আন্তর্জাতিক

চীনে গত ৮ দিনে করোনা আক্রান্তদের ৬৮ শতাংশের দেহে উপসর্গ নেই

চীনের গত আট দিনে করোনা আক্রান্তদের দুই-তৃতীয়াংশেরই দেহেই কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি। দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন (এনএইচসি) এই তথ্য জানিয়েছে।
উপসর্গবিহীন করোনাভাইরাস আক্রান্তদের শনাক্ত করার পর বিদেশিদের দেশে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করছে চীন সরকার। ছবি: রয়টার্স

চীনের গত আট দিনে করোনা আক্রান্তদের দুই-তৃতীয়াংশেরই দেহেই কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি। দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন (এনএইচসি) এই তথ্য জানিয়েছে।

তারা বলেছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত গত আট দিনে চীনে কোভিড-১৯ পজিটিজ হিসেবে শনাক্ত হওয়া ৮৮৫ আক্রান্তের মধ্যে ৬০১ জনের দেহে উপসর্গ দেখা যায়নি।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই আক্রান্তদের মধ্যে ৬০১ জন হুবেই প্রদেশের। তাদের মধ্যে ২৭৯ জনের দেহে কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি।

হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের হেড অব পাবলিক হেলথ ল্যাবরেটরি সায়েন্স লিউ পুন লিট ম্যান জানান, ‘কত শতাংশ আক্রান্তের দেহে উপসর্গ নেই তা এখনই সুনির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। আমরা জানি না একই উপাত্ত গত তিন মাসে আক্রান্তদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য কিনা। তবে, এটা সত্য যে উপসর্গ প্রকাশ পাওয়ার আগেই ভাইরাসটি অন্যের দেহে ছড়াতে পারে। অর্থাৎ, এমনটাও হতে পারে যে, করোনাভাইরাস এখনো নীরবে চীনে বিস্তৃত হচ্ছে।’

উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তদের নিয়ে জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন গত ৩১ মার্চ একটি জরিপ শুরু করে। ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই সরকারি হিসাবে আক্রান্ত হিসেবে দেখানো ৮১ হাজার জনের সবার উপসর্গ ছিল। সেখানে মঙ্গলবার, নতুন শনাক্ত ১৯৯ মধ্যে ১৩৭ জনের কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি। এদের ১০৭ জন অন্য দেশ থেকে চীনে এসেছিলেন। আর যে ৬২ জনের উপসর্গ ছিল তাদের মধ্যে ৫৯ জন বিদেশ থেকে চীনে এসেছেন।

লিউ পুন লিট ম্যান বলেন, ‘উপসর্গ প্রকাশ না করেই মানুষ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হতে পারেন। তাই, আক্রান্তদের শনাক্তের জন্য সেরোলজিক্যাল পরীক্ষার প্রয়োজন। রক্ত থেকে অ্যান্টিবডি সংগ্রহ করে এ ধরনের পরীক্ষা চালানো হয়।’

দক্ষিণ কোরিয়া উপসর্গ থাকুক কিংবা না থাকুক ঝুঁকির মধ্যে থাকা সবাইকেই টেস্টের আওতায় আনলেও যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের মতো মারাত্মকভাবে আক্রান্ত দেশগুলো এখনোও যাদের কোভিড-১৯ এর উপসর্গ আছে কেবল তাদেরই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছে।

গত ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, চীনে কোভিড-১৯ এ আক্রান্তদের মধ্যে ১ থেকে ৩ শতাংশে দেহে কোনো উপসর্গ দেখা দেয়নি।

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের পরিচালক ড রবার্ট রেডফিল্ড জানান, যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশ উপসর্গহীন।

একইভাবে হংকংয়ের সেন্টার ফর হেলথ প্রটেকশনের তথ্য অনুযায়ী, তাদের ওখানে মঙ্গলবার শনাক্ত হওয়া ৯৩৬ জনের মধ্যে ১৫৫ জনের দেহে উপসর্গ দেখা যায়নি।

হংকং ইউনিভার্সিটির এপিডেমিওলজি এবং বায়োস্টাটিক্স বিভাগের প্রধান বেনজমিন কাউলিং বলেন, ‘এখন পর্যন্ত পাওয়া গবেষণা ফলাফল ও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ গতিবিধি থেকে বলা যায়, যদি ১০০ জন আক্রান্ত হয়ে থাকেন তবে তাদের মধ্যে ১০ থেকে ৩০ শতাংশের দেহে কোনো ধরনের উপসর্গ না দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

এ অবস্থায় করোনাভাইরাসের কেন্দ্রস্থল উহানের লকডাউন তুলে দেওয়ায় মারাত্মক ঝুঁকির আশঙ্কা আছে বলে জানান উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়াং জিয়াং। তিনি বলেন, ‘এখনই লকডাউন তুলে দিলে “নীরব বাহক” এর মাধ্যমে ভাইরাসটি আরও ভয়াবহ আকারে বিস্তার করতে পারে।’ 

গতকাল সোমবার, কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র পিপলস ডেইলির সম্পাদক হেলথ টাইমসের একটি সাক্ষাৎকারে জানান, শহরে ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার উপসর্গহীন আক্রান্ত থাকতে পারে।

তিনি বলেন, ‘উপসর্গ না থাকলে ভাইরাসটি তুলনামূলকভাবে কম ছড়ায় বিষয়টি কিন্তু এমন না। নীরব বাহকরাও অন্যের দেহে ভাইরাসটি ছড়াতে পারে। এ বিষয়ে আমাদের সবারই সতর্ক হওয়া উচিত।’

Comments

The Daily Star  | English
Sakib Jamal. Photo: Crain's New York Business. Image: Tech & Startup

Bangladeshi Sakib Jamal on Forbes 30 under 30 list

Bangladeshi born Sakib Jamal has been named in Forbes' prestigious 30 Under 30 list for 2024. This annual list by Forbes is a compilation of the most influential and promising individuals under the age of 30, drawn from various sectors such as business, technology, arts, and more. This recognition follows his earlier inclusion in Crain's New York Business 20 under 20 list earlier this year.

4h ago