দক্ষিণ এশিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়িয়েছে
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে গত এক সপ্তাহে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। এই মহামারিতে দক্ষিণ এশিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা আজ শনিবার ছিল ছয় হাজার ৩১৪।
জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ভারতে, অন্যদিকে সবচেয়ে কম আক্রান্ত হয়েছে ভুটানে।
রয়টার্স জানায়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পরও দ্রুতগতিতে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।
ভারতের মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপের বরাতে রয়টার্স জানায়, ‘মানুষ এখনো যথেষ্ট সচেতন নয়। জনগণ নির্দেশনা অমান্য করলে লকডাউনের ব্যাপারে আরও কঠোর হওয়া ছাড়া আমাদের উপায় থাকবে না।’
ভারতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ৮২, মারা গেছে ৮৬ জন। গত ২৫ মার্চ দেশটিতে ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে পাকিস্তান। রয়টার্স জানায়, শুক্রবার মসজিদের জমায়েত থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে লকডাউনের পাশাপাশি তিন ঘণ্টার জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে তিনটা পর্যন্ত রাস্তায় চলাচলে নিষেধাজ্ঞার পরও করাচির একটি মসজিদে লোক জমায়েত হতে শুরু করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে।
পাকিস্তানে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৭০৮ জন এবং মারা গেছেন ৪১ জন। আক্রান্তদের মধ্যে কয়েকজন মার্চের মাঝামাঝি সময়ে লাহোরের একটি তাবলীগ জামাতে অংশ নিয়েছিলেন। বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ থেকে কয়েক হাজার মানুষ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ফিলিস্তিন ও ইসলামাবাদের কয়েকজন আক্রান্তও ওই জামাতে অংশ নিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
আফগানিস্তানে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২৯৯, মারা গেছেন ৭ জন। দ্য গার্ডিয়ান জানায়, সম্প্রতি ইরান থেকে প্রায় এক লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি নাগরিক আফগানিস্তানে ফিরে যাওয়ার পর তাদের মাধ্যমে দেশটিতে সংক্রমণের সংখ্যা বাড়তে পারে। দেশটির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আফগানিস্তানে প্রায় ১৬ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন।
শ্রীলঙ্কায় এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১৬২, মারা গেছেন পাঁচ জন। করোনার বিস্তার ঠেকাতে গত ২০ মার্চ থেকে দেশটিতে লকডাউন চলছে।
আক্রান্তের সংখ্যায় শ্রীলংকার পরেই অবস্থান করছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ৭০ জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছে আট জন। সংক্রমণ ঠেকাতে বাংলাদেশে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত গণপরিবহন ও অফিস বন্ধ ঘোষণা করলেও পরবর্তীতে সাধারণ ছুটি ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
দক্ষিণ এশিয়ার আরেক দেশ মালদ্বীপে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৯। দেশটিতে পর্যটন সীমিত করা হয়েছে। বিদেশ ফেরতদের জন্য ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
নেপালে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯। গত ২৬ মার্চ থেকে দেশটিতে লকডাউন চলছে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভুটানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে কম। এখন পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্ত পাঁচ জন শনাক্ত হয়েছে। দেশটি পর্যটনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
Comments