কে নেবে এই মৃত্যুর দায়

করোনা আতঙ্কে গ্রামবাসী বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি, হাসপাতালেও স্থান হয়নি

রংপুরে আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী নিহত
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে আল আমিন (২২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আল আমিনের বাড়ি নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায়। তার বাবার নাম মখলেসুর রহমান।

মখলেসুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘দুই বছর আগে আল আমিন ঢাকায় গিয়ে একটি পোশাক কারখানার বিক্রয় কেন্দ্রে চাকরি নেয়। নিয়মিত যোগাযোগ থাকলেও বাড়িতে আর্থিক সহায়তা করতে পারতো না। সব সময় বলতো বাড়ির কথা মনে পড়ে। গত এক বছর যাবত প্রায়ই ফোনে বলতো ও অসুস্থ। ঢাকায় ডাক্তার বলেছে সাধারণ জ্বর ও মাথা ব্যথা। বৃহস্পতিবার একজন অপরিচিত লোক ফোন করে জানায়, আল আমিন খুব অসুস্থ আমি যেন ঢাকায় যাই। শুক্রবার ছেলেকে নিয়ে আমি নওগাঁ আসি।’

‘কিন্তু করোনাভাইরাসের আতঙ্কে গ্রামবাসী ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি। তারা বলে, তোমার ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে যাও। চিকিৎসার খরচ আমরা দেবো। তখন আল আমিনকে নিয়ে আমি রাণীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। ছেলের জ্বর আর মাথা ব্যথা শুনেই ডাক্তার জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। সদর হাসপাতালে ডাক্তার ভালো মতো দেখলেনই না। বললেন, রাজশাহী নিতে হবে’— বলেন মখলেসুর রহমান।

রামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, শনিবার সকালে আল আমিনকে মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস বলেন, ‘গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে আল আমিনের মৃত্যু হয়। তার মেনিঙ্গোএকেসেফ্যালাইটিস, এনকেফ্যালাইটিস ও মেনিনজাইটিস রোগ ছিল। দীর্ঘ সময় তার চিকিৎসা হয়নি।’

মখলেসুর রহমান জানান, আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে বাড়ির আঙ্গিনায় আল আমিনের দাফন হয়েছে।

‘আল আমিন কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত কি না এটা পরীক্ষা করার প্রয়োজন মনে করিনি আমরা। কারণ, তার শরীরে কোনো উপসর্গ ছিল না’— বলেন সাইফুল ফেরদৌস।

নওগাঁ জেলা সিভিল সার্জন এএম আখতারুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘গত আট দিন যাবত রোগীর জ্বর ছিল এবং তিনি ঢাকা থেকে ফিরে হাসপাতালে এসেছিলেন। যে কারণে রোগী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন বলে আমরা সন্দেহ করেছিলাম। সাধারণত এনকেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত রোগীদের আমরা রামেক হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকি, কারণ তাদের  নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) সুবিধা প্রয়োজন হয়।’

Comments

The Daily Star  | English
Nat’l election likely between January 6, 9

EC suspends registration of AL

The decision was taken at a meeting held at the EC secretariat

29m ago