যশোরে দুই দিনে ৮ মাদকসেবীর মৃত্যু
যশোরে গত দু্ই দিনে আট মাদকসেবীর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বিভিন্ন উপজেলার আট জনের মৃত্যুর পরে নড়েচড়ে বসেছে জেলার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।গতকাল রাতে শহরের বেজপাড়ার একটি বাড়ি থেকে নান্টু (৩৫) নামে এক মাদকসেবীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
কোতয়ালি থানার উপপরিদর্শক জিয়াউর রহমান বলেন, নান্টু শহরের মাড়ুয়া মন্দিরের পাশে সরকার অনুমোদিত মদের দোকানের কর্মচারী ছিলেন। বেজপাড়ায় পৌর কাউন্সিলর সন্তোষের বাড়ির পাশে তিনি একটি ভাড়া বাসায় একাই বসবাস করতেন। কাল সকাল সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
কোতয়ালি থানার পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড কমিউনিটি পুলিশিং) সুমন ভক্ত বলেন, নান্টু মাদকসেবী ছিলেন। তিনি প্যাথেডিন ইনজেকশন নিতেন বলে জানতে পেরেছি। তার ঘরেও প্যাথেডিনের খালি অ্যাম্পুল পাওয়া গেছে।
গতকাল রাতেই যশোরের ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঝিকরগাছা উপজেলার কাটাখালি গ্রামের সাহেব আলী (৬০) নামে একজনের মৃত্যু হয়। পুলিশ জানায়, বাড়িতেই অতিরিক্ত মদ খেয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।
সদর উপজেলার চুড়ামনকাঠি ইউনিয়নের ছাতিয়ান তলার আক্তারুজ্জামান (৪৫) বাড়িতে মদ খেয়ে মারা যান। গতকাল সকালে পরিবারের সদস্যরা তড়িঘড়ি আক্তারুজ্জামানের দাফন সম্পন্ন করেন। বিকালে মনিরামপুর উপজেলার মোহনপুর গ্রামের মোমিন (৪২) রেকটিফাইড স্পিরিট পান করে মারা যান।
বৃহস্পতিবার ফজলুর রহমান চুক্কি (৫০) ও মনি বাবু (৪৫) নামে দুই মাদকসেবীর মৃত্যু হয়। হাসপাতালের রেজিস্ট্রার খাতায় মৃত্যুর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে অতিরিক্ত মদ্যপান। ফজলুর রহমান চুক্কির বাড়ি শহরতলীর ঝুমঝুমপুর মান্দারতলা এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, চুক্কি ও তার স্ত্রী গাঁজা বিক্রি করতেন।
মনি বাবু শহরের গরিব শাহ্ রোডের বাসিন্দা হলেও ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের একটি বাড়িতে বসবাস করতেন। তার স্ত্রী হীরা খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, বুধবার মদ খেয়ে মনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে বৃহস্পতিবার ভোরে তার মৃত্যু হয়। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক আজিজুর রহমান বলেন, মদের বিষক্রিয়ায় মনি বাবুর মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডে সাবুর (৪৬) নামে এক মাদকসেবীর মৃত্যু হয়েছে। তার পরিবারের সদস্যরা জানায়, সাবুর ও মনি বাবু একই সঙ্গে মদ খেয়েছিল। একই দিন মোহনপুরে বাসিন্দা মুক্তার আলী (৪৫) নামে আরও এক মাদকসেবীর মৃত্যু হয়।
এ প্রসঙ্গে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়গুলো আমারা জেনেছি। খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। যারা এই ভেজাল মদের কারবার করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দায়িত্ব অবহেলার কারণে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Comments