ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে আরও বড় প্যাকেজ প্রয়োজন

করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) হিসাবে দক্ষিণ এশিয়া ও এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম ছোট প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।

করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) হিসাবে দক্ষিণ এশিয়া ও এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম ছোট প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।

গত সপ্তাহে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রপ্তানিমুখী শিল্পের শ্রমিকদের মজুরি সহায়তা হিসেবে পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেন, যা ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের জিডিপির শূন্য দশমিক দুই শতাংশের সমান।

বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তুলনা করলে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের চেয়ে; পিছিয়ে আছে ভারত, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার চেয়ে; একই অবস্থানে আছে কম্বোডিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে।

৮ মার্চ বাংলাদেশ প্রথম করোনা সংক্রমণের খবর প্রকাশের পর এই প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়।

স্বাস্থ্যসেবা খাতে প্রত্যাশিত ব্যয়ের চেয়ে বেশি খরচ হবে বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশের অর্থ বিভাগ চলতি অর্থবছরের জন্য একটি সংশোধিত বাজেট তৈরি করছে বলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) তাদের ওয়েবসাইটে তথ্য প্রকাশ করেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ইতিমধ্যে অতিরিক্ত ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

সরকার অর্থনীতির উপর করোনার প্রভাব বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। যার মধ্যে আছে রপ্তানিমুখি শিল্পগুলোকে সহায়তা দেওয়া। নিম্ন-আয়ের মানুষদের পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে ওপেন মার্কেট সেল (ওএমএস) প্রোগ্রামে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জাম (পিপিই), টেস্টিং কিটসহ চিকিৎসা সামগ্রী আমদানির উপর শুল্ক ও কর সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।

বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশে সম্প্রতি যে ঘোষণা এসেছে তা একদম সঠিক, যদিও পর্যাপ্ত পরিমাণ থেকে এটা অনেক কম।’

আর্থিক সংস্থার পরিমাণের দিক থেকে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রপ্তানিমুখি খাতের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া, যা এই শিল্পের শ্রমিকদের মজুরি হিসেবে দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) দাবি করছে, প্রতি মাসে তারা শ্রমিকদের মজুরি দেয় চার হাজার কোটি টাকা। সম্ভবত একই পরিমাণ মজুরি দেয় বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)।

এছাড়াও রয়েছে চামড়া, জুতা, আসবাবপত্র, সিরামিক এবং আরও অনেক শিল্প। তাদের বেশিরভাগই এক মাসের বেশি বেসিক বেতন দাবি করছেন। দ্য ইকিনোমিস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রপ্তানি খাতে মজুরি বিলের মোট পরিমাণ প্যাকেজের থেকে বেশি হওয়ায় রেশনিং অনিবার্য।

এই অর্থের সংস্থান করতে সরকার আইএমএফের কাছ থেকে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার চাইছে।

দেশের রপ্তানি খাতের ৮০ শতাংশের বেশি আসে গার্মেন্টস সেক্টর থেকে। বিজিএমইএর সংকলিত তথ্য অনুযায়ী, উন্নত দেশগুলোর বড় খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে পাওয়া দুই দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলারের অর্ডার বাতিল হয়েছে। ফলে এই শিল্পের এক হাজার ৯৯টি কারখানা এবং ২১ লাখ শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গতকাল থেকেই প্রায় সব পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এই খাতে কাজ করেন প্রায় ৪১ লাখ শ্রমিক।

সম্প্রতি দ্য ডেইলি স্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে অর্থমন্ত্রী এএইচএম মোস্তফা কামাল বলেছিলেন, ভাইরাসজনিত মহামারির প্রভাব কাটাতে সব শিল্পকে সমর্থন দেওয়ার জন্য স্বল্পমেয়াদী, মধ্য-মেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী আরও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ‘এই সঙ্কট কেটে গেলে, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে সঙ্কট-পূর্ব অবস্থায় ফিরে আসতে পারে সেজন্য আমাদের যা যা করা দরকার হয় করব। কোনো খাত বাদ যাবে না।’

সংক্ষেপিত, পুরো প্রতিবেদনটি পড়তে এই Bigger relief package needed to make up for lost economic activities লিংকে ক্লিক করুন

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

14h ago