দ্বিতীয়বার করোনায় আক্রান্তদের অধিকাংশই তরুণ
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কাটিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা অনেকেরই দ্বিতীয়বারের মতো সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক বলছেন, সুস্থ হয়ে ওঠাদের ১৪ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে আবারও করোনা সংক্রমণ দেখা গেছে।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানায়, গত ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে চীনের গুয়াংডং প্রদেশে সুস্থ হয়ে ওঠাদের উপর একটি জরিপ চালানো হয়। জরিপে ২৬২ জনকে দুই সপ্তাহ ধরে পর্যবেক্ষণের পর দেখা যায়, তাদের মধ্যে ৩৮ জন পুনরায় কোভিড-১৯ দ্বারা সংক্রমিত হয়েছেন।
অন্যদিকে, গত মাসে চীনের উহান প্রদেশে একইরকম আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে সুস্থ হয়ে ওঠাদের তিন শতাংশ সেখানে আবারও আক্রান্ত হয়েছেন।
এই সপ্তাহে শেনজেন থার্ড পিপলস হাসপাতাল, বেইজিং সিঙ্ঘুয়া চ্যাংগং হাসপাতাল, সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ও এমআইটির একদল গবেষকের সর্বশেষ একটি গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে।
২৩ জানুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যারা করোনা আক্রান্ত হয়ে শেনজেন থার্ড পিপলস হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তাদের উপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে মূলত তরুণরাই দ্বিতীয়বার করোনা সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। গবেষকরা জানান, এসব তরুণদের মধ্যে করোনার উপসর্গ সেভাবে দেখা যায়নি, তারা হালকা অসুস্থ ছিলেন। হাসপাতাল ছেড়ে যাওয়া ৩৮ জনের মধ্যে আবারও করোনার সংক্রমণ দেখা যায়। তাদের মধ্যে কেবল এক জনের বয়স ৬০, সাত জনের বয়স ১৪ বছরের কম।
আগের বারের মতো এই ৩৮ জনের দ্বিতীয়বারও হালকা সর্দি জ্বর ও বুকে ব্যথা ছিল। তাদের কারোরই জ্বর ছিল না।
তারা অন্য কারো মাধ্যমে দ্বিতীয়বারের মতো সংক্রমিত হয়েছেন কিনা তা জানার জন্য ওই ৩৮ জনের সংস্পর্শে আসা ২১ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। ২১ জনের কারোরই করোনা শনাক্ত হয়নি। তবে, পুনরায় আক্রান্তরা ভাইরাসটির বাহক হতে পারেন কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন গবেষকরা।
এমআইটির গবেষক ফেং জাং জানান, তাদের ২৪ জনের মধ্যে ১৮ জনের আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় করোনা ধরা না পড়লেও পরে আরও ‘সংবেদনশীল’ পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে।
হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লিও প্যুন লিট ম্যান বলেন, ‘আরটি-পিসিআর পরীক্ষা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নির্ভুল হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিটগুলো সঠিক ফলাফল নাও দেখাতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন তারা পরবর্তীতে আবারও আক্রান্ত হলে তাদের আরটি-পিসিআর টেস্টে করোনা “নেভেটিভ” আসতে পারে কারণ তখন তাদের দেহে ভাইরাসটি দুর্বল অবস্থায় থাকে। এ জন্য একাধিক পরীক্ষার প্রয়োজন, আরও সংবেদনশীল পরীক্ষার প্রয়োজন।’
তিনি জানান, কয়েকটি গবেষণা বলছে, পুনরায় করোনায় আক্রান্তরা ভাইরাসের বাহক না। তবে এই ব্যাপারে এখনই নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। আরও উন্নত গবেষণার প্রয়োজন।
গোপনীয়তা রক্ষার জন্য সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে যাওয়া রোগীদের মধ্যে কতজনের দেহে আবারও সংক্রমণ দেখা গেছে সে সম্পর্কে চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি।
Comments