-সংঘটিত অ্যান্টিবডি সংগ্রহ করা। পদ্ধতিটি বেশ পুরনো হলেও গত দশকে যুক্তরাষ্ট্রে এটি তেমন ব্যবহার করা হয়নি।

পিটার আফসোস করে বলেন, পদ্ধতিটি হয়তো নতুন করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কাজে লাগতো।

‘চীনে এই নতুন ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরুর দিকেই আমরা এর ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে প্রস্তুতি নিতে পারতাম,’ তিনি বলেন।

তিনি জানান, হাসপাতালগুলোতে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য ভেন্টিলেটর ছাড়া কিছুই নেই।

‘এটি দুঃখজনক যে আমাদের এই মহামারি ঠেকাতে কোনও ভ্যাকসিন প্রস্তুত নেই,’ উল্লেখ করে পিটার বলেন, ‘স্পষ্টভাবে বলতে গেলে এই মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই করার এমন মুহূর্তে আমাদের হাত বাঁধা।’

করোনাভাইরাসের কারণে নার্সিংহোমে থাকা বয়স্কদের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর্মীদের বিষয়ে তিনি বিশেষত উদ্বিগ্ন।

মারাত্মক এই নতুন করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়ে মানুষের জীবন ও অর্থনীতিতে প্রচণ্ড আঘাত করেছে।

‘নতুন করোনাভাইরাসে ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি এবং গবেষণার জন্য যে অর্থ ব্যয়ের কথা বলা হচ্ছে তা যথেষ্ট পরিমিত,’ মন্তব্য পিটারের।

তিনি আশা করেন, মহামারি কোভিড-১৯ ভাইরাসের গুরুতর হওয়ার কারণে এর গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত অর্থের বিনিয়োগ হবে। সার্স বা ইবোলা নিয়ে গবেষণার মতো অর্থের অভাবে এটি আটকে থাকবে না।

Comments

The Daily Star  | English

Dengue: 5 die, 534 hospitalised today

Among the fatalities, two were reported in Dhaka city, two in Chattogram division, and one in Khulna division.

27m ago