করোনাভাইরাস

পুরনো ট্রেনগুলোতে আইসোলেশন ওয়ার্ড বানাচ্ছে ভারত

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত ২৫ মার্চ দেশজুড়ে লকডাউনের ঘোষণা দেওয়ায় আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সব ধরনের যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় দেশটির রেলওয়ে বিভাগ।
indian-railways-exlarge.jpg
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ২০ হাজার ট্রেনের মধ্যে অধিকতর পুরনোগুলোকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রূপ দেওয়া হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত ২৫ মার্চ দেশজুড়ে লকডাউনের ঘোষণা দেওয়ায় আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সব ধরনের যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় দেশটির রেলওয়ে বিভাগ। 

১৬৭ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মত এশিয়ার সর্বাধিক প্রাচীন এই রেল সংযোগ একযোগে বন্ধ হয়ে গেলেও, এবার করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ২০ হাজার ট্রেনের মধ্যে অধিকতর পুরনোগুলোকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রূপ দেওয়া হচ্ছে।

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের চতুর্থ বৃহৎ এবং ভারতের শীর্ষ নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান রেলওয়ে বিভাগ ইতোমধ্যে দেশজুড়ে চালু রেখেছে ১২৫টি হাসপাতাল। এবার তারা রোগীদের জন্য ভ্রাম্যমাণ বিছানা বাড়াতে দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছে।

এক টুইটে ভারতের রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল বলেছেন, ‘রোগীদের সুস্থ করে তুলতে এই মুহূর্তে পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশ উপহার দিচ্ছে রেলপথ।’

ভারতে প্রতিদিন ৭ হাজার ৩৪৯টি স্টেশন দিয়ে ২০ হাজারেরও অধিক যাত্রীবাহী ট্রেন চলে। তবে লকডাউন চলাকালে ৬৭ হাজার ৩৬৮ কিলোমিটারের রেলপথ বর্তমানে অব্যবহৃত রয়েছে। চালু আছে কেবল মালবাহী ট্রেন।

দেশটির ১৬টি রেল জোনকে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত নয় এবং এখন আর চলাচলের কাজে ব্যবহৃত হয় না, এমন ট্রেনগুলোকে হাসপাতালে পরিবর্তন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে জরুরি প্রয়োজনে সেগুলো ব্যবহার করা যায়।

রেলওয়ে বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক (তথ্য ও প্রচার) রাজেশ দত্ত বাজপাই জানান, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পাঁচ হাজার আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত হয়ে যাবে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরও ৪০টি বগিকে আইসোলেশন ওয়ার্ড বানিয়ে দেওয়া যাবে।

প্রতিটি বগিতে চিকিৎসক কেবিন, নার্স স্টেশন এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম রাখা ছাড়াও ১৬ জন রোগীকে ঠাঁই দেওয়া যাবে। একবার তৈরি হয়ে গেলে প্রয়োজনে সেগুলোকে দেশের যেকোনো প্রান্তে পাঠিয়ে দেওয়া যাবে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সেখানে সরকারি চিকিৎসক, প্যারামেডিক্স, নার্স, স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়োগ দেবে।

রেলওয়ে হাসপাতালের জন্য বিছানা, স্ট্রেচার, মেডিকেল ট্রলি, মাস্ক, স্যানিটাইজার, অ্যাপ্রন এবং ভেন্টিলেটর তৈরির জন্য ইতোমধ্যে রেলওয়ে কারখানাগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভারতে আজ সোমবার পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৬৭ জনে এবং মারা গেছেন ১০৯ জন।

১৩০ কোটি মানুষের দেশে সংখ্যাটি ক্ষুদ্র মনে হলেও, উন্নত বিশ্বের তুলনায় করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ভারতের হাসপাতালগুলোর সক্ষমতায় ঘাটতি রয়েছে। এ ক্ষেত্রে আশার আলো নিয়ে এসেছে রেল বিভাগ।

অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) বলছে, মহামারির এই সময়ে ভারতে প্রতি হাজার লোকের জন্য হাসপাতালের বিছানা আছে একটিরও কম (শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ) এবং বেশিরভাগই শহরগুলোতে। তা ছাড়া এক রাজ্যের তুলনায় আরেক রাজ্যে সহজলভ্যতার পার্থক্যও চোখে পড়ার মত। যেমন: পশ্চিমবঙ্গে প্রতি হাজার লোকের জন্য দুই দশমিক পাঁচটি এবং বিহারে শূন্য দশমিক ১১টি বিছানা আছে।

চীনে প্রতি হাজার লোকের জন্য চারটি বিছানা থাকায়, হুবেই প্রদেশে প্রাদুর্ভাবের সময় মাত্র ১০ দিনে তাদের এক হাজার বিছানার হাসপাতাল বানাতে হয়েছে।

ওয়েলকাম ট্রাস্ট/ডিবিটি ইন্ডিয়া অ্যালায়েন্সের সিইও এবং ভাইরোলজিস্ট শহিদ জামিল বলেন, ‘চীন কীভাবে মোকাবিলা করেছে তা আমরা দেখেছি। স্বল্পমেয়াদে যেভাবেই হোক না কেন এবং দীর্ঘমেয়াদে আরও নিয়মতান্ত্রিকভাবে এই দুর্যোগের অবসান ঘটানো জরুরি।’

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago