অস্ট্রেলিয়ায় এশিয়ানদের ওপর বর্ণবাদী সন্ত্রাসের আশঙ্কা
গত ১৫ এপ্রিল অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্যে দুই এশিয়ান শিক্ষার্থীর ওপর অতর্কিত হামলা হয়। তারা দুজনই মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী।
চ্যানেল নাইন নিউজের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ওইদিন স্থানীয় সময় বিকাল ৫টার দিয়ে ওই দুই শিক্ষার্থী শহরের এলিজাবেথ রোড দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। অতর্কিতে তাদের ওপর হামলা করা হয়। সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা যায়, জ্যাকেট পরিহিত দুজন নারী এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি দিতে দিতে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে যেতে থাকেন ওই দুই শিক্ষার্থীকে। সে সময় হামলাকারীরা চিৎকার করে বলতে থাকেন— ‘গো ব্যাক টু চায়না’।
এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। তিনি এসবিএস নিউজকে বলেছেন, ‘অস্ট্রেলিয়ায় এশিয়ান অভিবাসীদের ওপর বর্ণবাদী হামলা দুঃখজনক।’ অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল অব এথনিক কমিউনিটির মুখপাত্র মেরি প্যাটেসন এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘এ ধরনের আচরণ মানুষকে অনিরাপদ বোধ করায়। এটাকে আমরা প্রশ্রয় দিতে পারি না।’
মেলবোর্ণের বর্ণবাদী হামলা যেমনি বিব্রত করে তোলে সরকার ও প্রশাসনকে, তেমনি বিষয়টি তাদের ভাবিয়েও তোলে। জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই অস্ট্রেলিয়ান একটি ডানপন্থি উগ্রবাদী গোষ্ঠী এশিয়ান অভিবাসীদের বিরুদ্ধে বৃহত্তর অস্ট্রেলিয়ান শেতাঙ্গদের বর্ণবাদী মনোভাবকে উস্কে দিতে কাজ করছেন। এরা আমেরিকার বর্ণবাদীদের মতো সংঘর্ষে লিপ্ত না হলেও অনলাইনে বর্ণবাদী কার্যকলাপে খুবই সক্রিয়। এই গোষ্ঠীর সঙ্গে আমেরিকার বর্ণবাদী শ্বেতাঙ্গ গোষ্ঠীর গভীর যোগাযোগ আছে এবং তারা নিয়মিতভাবে তাদের আচরণ ও মনোভাব বিনিময় করেন।
সম্প্রতি সন্ত্রাসবাদ বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, করোনাভাইরাসের সংকটকে কাজে লাগিয়ে বর্ণবাদীরা বহিরাগত অভিবাসী বিরোধী মনোভাব সৃষ্টি করতে পারে।
গতকাল সোমবার চার্লস স্টুয়ার্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিস্টি ক্যাম্পিয়ন এসবিএস নিউজকে বলেছেন, ‘এ বিষয়ে প্রমাণপত্র রয়েছে যে, এই মুহূর্তে ডানপন্থি একটি গ্রুপ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়।’
আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
Comments