হাসপাতালের বিল মেটাতে নবজাতক বিক্রি, মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিলো পুলিশ
নবজাতক সন্তান বিক্রি করে হাসপাতালের বিল মেটানো বাবা-মায়ের কোলে তাদের সন্তানকে উদ্ধার করে ফিরিয়ে দিলেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) এর কমিশনার আনোয়ার হোসেন।
গতকাল শুক্রবার গাজীপুর মেট্রোপলিটনের কোনাবাড়ি থানা এলাকার সেন্ট্রাল মেডিকেল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান জিএমপি কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন। ঘটনার সত্যতা জানতে পেরে তাৎক্ষণিক নিজেই টাকা পরিশোধ করে সন্তানকে তার মার কোলে ফিরিয়ে দেন।
গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর এলাকার শরীফ হোসেন জানান, গত ২১ এপ্রিল স্ত্রী কেয়া আক্তারকে কোনাবাড়ির সেন্ট্রাল মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করেন তিনি। ওই দিনই অস্ত্রপচারের মাধ্যমে তার একটি ছেলে সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। গতকাল হাসপাতাল ছাড়ার সময় এ কয়দিনে হাসপাতালের বিল আসে ৪৭ হাজার টাকা। কিন্তু দরিদ্র দম্পতি হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে পারেননি। বাধ্য হয়ে ২৫ হাজার টাকায় নবজাতক সন্তানকে বিক্রি করে দেন। পরে সেই টাকায় হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে বাড়ি চলে যান।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আনোয়ার হোসেন জানান, তিনি অতিরিক্ত মহা পুলিশ পরিদর্শক (এসবি) এর মাধ্যমে ঘটনাটি শোনার পর সত্যতা নিশ্চিত হন। পোশাক শ্রমিক এক দম্পতি টাকার অভাবে নবজাতককে ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন বলে জানতে পারেন। ওই দম্পতি নগদ পান ১৫ হাজার টাকা এবং বাকি ১০ হাজার টাকা সাত দিন পর পরিশোধের কথা ছিল। তা দিয়ে তারা হাসপাতালের পাওনা কিছুটা পরিশোধ করেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় নবজাতককে কিনে নেওয়া নিঃসন্তান ওই ব্যক্তিকে আনোয়ার হোসেন ২৫ হাজার টাকা ফেরত দেন। পরে নবজাতককে ফেরত নিয়ে শরীফ-কেয়া দম্পতির বাড়িতে যান এবং তাদের হাতে তুলে দেন। এছাড়াও শিশুটির জন্য আরও পাঁচ হাজার টাকা দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি দুঃখজনক। সন্তানকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে পেরে খুব ভালো লেগেছে।’
জানতে চাইলে, কোনাবাড়ি সেন্ট্রাল মেডিকেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোনায়েম খান জানান, ‘ওই দম্পতি তাদের আরও দুই-একজন লোক নিয়ে এসে আমাকে সুপারিশ করে মোট বিলের ১৫ হাজার টাকা দিয়ে যান। কিন্তু তারা কীভাবে টাকা সংগ্রহ করেছে বা সন্তান বিক্রি করেছে কিনা এসব বিষয়ে আমাকে কিছু বলেনি। সন্তান বিক্রি করে হাসপাতালের বিল পরিশোধের কথা জানানো হলে আমি অবশ্যই মানবিক দিক বিবেচনা করতাম।’
Comments