আরও ২ করোনা রোগী শনাক্ত
দেশে নতুন করে আরও দুই জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। এ নিয়ে মোট ১০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিন জন সুস্থ হয়ে গেছেন।
আজ মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আয়োজিত কোভিড-১৯ এর সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘নতুন দুই জনের মধ্যে এক জন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। আরেকজন একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি বিদেশ থেকে এসেছিলেন এমন একজনের সংস্পর্শে ছিলেন।’
‘আমরা আবারো দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, পারিবারিকভাবেও কিন্তু খুব শক্তভাবে আমাদের এই কোয়ারেন্টিন বা সেলফ-কোয়ারেন্টিন পালন করতে হবে। পরিবারের সদস্যের মধ্যে কিন্তু আমরা সংক্রমণ দেখতে পাচ্ছি’, যোগ করেন তিনি।
মীরজাদি বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় আইইডিসিআরের হটলাইনে ৪ হাজার ২০৫টি ফোন পেয়েছি। এর মধ্যে কোভিড সংক্রান্ত ফোন ৪ হাজার ১৬৪টি। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়েছে। এ মুহূর্তে আইসোলেশনে আছেন ১৬ জন। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৩ জন। এ ছাড়া, সর্বমোট কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস শনাক্ত করেছি ১০ জনের মধ্যে।’
তিনি বলেন, ‘কোনো অফিস কিংবা বাড়িতে যদি কোনো ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকে, পারিবারিক বা সামাজিক অনুষ্ঠান, সেগুলো আমরা এ মুহূর্তে বন্ধ রাখি। যেখানে এমন কেউ আসতে পারে, যার মধ্যে সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে, অর্থাৎ যিনি বিদেশ থেকে এসেছেন বা এরকম কারো আত্মীয়-স্বজন যদি হয়, সেক্ষেত্রে আমরা অনুষ্ঠানগুলো না করি।’
‘বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কমিউনিটি ট্রান্সমিশন নেই। অর্থাৎ, সামাজিকভাবে এখনও ছড়িয়ে পড়েনি। সেজন্য হাঁচি, কাশি, সর্দি, গলা ব্যথা— এসব হলেই করোনা নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হবেন না’, বলেন তিনি।
বিদেশি বায়ারদের পোশাক কারখানা পরিদর্শন না করার আহ্বান
আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘পোশাক শিল্প মালিকরা আমাদের কাছে পরামর্শ চেয়েছেন। তাদের জন্য বলবো, অনেক সময় বিদেশি বায়াররা আসেন। কোনো বায়ার যদি দাপ্তরিক কাজে এসে থাকেন, তারা যেন কারখানা পরিদর্শন না করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের চেক করে করে ঢোকানো হয়। তখন যদি রোগের লক্ষণগুলো পরীক্ষা করে নেন। জেনে নেন, তাদের মধ্যে জ্বর, সর্দি, গলা ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি রয়েছে কি না। সে ক্ষেত্রে তাদের আমরা বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে পারি। যতদিন সুস্থ না হবেন, ততদিন তারা বাড়িতে থাকবেন। শিল্প মালিকদের আমরা অনুরোধ করবো, সবেতনে যেন তাদের ছুটির ব্যবস্থা করা হয়। তা না হলে তারা তথ্য গোপন করতে পারেন। আমরা সবার সহযোগিতা কামনা করছি।’
সরাসরি হাসপাতাল বা আইডিসিআর-এ না যাওয়ার আহ্বান
আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম আইডিসিআরে কেউ যাতে না আসেন। তারপরেও যারা চলে এসেছিলেন, যেহেতু আমরা পরশু ঘোষণা করেছিলাম, তাই গতকাল পর্যন্ত কাউকে ফিরিয়ে দেইনি। আমি আবারো অনুরোধ করছি, যারা আসছেন তাদের এবং যারা পাঠাচ্ছেন তাদেরকেও, আইইডিসিআরে সরাসরি কেউ আসবেন না, কাউকে পাঠাবেন না।’
‘যারা বিদেশ থেকে এসেছেন অথবা করোনা আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে গিয়েছিলেন অথবা বিদেশ থেকে এসেছেন এমন কারো সংস্পর্শে ছিলেন, তাদের মধ্যে যদি করোনা সংশ্লিষ্ট লক্ষণ থাকে, তারা সরারসি হাসপাতালে না গিয়ে আইইডিসিআরের হটলাইনে যোগাযোগ করুন। হাসপাতালে পাঠানোর প্রয়োজন হলে আমরাই অ্যাম্বুল্যান্সের মাধ্যমে নিয়ে আসবো। আমরা চাইনা এক্ষেত্রে আপনারা গণপরিবহন ব্যবহার করেন। যদি বাড়ি থেকে নমুনা আনতে হয়, আমাদের টিম গিয়ে আনবে। সরাসরি হাসপাতাল বা কোথাও চলে যাবেন না। যারা ১৪ দিনের মধ্যে বিদেশ থেকে এসেছেন অথবা বিদেশ থেকে আগত কারো সংস্পর্শে এসেছেন বা আক্রান্ত সন্দেহ করা হচ্ছে এমন কারো সংস্পর্শে এসেছেন, তাদের জন্য এটি প্রযোজ্য’, বলেন তিনি।
Comments