দক্ষিণ আফ্রিকার কান্নাভেজা সেই দিন
মাটিতে শুয়ে পড়েছিলেন ডেল স্টেইন। ছক্কা মেরে ম্যাচ জিতিয়ে উল্লাস করার আগেই গ্রান্ট এলিয়ট তাকে টেনে তুললেন! আরও একবার হলো না দক্ষিণ আফ্রিকার। এত কাছে তবু কত দূরে! বিশ্বকাপ ফাইনালে যেতে না পারার একের পর এক ট্র্যাজেডিতে প্রোটিয়াদের খাতায় আজকের এই দিনে জমা হয়েছিল আরেকটি হাহাকার।
২৪ মার্চ ২০১৫। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা। দুদলই ছিল প্রথমবার ফাইনালে উঠার মিশনে। সেদিন ডেল স্টেইন, এভিডি ভিলিয়ার্সদের কাঁদিয়ে ১ বল বাকি থাকতে ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠে যায় কিউইরা।
কিন্তু এই কান্না যেন দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য ধারাবাহিক ট্রাজেডির আরেক পর্ব। ১৯৯২, ১৯৯৬, ১৯৯৯, ২০০৩। কখনো সেমিফাইনাল, কখনো কোয়ার্টারফাইনাল, কখনো গ্রুপ পর্ব। প্রতিবারই দুর্দান্ত সব দল নিয়ে অদ্ভুতভাবে লড়াই থেকে ডানা ভেঙে যাওয়ার নজির তাদের।
ছন্দে থাকা প্রজন্মের সেরা ক্রিকেটারদের নিয়েই ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে গিয়েছিল প্রোটিয়ারা। আগের সব হিসাব বুঝিয়ে দেওয়ার বড় সুযোগ ছিল সামনে। ডেন স্টেইন, ভারনন ফিল্যান্ডার, মরনে মরকেলদের পেস আক্রমণ। ব্যাটিংয়ে হাশিম আমলা, কুইন্টেন ডি কক, এভিডি ভিলিয়ার্স, ফাফ দু প্লেসি, ডেভিড মিলার। কে নেই? তবু হয়নি।
বৃষ্টির বাগড়ায় ম্যাচ পড়েছিল ডি/এল মেথডের সমীকরণে। বারবার রঙ বদলানো ম্যাচে শেষ ওভারে নিউজিল্যান্ডের চাই ১২ রান। ড্যানিয়েল ভেট্টোরিকে নিয়ে তখন ক্রিজে গ্রান্ট এলিয়ট। প্রথম দুই বল থেকে এল ২ রান। তৃতীয় বলে স্টেইনের ইয়র্করে ব্যাট পেতে ভেট্টোরি পেয়ে গেলেন বাউন্ডারি। চতুর্থ বলে আরও ১ রান। শেষ ২ বলে কিউইদের চাই ৫ রান। এলিয়ট লঙ অন দিয়ে উড়িয়ে দিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার সব আশা। এই এলিয়ট যার কিনা জন্ম আর বেড়ে উঠা দক্ষিণ আফ্রিকাতেই!
অথচ ম্যাচটা থাকতে পারত ভিলিয়ার্সদের হাতের মুঠোতেই। ফিল্ডিংয়ে দুর্দান্ত দক্ষিণ আফ্রিকা সহজ দুই রান আউট মিস করল। শেষ মুহূর্তেও গিয়ে ফসকালো ক্যাচ। চোখে মুখে অবিশ্বাস নিয়ে স্তব্ধ হয়ে বসে রইলেন ভিলিয়ার্স, তার গাল বেয়ে তখন অশ্রুধারা। হতাশায় গড়াগড়ি খেলেন মরকেল। দলবেধে কান্নায় ভেসে মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।
হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকার। চোকারস বদনাম কুড়ানো প্রোটিয়াদের বিশ্বকাপে এলেই কেন যে হয় না আর। এই হতাশা ২০১৯ বিশ্বকাপেও কাটাতে পারেনি তারা।
Comments