প্রচারণার নয়, বেঁচে থাকার যুদ্ধ

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পরিমাণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতৃত্বের সংকট দেখা দিচ্ছে। দুর্ভাগ্যক্রমে সময়ের সঙ্গে এই সংকট আরও বাড়ছে। দেশে যখন ভাইরাসটির কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে তখন কর্তৃপক্ষের প্রস্তুতিতেই ঘাটতি আছে বলে মনে হচ্ছে।
Health_minister_19Mar2020
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সচিবালয়ে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পরিমাণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতৃত্বের সংকট দেখা দিচ্ছে। দুর্ভাগ্যক্রমে সময়ের সঙ্গে এই সংকট আরও বাড়ছে। দেশে যখন ভাইরাসটির কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে তখন কর্তৃপক্ষের প্রস্তুতিতেই ঘাটতি আছে বলে মনে হচ্ছে।

এত উদ্বেগের মধ্যেও করোনা পরীক্ষার কিটের অভাব, চিকিৎসক ও নার্সদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জামের (পিপিই) অভাব, আইসিইউ ও আইসোলেশন ইউনিটের অভাব, সারা দেশে পরীক্ষার সুবিধার অভাব এবং জরুরি ব্যবস্থা ও গাইডলাইনের অভাব রয়েছে। গত সোমবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মন্তব্য করেছেন, ‘আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত’ এবং দেশের পরিস্থিতি এখনও অনেক দেশের থেকে ভালো। তার এই মন্তব্য বিভ্রান্তিকর ও অবাস্তব। তার কথাগুলো যদি জনসাধারণের মনোবল বাড়ানোর জন্য হয়ে থাকে তাহলে বাস্তবে এর বিপরীত হয়েছে। কারণ বিভ্রান্তির এই সময়ে জনসাধারণ চায় সত্য জানতে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এমন আত্মতৃপ্তি আমাদের আরও বেশি ক্ষতির কারণ হতে পারে।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে, মনে হচ্ছে দেশে এখন প্রচারণা যুদ্ধ চলছে। যার মাধ্যমে মূলত ভুলগুলো হোয়াইটওয়াশ করার দিকেই মনোযোগ। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাত নড়বড়ে, এটা স্বীকার করতে লজ্জা নেই। ইতালি ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশও পিপিই ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবে আছে, এটা স্বীকার করতে লজ্জা নেই। সমস্যার সমাধানের জন্য যদি সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে এসব বিষয় স্বীকার করা হয় তবে তা সাধুবাদ প্রাপ্য। তবে করোনাভাইরাস নিয়ে আমাদের অবস্থান এখনও ‘করবো’ মানসিকতায় আটকে আছে। ১৬ কোটি মানুষের দেশে এখন পর্যন্ত মাত্র ৭৯৪ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এত অল্প পরিমাণ পরীক্ষার কারণে আমরা সঠিকভাবে জানিও না ভাইরাসটি প্রকৃতপক্ষে কতটা বিস্তার লাভ করেছে।

অন্যান্য দেশের ভাইরাস প্রতিরোধের মানের সঙ্গে তুলনা করলে সরকারের এই সংকট মোকাবেলায় সাফল্য পাওয়ার জন্য আরও অনেক বেশি কিছু করতে হবে। স্থানীয়ভাবে টেস্টিং কিট উৎপাদন দ্রুততার সঙ্গে করা দরকার, যাতে পরীক্ষার পরিমাণ বাড়ানো যায়। প্রতিটি বিভাগে এবং সম্ভব হলে প্রতিটি জেলায় পরীক্ষার সুবিধা পৌঁছে দেওয়া দরকার। করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য আরও বেড, ভেন্টিলেটর ও অতিরিক্ত কর্মীর জন্য বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে অংশীদার করা যেতে পারে। সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ, স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা দেওয়া। তারাই রোগীদের সবচেয়ে কাছে থকেন এবং সর্বোচ্চ সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকেন। ভাইরাস যাতে আরও বেশি ছড়িয়ে না পরে এর জন্য জরুরি প্রোটোকল কঠোরভাবে প্রয়োগ করা উচিত। করণীয়র তালিকা দীর্ঘ। কোনো কাজই কোনটির চেয়ে কম জরুরি নয়। দেরি করার আর মোটেই সময় নেই।

Comments

The Daily Star  | English

An economic corridor that quietly fuels growth

At the turn of the millennium, travelling by road between Sylhet and Dhaka felt akin to a trek across rugged terrain. One would have to awkwardly traverse bumps along narrow and winding paths for upwards of 10 hours to make the trip either way.

7h ago