লালমনিরহাটে আগুনে পুড়িয়ে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে স্বামী গ্রেপ্তার
লালমনিরহাটের খুটামারা এলাকায় স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে ঘাতক স্বামী বিজিবির চাকরিচ্যুত সদস্য খোকন ইসলামকে (৪৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১০টায় খোকনের বাড়ি থেকে নিহত গৃহবধূ লাকী বেগমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। রাতেই নিহতের ভাই জাকির হোসেন বাদী হয়ে লালমনিরজাট সদর থানায় খোকনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। লাকী বেগম লালমনিরহাট পৌর এলাকার খোচাবাড়ি লাইনপাড়ের মৃত আব্দুস সামাদের মেয়ে।
পুলিশ জানায়, পারিবারিক কলহের জেরে গত ২২ এপ্রিল রাতে খোকন তার স্ত্রী লাকী বেগমের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার শরীরের অধিকাংশ স্থান পুড়ে যায়। পরে তাকে গোপনে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার কথা বলে খোকন গতকাল সকালে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িতে চলে যান। ওই দিন রাতেই তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার এবং খোকনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
লাকীর মা সুফিয়া বেওয়া জানান, তারা দরিদ্র হওয়ায় মেয়ে জামাইয়ের চাহিদা মেটাতে পারতেন না। এজন্য খোকন লাকীকে অযথা মারধর করতো।
তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে এতিমখানায় থেকে পড়াশুনা করছিল। বিজিবির চাকুরিচ্যুত সিপাহি খোকন তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ১০ বছর আগে বিয়ে করে। ওদের ঘরে সাত বছর বয়সের একটি মেয়ে আছে।’
সুফিয়া বেওয়া আরও বলেন, ‘প্রায়ই আমার মেয়েকে শারীরিক নির্যাতন করতো খোকন। প্রথমে সে লাকীর শরীরে এসিড নিক্ষেপ করে এবং পরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।’
‘আমি ঘাতক খোকনের ফাঁসি চাই’, দাবি করেন তিনি।
লাকীর খালা রবি বেগম বলেন, ‘খোকন যেদিন লাকীর শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়, সেদিন লাকী ফোনে সবকিছু আমাকে জানায়। আমরা ওই বাড়িতে যাওয়ার আগেই খোকন অগ্নিদগ্ধ লাকীকে নিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে যায়।’
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজ আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘খোকনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসলে ঘটনার বিস্তারিত জানা যাবে।’
Comments