পাঁচ জেলায় মুক্তি পেলেন ১২৩ কারাবন্দী

Kashimpur-central-jail
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার। স্টার ফাইল ছবি

করোনা পরিস্থিতিতে দেশের জেলা কারাগারগুলো থেকে লঘু অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত কয়েদিদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ শনিবার টাঙ্গাইল, গাজীপুর, বাগেরহাট, রাজবাড়ী ও লালমনিরহাটের কারাগার থেকে ১২৩ জন কারাবন্দীর মুক্তির খবর পাওয়া গেছে। দ্য ডেইলি স্টারের জেলা সংবাদদাতারা তাদের মুক্তির খবর দিয়েছেন।

টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইল জেলা কারাগার থেকে আজ শনিবার ৪৯ জন বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

জেলা কারাগার সূত্র জানায়, এই কারাগারে এক মাস থেকে এক বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত ৭৭ জন বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে আট জনের সাজা পূর্ণ হওয়ায় তারা আগেই মুক্তি পেয়েছেন। বাকি ৬৯ জনের মধ্যে ২০ জনের দণ্ড মওকুফ হলেও, জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে পারেননি। তাই তারা মুক্তি পাননি। বাকি ৪৯ জনকে আজ বিকেলে মুক্তি দেওয়া হয়।

টাঙ্গাইল জেলা কারাগারের জেল সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, তিন শতাধিক দণ্ডপ্রাপ্তের তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে তিন দফায় ৮৭ জনের সাজা মওকুফ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে বন্দী ধারণ ক্ষমতা ৪৬৭ জন। কিন্তু, এখানে আছেন এক হাজার ১১১ জন।

গাজীপুর

গাজীপুরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আজ দ্বিতীয় ধাপে দুই নারীসহ মোট ১৫ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। জেলার বিভিন্ন কারাগার থেকে এ পর্যন্ত মোট ২৫ বন্দীকে মুক্ত করা হয়েছে।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেলার বাহারুল আলম জানান, এ কারাগার থেকে শনিবার বিকেলে লঘুদণ্ডে দণ্ডিত ১৩ জন মুক্তি পেয়েছেন। অন্যদিকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারের জেলার আনোয়ার হোসেন দুই নারী বন্দীর মুক্তির কথা জানান।

এর আগে প্রথম ধাপে গাজীপুর জেলা ও কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারা কমপ্লেক্সের চার কারাগার থেকে দুই নারীসহ মোট ১০ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।

ছয় মাস থেকে এক বছর সাজা ভোগকারী, তিন মাস থেকে ছয় মাস সাজা ভোগকারী এবং তিন মাস পর্যন্ত সাজা ভোগকারী বন্দিরা মহামারীর কারণে এই মুক্তির সুযোগ পাচ্ছেন বলে জানান তারা।

মুক্তিপ্রাপ্তদের অধিকাংশই ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজাপ্রাপ্ত বলে জানান কারা কর্মকর্তারা।

বাগেরহাট

বাগেরহাট জেলা কারাগার থেকে ১৯ কয়েদিকে মুক্তি দিচ্ছে সরকার। এর মধ্যে আজ বিকেলে পাঁচ জন মুক্তি পেয়েছেন। এর আগে আরও এক জন মুক্তি পান।

বাকি ১৩ জনের অর্থদণ্ড থাকায় এখনও মুক্তি মেলেনি। জরিমানার টাকা পরিশোধের পরে তাদেরও মুক্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কারা কর্তৃপক্ষ।

বাগেরহাট জেলা কারাগারের জেলার এস এম মহিউদ্দিন হায়দার বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় কারাগারে চাপ কমাতে স্বল্পমেয়াদে দণ্ডিত অর্থাৎ ছয় মাস থেকে এক বছরের সাজাপ্রাপ্ত কয়েদিদের তালিকা চেয়েছিলেন কারা মহাপরিদর্শক। আমরা এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে ৪৮ কয়েদির তালিকা পাঠিয়েছিলাম। এরমধ্যে সরকার ১৯ জন বন্দিকে মুক্তির আদেশ দিয়েছেন। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী পাঁচ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বাকিদের সাজার সঙ্গে জরিমানা রয়েছে। জরিমানার টাকা পরিশোধ করা হলে মুক্তি দেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, বাগেরহাট জেলা কারাগারে বন্দী ধারণক্ষমতা চারশ। ধারণক্ষমতার প্রায় দ্বিগুন কয়েদি এই কারাগারে রয়েছেন।

রাজবাড়ী

রাজবাড়ী কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছে ৩৩ জন বন্দী। আজ শনিবার দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

রাজবাড়ী কারাগারের জেলার মো. মামুনুর রশিদ জানান, পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দুই দফা নির্দেশনায় মোট ৪২ জনকে মুক্তি দেওয়ার কথা বলা হয়। প্রথম দফায় গত ৬ এপ্রিল প্রথম দফায় তিন জনকে মুক্তি দেওয়ার আদেশ আসে এবং দ্বিতীয় দফার আদেশ গতকাল শুক্রবার পৌঁছায়। বিষয়টি অনুমোদন হয়ে আসার আগেই তালিকাভুক্ত মোট পাঁচজন মুক্তি পেয়েছেন। এরপর, আজ দুপুরে নারীসহ ৩৩ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

আজ মুক্তি পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৩০ জন ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেওয়া শাস্তিভোগ করছিলেন বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, জরিমানার টাকা পরিশোধ না করায় চারজনকে মুক্তি দেওয়া হয়নি। জরিমানার টাকা পরিশোধ করা হলেই তাদেরকেও মুক্তি দেওয়া হবে।

লালমনিরহাট

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে লালমনিরহাট জেলা কারাগার হতে আজ শনিবার বিকেলে সাধারণ ক্ষমায় বিভিন্ন মেয়াদী সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। লালমনিরহাট কারাগারের জেল সুপার কিশোর কুমার নাগ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জেল সুপার বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে করোনা সংক্রমণরোধে কারাগারে বন্দী কমাতে এই ১১ জনকে সাধারণ ক্ষমায় মুক্তি দিয়েছে কারা অধিদপ্তর।

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

5h ago