‘আমাদের দেশ এখন ভালো আছে, নিরাপদে আছে’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাসে বাংলাদেশের অবস্থা জানাতে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে আজ সোমবার যোগ দিয়েছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

সংবাদ সম্মেলনে ‘কোভিড-১৯’ মোকাবিলায় যারা সরকারকে সহযোগিতা করছে তাদের ধন্যবাদ দেন তিনি। বলেন, ‘করোনা নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদের সবাইকে আমার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তিনি এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখছেন। আমি আরও ধন্যবাদ জানাচ্ছি যারা সহযোগিতা করছেন এবং আমাদের আর্মি, পুলিশ, ডিসি এবং সিটি করপোরেশনের যারা কাজ করছেন তাদেরকেও। দেশে থেকে বিভিন্ন কোম্পানি এবং বিদেশ থেকেও সহযোগিতা দিয়েছেন। যেমন, আমাদেরকে মাস্ক দিয়েছেন, কিট দিয়েছেন।’

সার্বিক প্রস্তুতির ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমি সবাইকে জানাতে চাই, তাদের আস্থা বাড়ানোর জন্য যে ইতিমধ্যে আমরা বড় বড় হাসপাতালকে সেটার (করোনা চিকিৎসা) জন্য (প্রস্তুত করছি) এবং কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালটি তো আছেই। এই সমস্ত হাসপাতালে আমরা আইসিইউ এর ব্যবস্থা করেছি। প্রায় ২০০ নতুন আইসিইউ ইউনিট আমরা তৈরি করেছি। এগুলোতে ভেন্টিলেটর ও ডায়ালাইসিসের সুবিধা রয়েছে।’

করোনা পরীক্ষার ল্যাবের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ইতোমধ্যে প্রায় ১১টি ল্যাব কাজ করছে। সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমরা আরও ১৭টি নতুন ল্যাব স্থাপন করবো। তাড়াতাড়ি পরীক্ষা করে যাতে চিকিৎসা দিতে পারে। টেকনিশিয়ান ও অন্যান্য যারা স্যাম্পল সংগ্রহ করেন, তাদেরকে আমরা বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছি। পরীক্ষার পরিধি বৃদ্ধি করেছি।’

‘কিন্তু আমি লক্ষ্য করেছি, কিছু কিছু জায়গায়, যেমন কক্সবাজারে এবং চট্টগ্রামে পরীক্ষা করার হার খুব কম। আমাদের লোকজনরা এগিয়ে আসছে না। আরও পিপিই দেওয়ার ব্যবস্থা চলছে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। যারা পিপিই ব্যবহার করছেন, আমি মনে করি এটা যথাযথভাবে যেন ব্যবহার হয় এবং পিপিইগুলো যাতে নষ্ট না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।’

ডাক্তার ও নার্সদের কাজের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘আমাদের ডাক্তার-নার্সরা খুব ভালো কাজ করছেন। প্রাইভেট ডাক্তাররাও ভালো কাজ করছেন। কিন্তু, আমাদের কাছে কিছু তথ্য আছে যে প্রাইভেট চেম্বারগুলো বন্ধ আছে। ডাক্তার একটু কম আসেন। আমি সবাইকে আহ্বান করব, যেন যার যার কর্মস্থলে উপস্থিত থেকে তাদের কাজটি করেন।’

‘কোভিড-১৯’ মোকাবিলায় সরকারের কাজ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রশংসা পাচ্ছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘আপনারা জানেন, গত দুই দিন আগেই আমরা ডব্লিউএইচওর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে আলাপ করেছি এবং তারা আমাদের কাজের প্রশংসা করেছে। জাতিসংঘের মহাসচিবও প্রশংসা করেছেন। ওনারা বলেছেন, এটার সবচেয়ে বড় উপায় হলো, আইসোলেশনে থাকা, কোয়ারেন্টিনে থাকা এবং নিরাপদ দূরত্ব মেনে চলা। যেখানে-সেখানে থুথু না ফেলা। বারবার হাত ধোয়া হলো এর সব থেকে বড় প্রতিকার।’

‘আমরা চাইব চিকিৎসার বাইরে যেন কেউই না থাকেন। কেউই যাতে চিকিৎসার বাইরে না থাকেন সেদিকে আমাদের সবারই খেয়াল রাখতে হবে এবং যত্নবান হতে হবে।’

গণমাধ্যমের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আমরা মিডিয়াকেও বলতে চাই, আপনারা সুন্দর কাজ করছেন, তথ্য দিচ্ছেন। কিন্তু, এমন কোনো তথ্য দিয়েন না যার মাধ্যমে দেশবাসী আতঙ্কিত হয়। এই তথ্যও দেওয়া ঠিক না যে ‘অভাব রয়েছে’। আমাদের ইনশাআল্লাহ চিকিৎসার কোনো অভাব নাই, কিটসের কোনো অভাব নাই, আমরা পরীক্ষার যথেষ্ট ব্যবস্থা করেছি এবং আমাদের পিপিইরও আর অভাব নাই। কাজেই এই তথ্যগুলো দিলে আমি মনে করি মানুষ আশ্বস্ত হবে এবং আপনারা সবাই সেই কাজ করে যাচ্ছেন।’

‘আমাদের দেশ এখন ভালো আছে, নিরাপদে আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষণিক আমাদের গাইড করছেন, আমাদের সঙ্গে আলাপ হচ্ছে। আমরা আশা করি এই যে বিরাট সমস্যাটি, এই করোনা সমস্যা থেকে আমরা বের হয়ে আসব, বিশ্ববাসীও বের হয়ে আসবে।’

করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের পূর্ব প্রস্তুতি ছিল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ যেহেতু অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছিল, সেজন্য আমরা মনে করি যে ইনশাল্লাহ তাড়াতাড়ি এটাকে ভালোভাবে ব্যবস্থা করতে পেরেছি। তুলনামূলকভাবে আমাদের এখন পর্যন্ত যে কাজ হয়েছে তা ভালো হয়েছে। ইনশাল্লাহ আগামীতেও ভালো হবে। ঘাবড়ানোর কোনো কারণ নেই।’

‘আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি সার্বক্ষণিক। আমি নিজেও তদারকি করছি, আমাদের ডাক্তার-নার্স সবাই মিলেই এবং সব কর্মকর্তা মিলেই কাজ করে যাচ্ছেন। কারো কোনো অসুবিধা হলে আমাদের কল সেন্টারে যোগাযোগ করবেন। সেটার পরিধি ও সংখ্যা অনেক বাড়ানো হয়েছে। কাজেই আশা করি, আমরা অল্প দিনেই এই সমস্যাগুলো দূর করতে পারবো ‘ যোগ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

Comments

The Daily Star  | English

Uncovering the silent deaths of migrant women

In the shadows of booming remittance flows and the quiet resilience of Bangladesh’s labour diaspora, a disturbing reality persists: numerous Bangladeshi female migrant workers, particularly those employed as domestic help in Gulf countries, are returning home in coffins.

17h ago