তাদের নিরাপত্তা কোথায়?
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দেশে দীর্ঘ ছুটির ঘোষণায় ঘরমুখী কয়েক হাজার মানুষ ভিড় করে ঢাকার বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে। ট্রেনের ছাদে যেন তারা না উঠে তা নিশ্চিত করতে দায়িত্ব দেওয়া হয় রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) সিপাহী সাদ্দাম হোসেনকে।
এক হাতে লাঠি ধরে বাঁশি বাজিয়ে তিনি যাত্রীদের সতর্ক করছিলেন। বেশ কয়েকবার তাকে কয়েকজন যাত্রীকে ধরতে হয়েছিল। সে সময় তিনি গ্লাভস পরেছিলেন কিনা জানতে চাইলে সাদ্দাম হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘না, আমার গ্লাভস ছিল না। খালি হাতেই কাজ করেছি।’
সারাদিনের কাজ শেষে সাদ্দাম ও তার সহকর্মীরা ফিরে যান তাদের গোপীবাগ ব্যারাকে। যেখানে আনসারদের সঙ্গে একই রুম, টয়লেট ও গোসলখানা ব্যবহার করে প্রায় ২৫০ জন আরএনবি সদস্য। এতে তাদের সবাই রয়েছে কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঝুঁকিতে।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পক্ষ থেকে বারবার সামাজিক দূরত্ব ও ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখার অনুরোধ করা হচ্ছে। সেখানে এভাবে এত মানুষের ভ্রমণ ঝুঁকি বাড়ায় সংক্রমণের। ফলে, নিজ নিজ বাড়িতে পৌঁছানোর পর ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে নির্দেশনা দিয়েছিল আইইডিসিআর।
ঘরমুখী মানুষের ভিড় সামাল দেওয়া আরএনবি সদস্যরাও এই ঝুঁকির বাইরে না। কিন্তু আইইডিসিআরের এই নির্দেশনার ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ভ্রুক্ষেপ করেনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরএনবির এক সদস্য বলেন, ‘কোনো মাস্ক, গ্লাভস বা সাবান নেই। আমাদের কিছুই দেওয়া হয়নি।’ প্রায় ৩০ জন আরএনবি সদস্যের সঙ্গে কথা বলে একই তথ্য পাওয়া যায়।
গত রোববার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ভেতরে ও বাইরে কোনো ধরনের নিরাপত্তামূলক সরঞ্জাম ছাড়াই দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায় আরএনবি সদস্যদের। যদিও এখন স্টেশনগুলোতে যাত্রী নেই, কিন্তু তাদের আসতে হচ্ছে গৃহহীন এবং স্থানীয়দের সংস্পর্শে।
একজন আরএনবি সদস্য বলেন, ‘আমাদের কারো মধ্যে যদি করোনাভাইরাস কোনো ভাবে সংক্রমিত হয়, তাহলে আমরা সবাই আক্রান্ত হবো।’ নিজের মুখে থাকা মাস্ক দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি নিজেই এটা কিনেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘হাজার হাজার কোটি টাকার সরকারি সম্পদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ আমাদের উপর নির্ভর করে। কিন্তু আমাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে তারা কিছুই করছে না।’
আরএনবি ব্যারাকের অবস্থা
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্যারাকের দ্বিতল হলুদ ভবনটি ভেঙ্গে পড়তে পারে বলে ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বিভিন্নস্থানে ধ্বসে গেছে দেয়ালের প্লাস্টার, বের হয়ে আছে ভেতরে থাকা রড।
নিচতলায় একটি ঘরে দুই সারিতে ১৪টি বেড রয়েছে, যেখানে ১২ জন থাকেন। রাতে দায়িত্ব পালন করে আসা চার সদস্য ঘুমাচ্ছিলেন আর কয়েকজন প্রস্তুত হচ্ছিলেন সন্ধ্যায় দায়িত্ব পালনের জন্য। তাদের ব্যবহারের জন্য তিনটি পানির ট্যাঙ্ক আছে। সেখানে কেউ গোসল করছিলেন, কেউ কাপড় ধুচ্ছিলেন, আবার কেউ খাওয়ার জন্য পানি সংগ্রহ করছিলেন।
(সংক্ষেপিত, পুরো প্রতিবেদনটি পড়তে এই What about their security? লিংকে ক্লিক করুন)
Comments