করোনাভাইরাস: নিলামে উঠবে মুন্না-আলফাজের জার্সি

monem munna
ছবি: বিএফএফ

করোনাভাইরাসের ফলে সৃষ্ট অচলাবস্থায় দুঃস্থ ও দুর্দশাগ্রস্ত মানুষদের সাহায্যার্থে অর্থ সংগ্রহের জন্য নিলামে তোলা হবে বাংলাদেশের সাবেক দুই ফুটবল তারকার জার্সি। প্রয়াত ডিফেন্ডার মোনেম মুন্নার জার্সি নিলামে ওঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার স্ত্রী। সাবেক স্ট্রাইকার আলফাজ আহমেদও নিজের জার্সি নিলামে তুলতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।

১৯৯৫ সালে প্রথমবারের মতো কোনো আন্তর্জাতিক শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। মায়ানমারে চার জাতির আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। ওই আসরে ২ নম্বর জার্সি পরে মাঠ মাতিয়েছিলেন মুন্না। সেটিই নিলামে তোলা হবে বলে গতকাল বৃহস্পতিবার দ্য ডেইলি স্টারের কাছে জানিয়েছেন তার স্ত্রী সুরভি মুন্না, ‘বাইরের দেশে এ ধরনের আয়োজন করতে দেখেছি। আমি তাই সবসময় নিজেকে জিজ্ঞাসা করেছি, আমাদের দেশে কেন এমন কিছু হয় না?’

‘যদি মুন্নার জার্সিটি চলমান সংকটের কারণে যারা ভুক্তভোগী, তাদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে ব্যবহার করা যায়, তবে এটি আমার জন্য একটি বিশাল অর্জন হবে। আজ যদি মুন্না বেঁচে থাকত, তবে মানুষের সাহায্যার্থে সে আরও কিছু বড় কিছু করতে পারত। সে ছিল এমন একজন যে নিজের পকেটে পাঁচ টাকা থাকলে, নিজের প্রয়োজনীয় কিছু কেনার পরিবর্তে কোনো অসহায় মানুষকে দিয়ে দিত।’

২০০৫ সালে না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন এক সময় ঢাকা আবাহনীর হয়ে দাপট দেখানো মুন্না। তার যে জার্সিটি নিলামে তোলা হচ্ছে, সেটি ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে। তা ছাড়া, তার স্ত্রীর কাছে জার্সিটি একটি স্মারকও বটে। তবে সেটি নিলামে তোলা নিয়ে কোনো দোটানা নেই সুরভির মনে, ‘আমি মারা না যাওয়া পর্যন্ত মুন্নার স্মৃতি সর্বদা আমার সঙ্গে থাকবে। আমার কাছে তার কিছু জার্সি এবং বুট রয়েছে। সেগুলো বাদে তার বেশিরভাগ স্মৃতিচিহ্নগুলো ইতোমধ্যে আমি মানুষকে সাহায্য করার জন্য দিয়ে দিয়েছি।’

alfaz ahmed
ছবি: সংগৃহীত

২০১৩ সালে বুটজোড়া তুলে রেখেছেন আলফাজ। লম্বা ক্যারিয়ারে ঢাকা মোহামেডান ও ঢাকা আবাহনী, দেশের সেরা দুদলেই খেলেছেন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে ১৯৯৯ সালে দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে জিতেছিলেন স্বর্ণপদক। ওই আসরের ফাইনালে জয়সূচক গোলটি এসেছিল তার পা থেকে। তিনি খেলেছিলেন ১০ নম্বর জার্সি গায়ে।

সেই জার্সিটি নিলামে তোলার কথা দ্য ডেইলি স্টারকে গতকাল নিশ্চিত করেছেন আলফাজ, ‘এই করোনভাইরাস সংকটের সময় যখন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তখন অভাবীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এটি আমার ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। দক্ষিণ এশিয়ান গেমসের ফাইনালে লক্ষ্যভেদ করার সময় আমি যে জার্সিটি পরেছিলাম, তা দিয়ে দিচ্ছি (নিলামে তোলার জন্য)। পাশাপাশি আমি দেশের অন্যান্যদেরও অনুরোধ করছি, যারা অভাবী, তাদের সহায়তা করুন।’

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে গোটা ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে একটি ব্যাটই ব্যবহার করেছিলেন তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। মাতিয়েছিলেন আসর। প্রিয় সেই ব্যাটটি তিনি কাজে লাগিয়েছেন মহামারি করোনাভাইরাস মোকাবিলায়। গত বুধবার নিলামে তোলা ব্যাটটি আয় করেছে ২০ লাখ টাকা। এই অর্থ ‘সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশন’- এর মাধ্যমে ব্যয় করা হবে দেশের সুবিধাবঞ্চিতদের সাহায্যার্থে।

এর আগে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অর্থ সহায়তা করার জন্য ব্যাট নিলামে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার গলে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। সেই ইতিহাসরাঙানো অমূল্য ব্যাটটি শিগগিরই নিলামে তুলতে যাচ্ছেন তারকা উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus promises election on time

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus yesterday reaffirmed his commitment to holding the 13th national election in the first half of February next year.

8h ago