‘এনকাউন্টারে দিয়ে দাও, আজকেই শেষ দিন’

ঘরের দরজা ভেঙে তুলে নিয়ে মধ্যরাতে আদালত বসিয়ে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে সাজা দেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় অকথ্য মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন আরিফুল। ১৩ মার্চের সেই রাতের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার বর্ণনায় আরিফুল বলেন, এক সময় তাকে এনকাউন্টারে দেয়ার কথাও বলা হয়। বলা হয় ‘আজই তোর শেষ দিন।’
বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল বলেন, রাত ১২টার পরপরই তারা দরজা ভেঙে আমার ঘরে ঢোকেন। প্রথমেই মাথায় কিল ঘুষি মারতে থাকেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরডিসি নাজিম উদ্দিন।
আরিফুল বলেন, ‘এসময় অকথ্য ভাষায় আমাকে গালিগালাজ করা হয়। আমি জানতে চাই কী অপরাধ আমার। কিন্তু তারা কোনো কথাই শোনেনি। টেনেহিচড়ে গাড়িতে নিয়ে যায়।’
‘বড় সাংবাদিক হয়ে গেছস। তোর সাংবাদিকতা ছোটাব। ডিসির বিরুদ্ধে লিখিস।’ বলে শাসানো হয় আরিফুলকে।
নির্দেশ মোতাবেক আরিফুলের হাত-চোখ বেঁধে ফেলা হয়। বলা হয়, ‘এর আজকেই দিন শেষ। এরে এনকাউন্টারে দিয়ে দেব।’
নিজের দুই শিশু সন্তানের কথা বলে ক্ষমা চাইলেও এসময় তারা কোনো দয়া-মায়া দেখায়নি বলে জানান আরিফুল। বারবার বাঁচার আকুতি জানান আরিফুল।
আরিফুলকে বলা হয়, ‘কলমা পড়ে নে। তোর সময় শেষ।’
'আমি আল্লাহকে ডাকা শুরু করি। সন্তানদের দোহাই দিয়ে ক্ষমা চাই,' বলেন আরিফুল।
এরপর আরিফুলকে নিয়ে যাওয়া হয় ডিসি অফিসে। সেখানে বেধরক পেটানো হয় বলে বলে জানান তিনি। এসময় বিবস্ত্র করে ভিডিও করা হয় বলে জানান তিনি। পেটানোর পর কাগজে চারটি সই নেয়া হয়।
আরিফুল বলেন, 'এসময় পুলিশ আসার খবর পেয়ে তারা আমাকে অন্যপথে জেলগেটে নিয়ে যান।'
সেখানে আদশ দেয়া হয়, ‘আমি কারাগারে থাকব, এক মাস দেখা সাক্ষাৎ নাই এবং কোনো চিকিৎসা পাব না।’
আরিফুল দাবি করেন, জেলা প্রশাসকের ব্যক্তিগত আক্রোশেই এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
Comments