নিউইয়র্কে আরও ৫ ও নিউজার্সিতে ১ বাংলাদেশির মৃত্যু, লকডাউনে কড়াকড়ির ঘোষণা
করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিউইয়র্কে আরও পাঁচ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও, এক বাংলাদেশি মারা গেছেন নিউজার্সিতে।
নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সেখানে পাঁচজন মারা গেছেন। নিউজার্সিতে মারা গেছেন একজন।
মৃতদের মধ্যে আছেন বুয়েট থেকে পাশ করা একজন প্রকৌশলী, যার বয়স ৪৯ বছর। আরও আছেন রেস্টুরেন্টে কাজ করতেন এক নারী।
এ নিয়ে সেখানে মোট ৩৭ বাংলাদেশির মৃত্যুর সংবাদ জানা গেল।
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত আজকাল পত্রিকার সম্পাদক ও জ্যাকশন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি জাকারিয়া মাসুদ দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ইউএস ওপেন হিসেবে খ্যাত নিউইয়র্কের ফ্ল্যাশিং মিডোর বিলি জিন কিং ন্যাশনাল টেনিস সেন্টারে শুরু হয়েছে অস্থায়ী ৩৫০ শয্যার হাসপাতাল তৈরির কাজ।’
‘ঘোষণা দেওয়া হলেও সেই অর্থে লকডাউন কার্যকর করা যায়নি’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আজ থেকে কঠোরভাবে লকডাউনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। দুই জনকে এক সঙ্গে দেখা গেলে ৫০০ ডলার জরিমানা করার কথা বলা হয়েছে।’
লকডাইন কতটা কার্যকর করা যাবে তাই নিয়ে সন্দেহ আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি জানান, জন এফ কেনেডি বিমানবন্দর আমেরিকায় ঢোকার অন্যতম প্রবেশপথ। পৃথিবীর প্রায় সব দেশের মানুষ নিউইয়র্কের এই বিমানবন্দর দিয়ে আসেন। নিউইয়র্কে মানুষ অনেক বেশি।
‘নিউইয়র্কে কয়েক লাখ বাংলাদেশির মধ্যে কমপক্ষে ৫০ হাজার আছেন যারা দৈনিক পারিশ্রমিকে কাজ করেন। অনেকে ট্যাক্সি চালান। এসব মানুষের বিপদ সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশিদের জমজমাট জ্যাকসন হাইটস এলাকার প্রায় সবকিছু বন্ধ। ট্যাক্সিচালক ও যারা ট্যাক্স দেন, তারা কিছু প্রণোদনা পাবেন,’ যোগ করেন জাকারিয়া।
তিনি আরও বলেন, ‘নিউইয়র্ক পুলিশের ৫ শতাধিক সদস্য করোনায় আক্রান্ত বলে জানা গেছে। অনেক পুলিশ সদস্য সেলফ আইসোলেশনের কথা বলে ছুটিতে আছেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না হলেও পুলিশ স্বল্পতায় প্রশাসন উদ্বিগ্ন। যদিও প্রয়োজনে সেন্ট্রাল পুলিশ দিয়ে সহায়তার কথা বলা হয়েছে। নিউইয়র্ক পুলিশে অনেক বাংলাদেশি কাজ করেন। তাদেরও বেশ কয়েকজন আক্রান্ত হয়েছেন বলে নিশ্চিত হয়েছি।’
‘নিউইয়র্কের প্রায় প্রতিটি হাসপাতালে একাধিক বাংলাদেশি ডাক্তার আছেন। তারা সেবা দিচ্ছেন, আক্রান্তও হচ্ছেন।’
নিউইয়র্ক পুলিশে কর্মরত একজন বাংলাদেশি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘পুলিশের অনেক সদস্য ইতোমধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আমরা এখনও দায়িত্ব পালন করছি। সবচেয়ে বড় সমস্যা নিউইয়র্কের মানুষ সচেতন নন। অন্য সময়ের সঙ্গে তুলনা করলে গতকালও ৩০ শতাংশের মতো মানুষ বাইরে ছিলেন।’
নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো বলেছেন, ‘পরিস্থিতি কবে নাগাদ স্বাভাবিক হবে, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না।’
আরও পড়ুন:
করোনায় গত ২৪ ঘণ্টায় নিউইয়র্কে আরও ৭, মিশিগানে ১ বাংলাদেশির মৃত্যু
Comments