খাদ্য সংকটে কর্মহীন শ্রমিক

করোনা পরিস্থিতিতে খাদ্য সংকটে পড়েছেন কর্মহীন শ্রমিকরা। বাজারে খাদ্য থাকলেও তা কেনার সামর্থ্য নেই তাদের। ফলে, এসব পরিবারগুলোর বেশিরভাগই এখন ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। তবে, পর্যাপ্ত ত্রাণের অভাবে ত্রাণ বঞ্চিত আছে এসব পরিবার।
ছবি: এস দিলীপ রায়

করোনা পরিস্থিতিতে খাদ্য সংকটে পড়েছেন কর্মহীন শ্রমিকরা। বাজারে খাদ্য থাকলেও তা কেনার সামর্থ্য নেই তাদের। ফলে, এসব পরিবারগুলোর বেশিরভাগই এখন ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। তবে, পর্যাপ্ত ত্রাণের অভাবে ত্রাণ বঞ্চিত আছে এসব পরিবার। 

করোনার কারণে সবাইকে ঘরে বন্দী থাকতে হচ্ছে। তাই বন্ধ হয়ে গেছে আয়ের পথও। অর্থের অভাবে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে শ্রমিকদের। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে পরিবার পরিজন নিয়ে। কারো ঘরে আটা আছে তো চাল নেই, আবার কারো ঘরে চাল আছে তো তরকারি নেই। এভাবে চরম খাদ্য সংকটে দিন পার করছেন এখানকার কর্মহীন শ্রমিক পরিবারগুলো।

লালমনিরহাট সদরের ফুলগাছ গ্রামের দিনমজুর সিরাজুল ইসলাম (৪৬) জানান, সাত জনের সংসার চালাতে তিনি হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন। এভাবে আর পারা পারা যাচ্ছে না। মহাজনের কাছে ২০ দিনের আগাম মজুরি নিলেও, সেই টাকাও শেষ হয়ে গেছে। তরকারির অভাবে লবণ দিয়ে ভাত মেখে খেতে হচ্ছে পরিবারের সদস্যদের। তাও একবেলার জন্য।

তিন বলেন, ‘বয়স্করা পরিস্থিতি বুঝতে পারলেও শিশুদের কোনোভাবে সামলানো যাচ্ছে না। তারা ভাত ও মাছ খেতে চায়। কিন্তু, না পেয়ে কান্নাকাটি করে। আমি অনেকদিন কাজ ছাড়া ঘরেই বসে আছি। কিন্তু, আমার পরিবার এখন পর্যন্ত কোনো ত্রাণ সহায়তা পায়নি।’

একই গ্রামের নুরজাজহান বেগম (৪৪) জানান, তার ঘরে খাবার নেই। খাবারের জন্য এদিক-সেদিক ছুটেও খাবার জুটছে না। কেউ এই সময়ে ধারও দিচ্ছে না। তিনিও এখনো কোনো সরকারি অথবা বেসরকারি ত্রাণ সহায়তা পাননি বলে অভিযোগ করেন।

একই উপজেলার কর্ণপুর গ্রামের দিনমজুর পুলিন চন্দ্র বর্মণ (৪৮) অভিযোগ করেন, ‘করোনায় কর্মহীন হয়ে বাড়িতে বসে আছি। কিন্তু, কোনো সরকারি খাদ্য সহায়তা পাচ্ছি না। ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করাও দিনদিন কঠিন হয়ে উঠছে। কাজ করতে পারছি না তাই আয়ও নেই। এ অবস্থায় পরিবার নিয়ে মানেবতর জীবন পার করছি।’

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, চাহিদার তুলনায় মাত্র ২৫-২৭ শতাংশ মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তারা যেভাবে বরাদ্দ পাচ্ছেন সেভাবে বিতরণ করছেন।

“কর্মহীন অসহায় পরিবারের মানুষ আমাদের কাছে ত্রাণের দাবি করে। কিন্তু

আমরা তাদের জন্য কিছুই করতে পারছি না। কারণ প্রয়োজনের তুলনায় বরাদ্দ অপ্রতুল,’ বলেন ইউপি চেয়ারম্যান।

লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) উত্তম কুমার রায় বলেন, ‘উপজেলায় নয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে কর্মহীন শ্রমজীবী ও অসহায় মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে। কোনো এলাকার কর্মহীন মানুষ ত্রাণ না পেলে তার তালিকা করবেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। সেই তালিকা অনুযায়ী ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হবে।’

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

14h ago