শূন্য সড়ক অন্ধকার ভবিষ্যৎ
![](https://bangla.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/ctg-rickshaw-puller.jpg?itok=fV40cLl1×tamp=1585221344)
করোনা আতঙ্কে শহর ছেড়েছেন সবাই। যারা রয়ে গেছেন, তারাও বের হচ্ছেন না সতর্কতা মেনে। এ আতঙ্কের মাঝেও দুই সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে ঘর থেকে রিকশা নিয়ে বের হন জাহাঙ্গীর আলম।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউড়ি মোড়ে রিকশা নিয়ে অপেক্ষায় থাকলেও তিন ঘণ্টায় কোনো যাত্রী পাননি জাহাঙ্গীর।
নগরীর কয়েকটি সড়ক ঘুরে জাহাঙ্গীরের মতো অনেক রিকশাচালককে শূন্য সড়কে অসহায়ত্ব নিয়ে সময় কাটাতে দেখা গেছে।
‘যখন স্কুল-কলেজ বন্ধ হলো, তখন থেকেই ভাড়া কমা শুরু। এরপর থেকে প্রতিদিনই আয় কমছে। আজ সবচেয়ে বেশি অসহায় লাগছে। তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করেও কোনো যাত্রী পাইনি’, দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন রিকশাচালক জাহাঙ্গীর।
জাহাঙ্গীরের পাশে থাকা আরেক রিকশাচালক মো. সরওয়ার বলেন, ‘প্রতিদিন মালিককে এক শ টাকা দিতে হয়। বাসায় ফেরার সময় চাল-ডাল নিয়েও ফিরতে হয়। কিন্তু, গত ৩-৪ দিন ধরে বাজার করা হচ্ছে না। কারণ, সারাদিনে আড়াই শ টাকাও আয় হয় নাই।’
কাজীর দেউড়ির মোড় ঘুরে নগরীর জামালখান মোড়ে আসলে সেখানেও কয়েকজন চালককে খালি রিকশা নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। সেখানকার রিকশাচালক সরোয়ার বলেন, ‘সপ্তাহ দুয়েক আগেও প্রতিদিন ৫০০ টাকার মতো আয় হতো। কিন্তু, আজকে মনে হচ্ছে মালিককে দেওয়ার টাকাও উঠবে না। ফাঁকা রাস্তাঘাট, কোনো লোকজন নাই।’
নগরীর একসময়ের ব্যস্ততম মোড়গুলোতে এখন অলস সময় কাটানো রিকশাচালকরা তাদের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কায়। পরিবার-পরিজন নিয়ে কীভাবে সামনে দিন কাটবে, তা ভেবে কূল-কিনারা পাচ্ছেন না তারা।
নগরীর জিইসির মোড়ে রিকশাচালক মো. দেলোয়ারকে দেখা গেলো ভাড়া নিয়ে এক যাত্রীর সঙ্গে দর কষাকষি করতে। তিনি দ্য ডেইলি স্টারক বলেন, ‘জিইসি থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত ভাড়া ৭০ টাকা। এখন যাত্রী কম থাকায় অনেকেই ৪০ টাকায় যেতে চায়। কিছু করার নাই। যাত্রী না নিলে উপোস থাকতে হবে।’
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘হতদরিদ্র মানুষদের সহযোগিতায় সরকারের পরিকল্পনা আছে। করোনার সময়ে তাদের কষ্ট লাঘব করার জন্য আমরা কাজ শুরু করবো।’
Comments