করোনাভাইরাস

দেশে আরও একজনের মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত ১৮

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও এক জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা নয়। আক্রান্ত আরও ১৮ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৮৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া, এখন পর্যন্ত ৩৩ জন সুস্থ হয়েছেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ছবি: অনলাইন ব্রিফিং থেকে নেওয়া

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও এক জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা নয়। আক্রান্ত আরও ১৮ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৮৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া, এখন পর্যন্ত ৩৩ জন সুস্থ হয়েছেন।

আজ রোববার দুপুর ২টার দিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে অনলাইন ব্রিফিংয়ে যুক্ত হয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

তিনি বলেন, ‘সংক্রামিত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে গেছে, আজকে হয়েছে ১৮ জন। প্রধানমন্ত্রী যেসব নির্দেশনা দিয়েছেন, সেগুলো মেনে চলতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে— আপনারা ঘরে থাকবেন। অতি প্রয়োজনসীয় বিষয় ছাড়া ঘর থেকে বের হবেন না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখবেন। যখনই বাইরে যাবেন বা যেকোনো কাজের শেষে হাত ধুয়ে নেবেন। আমি আহ্বান করবো যে, আপনারা ঘরেই নামাজ আদায় করবেন। যখনই কোনো কাজে বাইরে যাবেন, মুখে মাস্ক লাগিয়ে যাবেন।’

‘যারা বয়স্ক ও অসুস্থ তাদেরকে নিরাপদে রাখতে হবে। কারণ, করোনায় তারা আক্রান্ত হলে সেখানে ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। আমি লক্ষ্য করেছি, আমাদের বিভিন্ন বাজার-ঘাটে অনেক লোকজন, অনেক ভিড়। মনে হয় সাধারণভাবে চলাফেরা করছে। রাস্তাঘাটে অনেক লোকজন দেখছি। বিজেএমইএ বলেছে, এখন ফ্যাক্টরি বন্ধ রাখবে এবং বেতন তারা দেবেন। কাজেই আপনারা রাস্তাঘাটে ভিড় করবেন না’, বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সরকারি হাসপাতালগুলো সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে। ডাক্তার-নার্সরা সার্বক্ষণিকভাবে আছে। আলাদা কর্নারও করা আছে প্রত্যেকটি হাসপাতালেই। যেখানে হাঁচি-কাশি বা সন্দেহজনক পেশেন্ট হলে তারা সেখানে যাবেন। তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়োর জন্য ডাক্তার-নার্স রয়েছেন। কেউ যদি করোনার রোগী হয়, যেসব হাসপাতালগুলো করোনার রোগীদের জন্য আলাদাভাবে তৈরি করা আছে, সেখানে চলে যাবেন।  তার মধ্যে রয়েছে— কুর্মিটোলা হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল। আরও তৈরি হচ্ছে। রেলওয়ে হাসপতাল, মহানগর হাসপতাল, এ ধরনের আরও বেশ কয়েকটি হাসপাতাল আমরা তৈরি করেছি। সেখানে ভালোভাবে চিকিৎসা নিবেন।’

‘পারসোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) সব হাসপাতালে দেওয়া হচ্ছে। রোজই আমরা পিপিই গ্রহণ করছি। আমি মনে করে বর্তমানে পিপিইর তেমন সংকট নাই। আমাদের টেস্টিং কার্যক্রম আমরা অনেক বৃদ্ধি করেছি। ইতোমেধ্য ১৪-১৫ জায়গায় টেস্টিং কার্যক্রম হচ্ছে। টেস্টিং কার্যক্রম জেলা-উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত আমরা নিয়ে যেতে চাচ্ছি। আমাদের যারা টেস্টিং করে, তারা অনেক টেস্টিং করতে পেরেছে। আমাদের ডিজি অফিসের মাধ্যমে আইইডিসিআর তারা গতকাল প্রায় পাঁচ শেরও অধিক টেস্ট করেছে। আগামীতে আমরা এটাকে এক হাজারেরও উপরে, দেড় হাজারেরও উপরে প্রত্যেকদিন নিয়ে যেতে চাচ্ছি। চায়না, কোরিয়া, সিঙ্গাপুর থেকে আমরা অনেক কিছুই শিখি। তারা কিন্তু এটাকে নিয়ন্ত্রণ করেছে টেস্টিংয়ের মাধ্যমে, আইসোলেশনের মাধ্যমে এবং মুখে মাস্ক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে। আমাদেরকে সেখান থেকেও শিক্ষা নিতে হবে। আমাদের এখনই সময়। আমরা চাই না এটা বেড়ে যাক, নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাক’, যোগ করেন তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যারা ডাক্তাররা আছেন ,যারা প্রাইভেটে প্র্যাকটিস করেন, হাসপাতাল, ক্লিনিক ও চেম্বারে, আমি আবারো অনুরোধ করবো, আপনারা এই দৃঃসময়ে দূরে থাকবেন না। আপনারা মানুষকে সেবা দেন, মানুষের পাশে থাবেন। আপনাদের যদি কোনো সমস্য থাকে, আমাদের অবশ্যই বলবেন। আমরা আপনাদের সাহায্য করবো। কিন্তু, আপনারা আপনাদের দায়িত্ব থেকে দূরে থাকবেন না।’

ব্রিফিংয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘আপনারা ইতোমধ্যে জানেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৮ জনের মধ্যে আমরা এই সংক্রমনের উপস্থিতি পেয়েছি। এ পর্যন্ত মোট সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা ৮৮। সারা বাংলাদেশে ১৪টি কেন্দ্রের মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হচ্ছে। ৩৬৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৮ জনের মধ্যে আমরা সংক্রমণ পেয়েছি। ১৩ জনের সংক্রমণ পেয়েছি আইইডিআরের নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে। আরও পাঁচ জনের সংক্রমণ পেয়েছি অন্যান্য হাসপাতালের পরীক্ষা ফলাফল হিসেবে।’

‘গত ২৪ ঘণ্টায় একজন মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা নয়। যিনি মারা গেছেন তার বয়স ৫৫ বছর। তিনি পুরুষ এবং নারায়ণগঞ্জের অধিবাসী। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও তিন জন ‍সুস্থ হয়েছেন। মোট এ সংখ্যাটি ৩৩। এখন বর্তমানে সংক্রমণ রয়েছে এরকম সংখ্যা ৪৬। যার মধ্যে ৩২ জন হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ১৪ জন বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের লক্ষণ, উপসর্গ খুবই মৃদু। তারা আমাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। নতুন আক্রান্ত ১৮ জনের মধ্যে ১১-২০ বছর বয়সের মধ্যে একজন, ৩১-৪০ এর মধ্যে দুজন, ৪১-৫০ বছর বয়সের মধ্যে চার জন, ৫১-৬০ বছর বয়সের মধ্যে নয় জন, ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন দুজন। ১৮ জনের মধ্যে পুরুষ ১৫ জন এবং নারী তিন জন। ১৮ জনের মধ্যে ১২ জনই ঢাকার, নারায়ণগঞ্জের পাঁচ জন এবং মাদারীপুরের একজন’, বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

5h ago