যশোরে ৬০০ কালোমুখো হনুমান খাদ্য সংকটে
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে যশোরের কেশবপুরে খাদ্য সংকটে পড়েছে ছয়শ কালোমুখো হনুমান। এমতাবস্থায় নিরাপদ আবাসস্থল থেকে বেরিয়ে এসে তারা পাশের মণিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে হানা দিচ্ছে, ফসলের খেত তছনছ করছে এবং মানুষের বাড়িতে ঢুকে উৎপাত করছে।
কেশবপুর উপজেলা বন কর্মকর্তা আব্দুল মোনায়েম জানান, অভয়ারণ্যে বর্তমানে ছয়শ হনুমান রয়েছে। সরকারিভাবে তাদের জন্য প্রতিদিনের বরাদ্দ ৩৫ কেজি পাকা কলা, চার কেজি বাদাম এবং চার কেজি পাউরুটি। যা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য। ফলে খাদ্যাভাবে হনুমানের দল বিভিন্ন লোকালয়ে হানা দিচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, হনুমানগুলো আগে খাবারের জন্য বাজার এলাকায় ভিড় করতো। কিন্তু করোনা সংক্রমণ রোধে বাজারের দোকান ও হোটেল বন্ধ থাকায় তারা এখন ফসলের খেত ও বাড়িতে আসছে। কেশবপুর থেকে মনিরামপুর উপজেলার মুজগন্নি, দূর্গাপুর, সৈয়দ মাহমুদপুর, গোবিন্দপুর, বাটবিলা, বাঙালিপুর, নাগোরঘোপ, ফকিররাস্তা পেরিয়ে এখন পৌর শহরে অবস্থান করছে।
পৌর শহরের মোহনপুর, বিজয়রামপুর, হাকোবা, গাংড়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় হনুমানের পালের আনাগোনা বেড়েছে।
মুজগন্নি গ্রামের কৃষক আবদুল করিম বলেন, ‘হনুমানের দল যেভাবে প্রতিনিয়ত অত্যাচার করছে, তাতে বাড়িঘর ছেড়ে পালানো ছাড়া কোনো উপায় নেই।’
তিনি জানান, ইতোমধ্যে তার মাল্টা লেবুর বাগানে হানা দিয়েছিল হনুমান। সে কারণে এখন সার্বক্ষণিক পাহারা দিতে হচ্ছে।
অপর কৃষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘শুধু সবজি বা গাছের ফল নয়, পাট গাছের কচি ডগা, কচি ডাবও খেয়ে ফেলছে ক্ষুধার্ত হনুমান। এমনকি সুযোগ পেলে ঘরে ঢুকে রান্না করা হাড়ি ভর্তি খাবার পর্যন্ত নিয়ে যাচ্ছে।’
মণিরামপুর পৌরসভার হাকোবা এলাকার গৃহবধূ সুনিতা রাণী কুণ্ডু জানান, প্রতিদিন সকালের দিকে হনুমানের পাল বাড়ির আঙিনায় এসে বসছে। বাড়ির মধ্যে ঢুকে হাতে খাবার দেখলে কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
মণিরামপুর উপজেলা বন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জানান, কালোমুখো হনুমানগুলো পাশের কেশবপুর উপজেলা থেকে এসেছে। কেশবপুর পৌর শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হরিহর নদীর তীরে হনুমানের অভয়ারণ্য গড়ে ওঠে প্রায় দেড় যুগ আগে। সরকার এ অভয়ারণ্যে হনুমানের জন্য খাদ্যও বরাদ্দ করেছে।
Comments