পরীক্ষা না হলে শঙ্কা-আতঙ্ক কাটবে না

বেসরকারি হাসপাতালেও করোনাভাইরাস পরীক্ষার সুবিধা সম্প্রসারণের দাবি তুলছেন ভারতের বিশেষজ্ঞরা। এনডিটিভির খবরে জানানো হয়, বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে ১৮৯৬ সালের আইন অনুযায়ী করোনা পরীক্ষা থেকে বিরত রেখেছে ভারত সরকার। ঔপনিবেশিক আমলের ওই আইনটি প্লেগ সংক্রমণ রুখতে করা হয়েছিল। বাংলাদেশেও একমাত্র আইইডিসিআরে করোনা পরীক্ষার সুবিধা রয়েছে। এই অবস্থায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক সংখ্যক মানুষের মধ্যে করোনা ছড়িয়ে পড়লে কী উপায়ে পরীক্ষা হবে তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই তৈরি হচ্ছে উদ্বেগ।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোখার এই মুহূর্তে একমাত্র উপায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তিকে আলাদা করে রাখা যাতে তার সংস্পর্শে এসে নতুন করে কেউ সংক্রমিত না হন। এর জন্য করোনায় আক্রান্তকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে চিহ্নিত করা দরকার। করোনাভাইরাস রুখতে এদিক থেকেই পিছিয়ে পড়ছে ভারত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতে যথেষ্ট মানুষের করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে না।

নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে এই উদ্বেগের কথা বলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। জাতিসংঘের সংস্থাটির মতে, সন্দেহভাজন করোনা রোগীদের চিহ্নিত করা না গেলে হঠাৎই হাজার হাজার মানুষের শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। সেক্ষেত্রে তা জানাও যাবে না। তখন ওই সংক্রমণের শিকার ব্যক্তিদের সংস্পর্শে লাফিয়ে বাড়তে পারে নতুন সংক্রামিত ব্যক্তির সংখ্যা। এই অবস্থায় বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে করোনাভাইরাস পরীক্ষার সুবিধা সম্প্রসারণের দাবি জানাচ্ছেন ভারতের বিশেষজ্ঞরা।

এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের গতিরোধ করতে পেরেছে হাতে গোনা যেকটি দেশ তার মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া অন্যতম। দেশটিতে এরই মধ্যে দুই লাখের বেশি মানুষের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুততম সময়ে করোনা পরীক্ষায় অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এই দেশটি। এর জন্য সেখানে কাউকে হাসপাতালেও যেতে হচ্ছে না। ব্যবহার হচ্ছে ড্রাইভ থ্রু ধারণা। দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন জায়গায় এমনভাবে অস্থায়ী ল্যাব তৈরি করা হয়েছে, যেখানে গাড়ি নিয়ে ঢোকা যায়। গাড়িতে থাকা অবস্থায় সম্ভাব্য রোগীর নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করে কয়েক মিনিটের মধ্যে ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে। আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে আলাদা করে ফেলা হচ্ছে। লস এঞ্জেলেস টাইমস জানিয়েছে, এভাবে প্রতিদিন গড়ে ১২ হাজার মানুষের করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ায়।

অন্যদিকে বাংলাদেশের আইইডিসিআর এর মতো ভারতেও করোনা পরীক্ষার জন্য একমাত্র ভরসা সরকারি প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। যারা বিদেশ ভ্রমণ করেননি কিন্তু ফ্লু-এর মতো উপসর্গ রয়েছে এমন মাত্র ২০ জনের পরীক্ষা করা হয়েছে ফেব্রুয়ারির শেষ ১৫ দিনে। ইকোনমিক টাইমসের খবরে জানানো হয়, আইসিএমআর-এর ৫১টি পরীক্ষাগারে করোনা শনাক্ত করার ব্যবস্থা বিস্তৃত করা হয়েছে।

ঢাকায় আইইডিসিআর এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সোমবার জানান, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত তারা ২৪১ জনের করোনাভাইরাস পরীক্ষা করেছেন। সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ জনের পরীক্ষা করা হয়েছে। গত ৭৪ দিন ধরে এই পরীক্ষায় বাংলাদেশে আট জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus promises election on time

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus yesterday reaffirmed his commitment to holding the 13th national election in the first half of February next year.

6h ago