করোনাভাইরাস: মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় ওষুধ কিনতে না পেরে বিপর্যস্ত ইরান

সারা পৃথিবীর চোখ ইউরোপ বা ইতালির দিকে। ইরান যেন চলে গেছে লোকচক্ষুর অন্তরালে। অথচ ভয়াবহ মাত্রায় দেশটিতে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। প্রতি দশ মিনিটে মৃত্যু হচ্ছে একজনের। প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা। মার্কিন উদ্যোগে ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা কঠিন থেকে কঠিনতর করা হয়েছে।
তেহরানের রাস্তায় মাস্ক পরে চলাফেরা করছেন ইরানিরা। ছবি: রয়টার্স

সারা পৃথিবীর চোখ ইউরোপ বা ইতালির দিকে। ইরান যেন চলে গেছে লোকচক্ষুর অন্তরালে। অথচ ভয়াবহ মাত্রায় দেশটিতে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। প্রতি দশ মিনিটে মৃত্যু হচ্ছে একজনের। প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা। মার্কিন উদ্যোগে ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা কঠিন থেকে কঠিনতর করা হয়েছে।

বিশ্ববাজার থেকে অন্যান্য পণ্যের মত ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামও কিনতে পারছে না ইরান। ফলে মহামারি রূপ নেওয়া কোভিড-১৯ প্রতিরোধ করতে পারছে না দেশটি।

গত বুধবার মাদ্রিদে ইরানের রাষ্ট্রদূত হাসান কাশকাভি ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সংগ্রহ করতে না পারার বিষয়ে  অভিযোগ করেছেন বলে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম প্রেসটিভির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ইরানের রাষ্ট্রদূত বলেন, ইরানই একমাত্র দেশ যারা যুক্তরাষ্ট্রের ‘নিষ্ঠুর ও অমানবিক’ নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্ব বাজার থেকে ওষুধ ও চিকিত্সা সরঞ্জাম কিনতে পারছে না। যা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইকে বাধাগ্রস্ত করছে। 

তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেন। ‘ইরানের বিরুদ্ধে চলমান চাপকে আরও কঠোর করতে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবকে তারা সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করছে,’ যোগ করেন তিনি।

গত বুধবার ওয়াশিংটনের ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা ও নিন্দা করেছেন ইরানের বিচার বিভাগের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কাউন্সিলের প্রধান আলী বাকেরি কানি। তিনি বলেন, ইউরোপের বেশিরভাগ দেশ নিষেধাজ্ঞাগুলো মেনে চলেছে। যা কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে ইরানের লড়াইকে আরও কঠিন করে তুলেছে।

তিনি আর বলেন, ইউরোপীয়রা সবসময় দাবি করে থাকে তারা মানবাধিকারের সমর্থক। কিন্তু, এমন কঠিন পরিস্থিতিতে তাদের আচরণের জন্য লজ্জিত হওয়া উচিৎ। তারা ভালো করেই জানে ইরানে করোনাভাইরাস খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ বিষয়ে চুপ থাকাও মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে ইরান মনে করে।

পাকিস্তানে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আলী হোসেইনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে উচিত ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। এসব নিষেধাজ্ঞা ইরানের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত করছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক (ডাব্লিউএইচও) টেড্রস অ্যাডহানম গ্রেব্রেইয়েসুস বরাত দিয়ে লেবাননের আল-মায়াদিন টেলিভিশন চ্যানেল বলেছে, ওয়াশিংটন ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার কিছুটা শিথিল করতে রাজি হয়েছে।

ডাব্লিউএইচও মহাপরিচালক বলেন, গত মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সঙ্গে তার কথা হয়েছে। তখন তিনি করোনভাইরাস প্রার্দুভাব থেকে ইরানের নিরাপত্তার বিষয়ে জোর দেন।

যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব জরুরী পরিস্থিতিতে নিষেধাজ্ঞার কিছু অংশ বিশেষত ব্যাংকিং খাতে স্থগিত করতে রাজি হয়েছে বলে তিনি জানান।

ডাব্লিউএইচওর জরুরি কর্মসূচির নির্বাহী পরিচালক মাইক রায়ান বলেছেন, তারা নিয়মিতভাবে ইরানের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

ইরানে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ হাজার ৬৪৪ জন এবং মারা গেছেন ১ হাজার ৪৩৩ জন।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

5h ago