চা-শ্রমিকদের জন্য একাই রাস্তায় দাঁড়ালেন তিনি
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে চা-শ্রমিকদের প্রতি সরকার ও চা-কোম্পানির অবহেলার অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদে আজ শুক্রবার সকাল থেকে শমশেরনগর বাজার চৌমহনায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শমশেরনগর চা-বাগানের চা-শ্রমিক সন্তান মোহন রবিদাস।
তার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন বাবুল মাদ্রাজি, সুজন লোহার, মনিসংকর রায়, উত্তম রবিদাস, রাজকুমার রবিদাসহ ঐ চা-বাগানের সব চা-শ্রমিক ও ছাত্র-যুবক। তবে জনসমাগম এড়াতে মোহন রবিদাস ব্যতিক্রমী পন্থায় প্রতিবাদ জানান।
মোহন রবিদাস দাবি করেন, করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে দেশের চা-শ্রমিকরা। তিনি বলেন, ‘একজন সাদা তামাকপাতা হাতের তালুতে রেখে মললে তার কাছ থেকে নিয়ে আরও পাঁচ জনে খায়, মদের গ্লাসগুলো ধোঁয়া হয় না, সাধারণত কাপড় দিয়ে মুছে দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেখানে চা-পাতা তোলা হয় সেখানে স্যানিটাইজার, সাবান তো দূরের কথা খাবার পানিই থাকে না। এক ঝর্ণার পানি ১০ জনে খায়। লাইনগুলাতে ঘন বসতি বেশি। ঘরগুলো এক্কেবারে কাছাকাছি। একই নদীতে অনেক মানুষ গোছল করে। চা বাগানের গ্রুপ হাসপাতালগুলোর (ক্যামেলিয়া, কালিঘাট) দিকে তাকালে গায়ে জ্বর আসে। ডাক্তার-নার্সদের গায়ে পিপিই নেই। প্রবাসীরা স্বাচ্ছন্দ্যে আনাগোনা করছে। চিকিৎসা নিচ্ছে।’
এসব বিষয়ে সরকার বা চা-কোম্পানি কেউ-ই কোন বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ করেন মোহন রবিদাস।
তিনি বলেন, ‘সরকার সব সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ করেছে। কিন্তু, চা-বাগানগুলো বন্ধে কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি। উপরন্তু শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় পরিপত্র জারি করে জানিয়ে দিয়েছে, চা-বাগানগুলো সেই সাধারণ ১০ দিন ছুটির আওতায় পড়বে না।’
‘এটা একটা অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত ও চা-শ্রমিকদের প্রতি সরকারের অবহেলা’ বলে মন্তব্য করেন মোহন।
আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব চা-বাগানে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা অর্থাৎ পর্যাপ্ত মাস্ক, সাবান-স্যানিটাইজার, সুরক্ষা সরঞ্জাম ইত্যাদি স-মজুরি ও স-রেশনে বন্ধ ঘোষণা না করলে তিনি আরও কঠোর কর্মসূচী হাতে নিবেন বলেও জানান।
Comments