তারা নাচতে চান রোনালদিনহো-মেসি-ম্যারাডোনার শেষ যাত্রায়
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে তাদের পরিচিতি এখন বিশ্ব জুড়ে। চলতি বছর ‘ড্যান্সিং পলবিয়ারারস’ বা নাচুনে শববাহকদের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে ফেসবুক-টুইটারে। ঘানার এই শববাহকেরা শেষ যাত্রাকে আনন্দময় করে তুলতে চান। তাই বাদ্যযন্ত্রের তালে নাচতে নাচতেই কফিন বয়ে নিয়ে যান তারা।
শববাহকদের নেতা বেঞ্জামিন আইদু আবার ফুটবলের বিশাল ভক্ত। তার প্রিয় ক্লাব স্পেনের বার্সেলোনা ও ইংল্যান্ডের চেলসি। তিনি জানিয়েছেন, প্রিয় তারকাদের শেষ যাত্রায় নাচতে পারলে ভীষণ সম্মানিত বোধ করবেন তারা। সেই তালিকায় প্রথমেই আছেন রোনালদিনহো। এ ছাড়া, লিওনেল মেসি ও দিয়েগো ম্যারাডোনাও আছেন। তবে লুইস সুয়ারেজকে একেবারেই সহ্য করতে পারেন না তারা।
২০০৭ সালে ঘানার রাজধানী আক্রায় ‘নানা ওতাফ্রিয়া পলবিয়ারিং অ্যান্ড ওয়েটিং সার্ভিস’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান খোলেন আইদু। উদ্দেশ্য ছিল, শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানে বাদ্যযন্ত্রের তালে নেচে মৃত ব্যক্তির প্রতি সম্মানজ্ঞাপন করা। তার সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় বিখ্যাত হয়ে গেছে তার প্রতিষ্ঠান। আর নানা ধরনের মিম তো বানানো হচ্ছে প্রতিনিয়তই।
নিজের প্রতিষ্ঠানের কাজ সম্পর্কে ফরাসি ফুটবলবিষয়ক সংবাদমাধ্যম ‘ফুত মেরকাতো’কে আইদু বলেছেন, ‘(মৃত ব্যক্তির শেষকৃত্যে) কিছু লোক এখন আর কাঁদতে চায় না। অনেকেই অবশ্য কান্নাকাটি করে। তবে তারা কান্নাকাটি করুক বা না করুক, আমরা তাদের খুশি করি। আমরা যা করি, তাতে তারা খুশি হয়।’
আদুর কাছে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল, কোন প্রিয় ফুটবলারের শেষ যাত্রায় এভাবে নাচতে চান? তিনি জবাব দিয়েছেন, ‘আমি সবার দীর্ঘায়ু কামনা করি। কিন্তু যদি আমার সুযোগ হয়, (নাচতে নাচতে) রোনালদিনহোকে শেষ ঠিকানায় বয়ে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখি আমি। এরপর ম্যারাডোনা, আর সবশেষ মেসি। রোনালদিনহো হলেন এমন একজন খেলোয়াড়, যিনি সবসময় আমাকে অভিভূত করেছেন।’
বার্সেলোনা সমর্থক হলেও সুয়ারেজকে আইদু ও তার সঙ্গীরা দুচোখে দেখতে পারেন না। কারণ, ২০১০ বিশ্বকাপে ঘানার বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালের শেষ মুহূর্তে হাত দিয়ে গোল আটকে দিয়েছিলেন উরুগুয়ের ফরোয়ার্ড। তাতে পেনাল্টি পেলেও গোল করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন আসামোয়াহ জিয়ান। এরপর টাইব্রেকারে হেরে আফ্রিকার প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনালে ওঠার ইতিহাস গড়া হয়নি ঘানার।
কেবল তারা নন, গোটা ঘানাবাসী সুয়ারেজ নামটা অপছন্দ করেন বলে জানিয়েছেন আইদু। এমনকি একে অপয়া হিসেবে চিহ্নিত করে প্রবাদও চালু করা হয়েছে, ‘(বার্সা সমর্থক হলেও) আমি দ্বিধায় ভুগি, লজ্জা পাই। আমার খুব খারাপ লাগে। যখনই এই খেলোয়াড়কে দেখি, এমনকি যখনই সুয়ারেজ নামটা শুনি, আমার মন খারাপ হয়।’
‘আমাদের এখানে সুয়ারেজকে নিয়ে একটা কথা চালু হয়েছে। সুয়ারেজ নামের অর্থ অসম্ভব। যদি আপনি কোনো কিছু অর্জন করতে চান বা কোনো একটা অবস্থানে পৌঁছাতে চান, কিন্তু সেখানে যদি সুয়ারেজ থাকে, তাহলে আপনি সফল হতে পারবেন না। আপনি যতভাবেই চান না কেন, সুয়ারেজ যদি থাকে, তবে আপনি সেখানে পৌঁছাতে পারবেন না।’
Comments