কাগজপত্র জাল জেনে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন রোনালদিনহো
একটি দাতব্য সংস্থার শুভেচ্ছাদূত হিসেবে কাজ করতে পালাজ্জো ক্যাসিনোর মালিক নেলসন বেলত্তির আমন্ত্রণে প্যারাগুয়ে এসেছিলেন ব্রাজিলের সাবেক ফুটবলার রোনালদিনহো ও তার ভাই। আর সেখানে গিয়েই পড়েন মহাঝামেলায়। কারণ যে কাগজপত্র নিয়ে সেখানে গিয়েছিলেন তার সবই ছিল ভুয়া। আর এমনটা জানার পর বিস্মিত হয়ে গিয়েছিলেন এ সাবেক তারকা ফুটবলার।
ভুয়া কাগজপত্র নিয়ে প্যারাগুয়েতে ঢোকায় মার্চের শুরুতে রোনালদিনহোকে আটক করে সে দেশের পুলিশ। তাদের বিপক্ষে অভিযোগ ছিল ৪০ বছর বয়সী এ ব্রাজিলিয়ান তারকা ও তার ভাই জাল পাসপোর্ট তৈরি করেছেন। যে কারণে প্যারাগুয়ের আদালত তাদের ছয় মাস জেলে থাকার শাস্তি দেয়। পরে তার আইনজীবী রোনালদিনহোকে জেলে পাঠানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেন। পরে ১.৬ মিলিয়ন ডলার মুচলেকা দিয়ে জামিন করান। তাও ৩২ দিন পর। এ সময়ে কারাগারে ছিলেন এ তারকা।
কিন্তু মুক্তি মিলেও যেন মিলেনি। কারণ তারপর থেকে হোটেলে গৃহবন্দী ছিলেন। এ সময় পর্যন্ত তার অনুভূতি জানা যায়নি। তবে সম্প্রতি প্যারাগুয়ের টেলিভিশন নেটওয়ার্ক এবিসি কালারকে এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন এ তারকা। সেখানেই রোনালদিনহো বলেন, 'ডকুমেন্টগুলো আসল নয় জেনে আমরা পুরোপুরি বিস্মিত হয়ে গিয়েছিলাম। তারপর থেকে আমার উদ্দেশ্য ছিল ঘটনার সত্যতা বের করার জন্য বিচার ব্যবস্থাকে সহায়তা করা।'
তবে এমন পরিস্থিতিতে পড়বেন এমনটা স্বপ্নেও ভাবেননি এ ব্রাজিলিয়ান, 'সেই মুহূর্ত থেকে আজ অবধি পর্যন্ত আমরা সমস্ত কিছু ব্যাখ্যা করেছি এবং সমস্ত কিছুই সহজ করে দিয়েছি যা আমাদের কাছে অনুরোধ করা হয়েছিল। এটি আমার জন্য কঠোর একটি আঘাত ছিল। আমি কখনই ভাবিনি যে আমি এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাব। সারা জীবন আমি চেষ্টা করেছি সর্বোচ্চ পেশাগত স্তরে পৌঁছতে এবং আমার ফুটবল দিয়ে মানুষকে আনন্দ দিতে।'
কারাগারে অবশ্য বেশ আমুদে সময়ই কাটিয়েছেন রোনালদিনহো। খেলেছেন ফুটবলও। এতো ঝামেলার পরও তাই সে দেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন তিনি, 'আমি দেশটিতে পৌঁছানোর প্রথম দিন থেকে আজ অবধি সমস্ত প্যারাগুইয়ানদের ভালবাসা, স্নেহ ও শ্রদ্ধা পেয়েছি এবং আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। (মামলায় পূর্ণ মুক্তি মেলার ব্যাপারে) আমার বিশ্বাস আছে। আমি সবসময় সবকিছু যেন ভালো যায় এমন প্রার্থনা করি এবং আশা করি এটি খুব শীঘ্রই শেষ হয়ে যাবে।'
আর মুক্তি পেলে দেশে গিয়ে কি করবেন তাও জানালেন রোনালদিনহো, 'প্রথমেই আমার মাকে বড় একটি চুমু দিব। তিনি নিজের বাড়িতে কোভিড -১৯ মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকে কঠিন সময় কাটাচ্ছেন। তারপরে এই পরিস্থিতিতে কীভাবে বিশ্বাস এবং শক্তি নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করব।'
Comments