পিপিই জীবাণুমুক্ত করতে মিটফোর্ড হাসপাতালে ‘ডিসইনফেকশন রুম’
![](https://tds-images-bn.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/uv-room.jpg?itok=wQu7eiN4×tamp=1587472516)
জীবাণুমুক্ত করে পিপিই পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করে তুলতে ঢাকায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে একটি জীবাণুনাশী ঘর (ডিসইনফেকশন রুম) তৈরি করেছে একদল বিশেষজ্ঞ। উদ্যোক্তারা বলেছেন, স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের চাহিদা সামাল দিতে এটা কার্যকর সমাধান হতে পারে।
বাংলাদেশি-অস্ট্রেলিয়ান কেমিক্যাল প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহিম প্রথম পরিকল্পনাটির ধারণা দেন। তিনি জানান, আগামীকাল হাসপাতালের ভাইরোলজি বিভাগের সহযোগিতায় পুরো ব্যবস্থাটির কার্যকারিতা যাচাই করে দেখা হবে।
এক ফেসবুক পোস্টে মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘আমরা একটি যুদ্ধে লড়ছি। লড়াইটা ধীরে হলেও আমরা থামছি না। সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে কিন্তু সেগুলো মোকাবিলা করে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। যদি এই প্রকল্পের জন্য একটা জীবনও বেঁচে যায়, তাহলেই এটা সফল।’
এই উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবীদের যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আরিফুর।
সম্প্রতি, দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কোভিড-১৯ আক্রান্ত দেশের এক চিকিৎসকের মৃত্যু ও বহু চিকিৎসাকর্মী আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় হাসপাতালগুলোতে অতিবেগুনী রশ্মি (ইউভি-সি) ব্যবহার করে পিপিই জীবাণুমুক্ত করার উদ্যোগ নেন আরিফুর। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে এরই মধ্যে একটি কমিটি গঠন করেছেন তিনি। কমিটির সদস্যরা প্রকল্পটি অনুমোদনের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
ইতিমধ্যে সরকারের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সবুজ সংকেত দিয়েছে। আরিফুর জানান, এখন চ্যালেঞ্জ হলো হাসপাতালগুলোতে জীবাণুনাশী এই যন্ত্রগুলো স্থাপন করা।
প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য সহায়তা করেছেন কমিটির সদস্য কম্পিউটার বিজ্ঞানী ডা. মাহমুদুল ফয়সাল আল আমিন। গত সপ্তাহে তিনি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এই প্রকল্পটির কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখার জন্য অনুমতি নেন।
এই প্রক্রিয়ায় পিপিই জীবাণুমুক্ত করা সম্ভব হলে ভবিষ্যতে দেশের সব বড় বড় হাসপাতালে এই ব্যবস্থা চালু হতে পারে। আরিফুলের আশা তাদের এই প্রকল্প সফল হবে। আর সেটি হলে প্রচুর স্বেচ্ছাসেবকের প্রয়োজন হবে তাদের।
প্রতিদিন চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পিপিইর সংখ্যা হিসাবে, ভবিষ্যতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লে স্বাস্থ্যকর্মীদের পর্যাপ্ত পিপিই সরবরাহ অসম্ভব হয়ে পড়বে। বর্তমানে যে পিপিই দেশে আছে তা জীবাণুমুক্ত করে আবার ব্যবহার করতে পারলে অনেক জীবন রক্ষা পেতে পারে।
বিশ্বের অনেক দেশই জীবাণুনাশী ইউভি রশ্মি ব্যবহার করছে। চীনে পাবলিক বাসগুলো ইউভি রশ্মি দিয়ে জীবাণুমুক্ত করা হয়। অনেক হাসপাতালে রোবটের মাধ্যমে মেঝে পরিষ্কার করতে ইউভি রশ্মি ব্যবহার করা হয়। এমনকি কয়েকটি ব্যাংক কাগজের নোট জীবাণুমুক্ত করতেও এই রশ্মি ব্যবহার করেছে।
ইউভি রশ্মি ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার জিনগত উপাদানগুলোকে মেরে ফেলে। যদিও কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে এর কার্যকারিতা নিয়ে এখনো তেমন কোনো পরীক্ষা করা হয়নি, তবে সার্স ভাইরাসের ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়াটি কার্যকর প্রমাণিত হয়েছিল।
Comments