রোগীর তথ্য গোপনের প্রবণতা ঝুঁকিতে ফেলছে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের

রোগীর তথ্য গোপনের প্রবণতা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ঝুঁকিতে ফেলছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (চট্টগ্রাম বিভাগ) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ। ছবি: ফেসবুক

রোগীর তথ্য গোপনের প্রবণতা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ঝুঁকিতে ফেলছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (চট্টগ্রাম বিভাগ) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে আজ শনিবার জানান, ‘অনেকের মধ্যেই প্রবাসীদের সংস্পর্শে থাকার তথ্য গোপনের প্রবণতা আছে। যা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলছে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের।’

গতকাল সন্ধ্যায় ৬৭ বছর বয়সী এক রোগী কোভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। তার মেয়ে সম্প্রতি সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন। কিন্তু, প্রথমদিকে এ তথ্য গোপন করেছিলেন তিনি। ফলে, তার চিকিত্সার সময় চিকিত্সক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা কোনো ধরনের নিরাপত্তা গ্রহণ করেননি।

ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘ওই রোগী কোভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্ত হওয়ার পর গতকাল সন্ধ্যায় রোগীর সংস্পর্শে আসা একটি বেসরকারি হাসপাতালের তিনজন চিকিৎসক এবং ১৫ জন নার্স ও কর্মচারীকে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।’

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ডা. সেলিম মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, ‘রোগীর উচিত ডাক্তারদের জিজ্ঞাসা অনুযায়ী সঠিক তথ্য সরবরাহ করা। যদি কোনো চিকিত্সক বা কোনো স্বাস্থ্যকর্মী রোগীর তথ্য গোপনের কারণে সংক্রামিত হন, তাহলে এটা অনেকের মধ্যে ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে। কারণ চিকিত্সক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিদিন অনেক রোগীর সেবা দেন।’

ডা. সেলিম জানান, যদি কোনো রোগী প্রবাসীর সংস্পর্শে গিয়ে থাকে এবং জ্বর অনুভব করে, তাহলে তাকে সরকার নির্ধারিত হাসপাতালে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে তথ্য গোপন করে কোনো সাধারণ হাসপাতালে যাওয়া উচিৎ নয়।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘রোগীর তথ্য গোপনের প্রবণতা চিকিৎসকদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। সব রোগীর কাছে অনুরোধ করব তারা যেন ডাক্তারদের কাছে কোনো তথ্য গোপন না করেন।’

এদিকে, কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজির হোসেন দাবি করেন, ‘রোগীরা এখন ব্যক্তিগত চেম্বার ও ক্লিনিকে ডাক্তার পান না। আর হাসপাতালে গিয়ে প্রবাসীর সংস্পর্শে থাকার কথা জানালে সেখানেও তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয় না।’

‘জ্বর এবং কাশি নিয়ে অনেক রোগী বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। যা তাদের মধ্যে এক ধরনের ভীতি তৈরি করেছে। তাই রোগীরা চিকিত্সা থেকে বঞ্চিত হওয়ার ভয়ে তথ্য গোপন করেন,’ বলেনি তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘চিকিৎসকদের নিরাপত্তার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু, রোগীর চিকিৎসা পাওয়ার অধিকারও নিশ্চিত করতে হবে। চিকিৎসক ও রোগী উভয়েরই একে অপরের উপর আস্থা রাখতে হবে। কর্তৃপক্ষের উচিত চিকিৎসক এবং রোগী সবার জন্যই নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা।’

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি বলেন, কোভিড-১৯ এর সন্দেহজনক রোগীদের নির্ধারিত হাসপাতালের কোয়ারেন্টিন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হচ্ছে। তাই চিকিত্সা থেকে বঞ্চিত হওয়ার ভয়ে তাদের তথ্য গোপনের প্রয়োজন নেই।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

6h ago