করোনা আতঙ্কে মৃত্যুর আগে-পরে কেউ এগিয়ে এলেন না

বগুড়ার শিবগঞ্জে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন একজন। প্রতিবেশি, প্রশাসন কারো কাছ থেকেই সহায়তা পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেছে মৃতের পরিবার।

বগুড়ার শিবগঞ্জে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন একজন। প্রতিবেশি, প্রশাসন কারো কাছ থেকেই সহায়তা পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেছে মৃতের পরিবার। 

তবে জেলা সিভিল সার্জন অফিস জানিয়েছে, অসুস্থ ওই ব্যক্তি করোনা রোগী ছিলেন না। 

রাতে মারা গেলেও দুপুর পর্যন্ত কেউ মরদেহের কাছে যায়নি বলে জানিয়েছেন মৃতের স্ত্রী। বাড়িতে আট বছরের সন্তান ও বৃদ্ধ মা ছাড়া আর কেউ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী মরে পরে আছে, অথচ কেউ সাহায্য করতে আসেনি। সকালে একজন স্বাস্থ্যকর্মী এসে দেখে গেছেন, কিন্তু এরপরে আর কোনো খবর নাই। শুনেছি পুলিশ নাকি বাইরে এসে দাঁড়িয়ে আছে।’

তিনি জানান “আমার স্বামী থাকতেন গাজীপুরে, সেখানে ব্যবসা করতেন। গত মঙ্গলবার বাসায় আসেন। বুধবার থেকে তার সর্দি, কাশি ও জ্বর শুরু হয়। গত রাত থেকে তার জ্বর বাড়তে থাকে, শ্বাসকষ্টও শুরু হয়। এরপরে আমি একের পরে এক বিভিন্ন জায়গায় সাহায্যের জন্য ফোন করি। কিন্তু সর্দি, কাশি আর জ্বর আছে শুনে কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি।’

তিনি বলেন, শুক্রবার রাতেই সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) হটলাইনে ফোন দিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের হটলাইনে ফোন করেও কারও সারা পাননি তিনি।

শিবগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর কবির দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘পরিবারের ভাষ্যমতে রাতেই তিনি শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন। বগুড়া থেকে মেডিকেল টিম ঘটনাস্থলে নমুনা সংগ্রহ করতে গেছে। যেহেতু আমরা তাকে সন্দেহভাজন করোনা রোগী মনে করছি, তাই তার চারপাশের ১০টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। তার স্ত্রী ও সন্তানদের ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে।’

শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা সকালে খবর পেয়েছি। খবর পেয়েই সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিরাপত্তা পোশাক না থাকায় পুলিশ মরদেহ ধরতে পারছে না।’

জানতে চাইলে বগুড়া জেলা ডেপুটি সিভিল সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন বলেন, ‘শিবগঞ্জে যিনি মারা গেছেন তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন না। তবুও তার নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর এ পাঠানো হবে।

তিনি বলেন, ‘আজ শনিবার সকালে আইইডিসিআরে কথা হয়েছে। বলা হয়েছে, করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির সর্দি থাকে না। তিনি অন্য কোনো কারণে হয়তো মারা গেছেন। মৃতের লালা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠাতে বলা হয়েছে।’

 

Comments