অস্ট্রেলিয়ায় আইন ভঙ্গ করায় মন্ত্রীকে ১০০০ ডলার জরিমানা, পদত্যাগ
অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের আর্টস মিনিস্টার ডন হারউইনকে পুলিশ গতকাল বৃহস্পতিবার জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন লঙ্ঘনের অপরাধে ১০০০ ডলার জরিমানা করার পর তিনি আজ পদত্যাগ করেছেন।
আজ শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার নাইননিউজ শিরোনাম করে, ‘করোনা নিষেধাজ্ঞার সময় ছুটি কাটানোর ছবি প্রকাশ্যে আসায় নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের মন্ত্রী ডন হারউইনের পদত্যাগ’।
এর আগে তার জরিমানার সংবাদ প্রকাশ করে অস্ট্রেলিয়ার এসবিএস নিউজ। সংবাদে বলা হয়, চলতি সপ্তাহর শুরুতে মন্ত্রী সিডনির স্থায়ী বাসভবন ছেড়ে সেন্ট্রাল কোস্টের পার্ল বিচে নিজের হলিডে হাউজে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন। তার মিলিয়ন ডলারের ওই হাউজটি সিডনি থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে।
নিউ সাউথ ওয়েলসের পুলিশ কমিশনার মিক মিলার মিডিয়া বিবৃতিতে বলেছেন, ‘তদন্তে পাওয়া গেছে, করোনাভাইরাসের কারণে অস্ট্রেলিয়া সরকারের জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার যে নির্দেশ রয়েছে মন্ত্রী সেই তা অমান্য করেছেন।
পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছেন, মন্ত্রী সেন্ট্রাল কোস্টের পার্ল বিচের নিজস্ব হলিডে হাউজে ছিলেন করোনা ভাইরাসের ভয়ে। যদিও তার স্থায়ীভাবে থাকার জায়গা সিডনিতে। কিন্তু, তিনি সিডনি থেকে সেন্ট্রাল কোস্টে যাতায়াত করেছেন গত কয়েকদিন ধরে এবং সেখান থেকেই অফিসের কাজ করেছেন গত তিনদিন ধরে।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস বিস্তার রোধে নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্য সরকার অস্থায়ী আইন করেছে, অতি জরুরি কাজ ছাড়া বাইরে বের না হতে এবং দূর দূরান্তে, লং ড্রাইভ কিংবা রিজিওনাল টাউনে যাতায়াত না করতে।
নিউ সাউথ ওয়েলসের পুলিশ কমিশনার ফুলার বার বার জানিয়েছেন, সবাইকে তাদের প্রাথমিক বা মূল জায়গায় অবস্থান করতে হবে। করোনার বিস্তার রোধ করতে এর সঙ্গে মোটা অংকের জরিমানাও যুক্ত করা হয়েছে।
ডেইলি টেলিগ্রাফকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পুলিশ কমিশনার বলেছেন, ‘কোন ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান এই মুহূর্তে কোভিড আইনের ঊর্ধে নয়।
যথারীতি এই ঘটনার পর মন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি উঠে। নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রধান বিরোধীদল লেবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, এরপর তার আর মন্ত্রীর দায়িত্বে থাকার কোনো অধিকার নেই।
এবিসি নিউজকে নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রিমিয়ার মিস গ্লাডিস মন্ত্রীর বরখাস্তের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। বলেছেন, ‘পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত শেষ হলেও চূড়ান্ত তদন্ত পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘সমগ্র কমিউনিটির কাছে আমি আমার টিমের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাইছি। অবশ্যই এ মুহূর্তে তার সিডনি ছাড়া উচিত হয়নি।
৫৫ বছর বয়সী আর্টস মিনিস্টার ডন হারউইন নিউজ কর্পোরেশনকে জানিয়েছেন, তিনি স্বাস্থ্যগত কারণে হলিডে হাউজে ছিলেন। তার স্বাস্থ্যের জন্য সিডনির ছোট বাসাটি উপযুক্ত নয়।
পুলিশ কমিশনার মার্ক ফুলার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, মন্ত্রীর সঙ্গে ওই হলিডে হাউজে আরও একজনের থাকার প্রমাণ পুলিশ পেয়েছে। সেটাও তদন্ত করা হচ্ছে।
আকিদুল ইসলাম, অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
Comments