জনসমাগম ঘটিয়ে বিয়ে করায় সরকারি কর্মকর্তা বরখাস্ত
দেশব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব চলাকালীন জনসমাগম ঘটিয়ে বিয়ে করায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার এক সরকারি কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার ভোররাত দেড়টায় বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইদুল ইসলাম।
জনসমাগম ঘটিয়ে বিয়ে করা সরকারি কর্মকর্তা হলেন— সোনারগাঁও উপজেলার আমিনপুর ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক শাহীন কবির।
ইউএনও সাইদুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে শাহীন কবিরকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল রাতে মেইলে পাঠানো ঢাকা বিভাগীয় পরিবার পরিকল্পনা পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. শরিফুল ইসলামের সই করা আদেশে এ বরখাস্তের বিষয়ে জানানো হয়।’
আদেশে বলা হয়, দেশব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সময় শাহীন কবির উপজেলার সনমান্দি ইউনিয়নে গিয়ে বিয়ের জন্য অধিক জনসমাগম করেছেন। যা বর্তমান আইন ও সরকারি চাকরির পরিপন্থি বিধায় তাকে সরকারি কর্মচারী আইনে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তিনি প্রচলিত বিধি অনুযায়ী চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্তকালীন খোরপোষ ভাতা পাবেন।
ইউএনও জানান, গত ৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় জনসমাগম ঘটিয়ে বিয় করার বিষয়টি জানার পরদিন (৮ এপ্রিল) বিকালে শাহীন কবিরের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একইসঙ্গে সরকারি কর্মকর্তা হয়েও নির্দেশনা না মেনে জনসমাগম ঘটিয়ে বিয়ে করায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে সুপারিশ করা হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতেই তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে নারায়ণগঞ্জকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। কিন্তু, এমন পরিস্থিতিতে গত ৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় লকডাউনের আইন ভেঙ্গে সোনারগাঁও উপজেলার আমিনপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের গোচাইট গ্রামের পিয়ার হোসেনের ছেলে ও একই ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক শাহীন কবির উপজেলার সনমান্দি গ্রামের জামাল উদ্দিনের মেয়ে নাদিয়া আক্তারকে বিয়ে করেন। ৭০ জন বরযাত্রী নিয়ে বিয়ে করতে যান শাহীন। বিয়ে বাড়িতে আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে খাওয়া-দাওয়াও হয়। সেখানেই কাজি বিয়ে পড়ান। এ নিয়ে এলাকার মানুষ সমালোচনা করতে থাকলে এক পর্যায়ে শাহীন কবির ও তার সঙ্গে অতিথি হয়ে আসা বরযাত্রীরা কনে নাদিয়া আক্তারকে রেখে দ্রুত এলাকা ছেড়ে চলে যান।
গতকাল সকাল থেকে একাধিকবার শাহীন কবিরের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
Comments