ঘরে থাকুন নিরাপদে থাকুন

পুরো পৃথিবীতে এক ভয়াবহ পরিবেশ তৈরি করেছে করোনাভাইরাস। প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন কয়েক হাজার মানুষ, মারাও যাচ্ছেন কয়েকশ। এর থেকে উত্তরণের এখন পর্যন্ত একমাত্র কার্যকর ব্যবস্থা হচ্ছে দূরত্ব বজায় রাখা। সহজ কথায় বলতে গেলে যা দাঁড়ায় ‘ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন’।
France corona
প্যারিসের একটি রেল স্টেশন। ১৭ মার্চ ২০২০। ছবি: রয়টার্স

পুরো পৃথিবীতে এক ভয়াবহ পরিবেশ তৈরি করেছে করোনাভাইরাস। প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন কয়েক হাজার মানুষ, মারাও যাচ্ছেন কয়েকশ। এর থেকে উত্তরণের এখন পর্যন্ত একমাত্র কার্যকর ব্যবস্থা হচ্ছে দূরত্ব বজায় রাখা। সহজ কথায় বলতে গেলে যা দাঁড়ায় ‘ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন’।

রয়টার্সে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো করোনা মোকাবিলায় তার দেশের নাগরিকদের আচরণে খুশি নন। নাগরিকরা যাতে ঘরে থাকে তার জন্য সবার খাবার ও বেতন সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়ার ঘোষণা আসার পরও সবাই ঘরে থাকছেন না।

মানুষ সামাজিক জীব হওয়ায় সমাজবদ্ধ হয়ে চলতেই অভ্যস্ত। যার কারণে, ঘরে বসে থাকাটা বেশ কষ্ট সাধ্য। আর এভাবে ঘরে থাকা বা আলাদা থাকাটা কষ্ট সাধ্য হওয়াতেই করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়ছে এবং আরও বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকছে।

গতকাল সোমবার ট্রুডো সবার উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘যথেষ্ট হয়েছে। ঘরে ফিরুন এবং ঘরে থাকুন। আমরা এটা নিশ্চিত করতে চাই যে সবাই ঘরে আছেন। তা এই ভাইরাসের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করেই হোক কিংবা প্রয়োজন হলে নিয়মের কড়াকড়ি আরোপ করেই হোক।’

ওয়ার্ল্ডওমিটার্সের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কানাডায় এখন পর্যন্ত সংক্রমিত হয়েছেন দুই হাজার ৯১ জন এবং মারা গেছেন ২৪ জন।

চীনের উহান থেকে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়া নতুন করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে এনেছে চীন। সবাইকে নিজ নিজ অবস্থানে অবরুদ্ধ রেখে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করেছে তারা। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের হিসেব অনুযায়ী, নিয়ন্ত্রণে আসার আগে এই ভাইরাসটি চীনে তিন হাজার ২৭৭ জনের প্রাণহানির কারণ হয়েছে।

ইউরোপে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ইতালির। দেশটিতে এরই মধ্যে করোনা সংক্রমিত হয়ে ছয় হাজার ৭৭ জন মারা গেছেন। সংক্রমিত হয়েছেন ৬৩ হাজার ৯২৭ জন।

শুরুর দিকে, ইতালির উত্তরাঞ্চলে কোভিড-১৯ এর প্রভাব ছড়িয়ে পরলে তা ‘রেড জোন’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে পুরো ইতালিই অবরুদ্ধ করে দেওয়া হয়। দেশের নাগরিকরা যাতে অত্যন্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না আসেন তার জন্য কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। আরোপ করা হয় ২৩২ ডলার জরিমানা ও ছয় মাসের জেল।

সিএনএনে প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, কড়াকড়ির পরও ইতালির কয়েকটি শহরের বাসিন্দারা বের হচ্ছেন ঘর থেকে। তাদের ঘরে ফেরাতে শহরের মেয়ররা পথে নেমেছেন। ইতালির বারি, এন্টোনিও ডেকারো, গুয়াল্ডো টাডিনো শহরের মেয়ররা সবাইকে ঘরে থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে নির্দেশ না মেনে বাইরে বের হওয়া ইতালিতে করোনা সংক্রমণ বাড়ার একটি অন্যতম প্রধান কারণ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েব সাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই ভাইরাস থেকে বাঁচার উপায়ের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে বারবার সাবান-পানি বা অ্যালকোহলযুক্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার রাখা; চোখ, নাক বা মুখে হাত না দেওয়া; জ্বর, কাশি এবং শ্বাস কষ্ট হলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

Comments