বানর হত্যায় ৩ জনের নামে মামলা

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় একটি বানরকে গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে বন বিভাগ। মামলায় আসামিরা হলেন সাহেব আলী, জামাল মিয়া ও কুদ্দুস মিয়া।

আজ সোমবার মুঠোফোনে প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন জানান, এই ঘটনাটি তদন্ত করে গত ৫ এপ্রিল তিনি নিজে বাদি হয়ে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২ এ ৬ ও ৩৯ ধারায় তিন জনকে আসামি করে এই মামলা করেছেন। মামলা নং-৩৩।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৩১ মার্চ উপজেলার পশ্চিম লইয়ারকুল এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। ধারণা করা হচ্ছে, দিনের বেলা বানরটিকে হত্যা করা হয়। পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে বানরটি খাবারের খোঁজে লোকালয়ে আসলে কৌশলে বানরটিকে ধরে ফেলে হত্যাকারীরা।

পরে বস্তা দিয়ে ধরে গলাটিপে কুদ্দুস মিয়া, জামাল মিয়া ও সাহেব আলী মিলে প্রকাশ্যে নারী ও শিশুদের সামনে গলা টিপে হত্যা করে। এ সময় আরও ২/৩ জন তাদের সহযোগিতা করে।

বানর হত্যার সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাস্থলে যায় বনবিভাগ। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পায়।

বন বিভাগের সাথে থাকা প্রাণিপ্রেমী সোহেল শ্যাম পাপ্পু ও সৌরভ প্রসাদ সোম জানান, এলাকাবাসী কাছ থেকে তারা ভিডিও উদ্ধার করে। সেই ভিডিওতে দেখা যায় বানরটিকে খুবই নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এতে হত্যার প্রমাণ রয়েছে। হত্যার আগেই বানরটিকে আহত করে ধরা হয়।

এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গলের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন বলেন, ‘আমাদের লোকজন প্রাথমিক তদন্ত করে এর সত্যতা পেয়েছে। এজন্য মামলা করা হয়েছে। এরপর এই ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল করিম কিম বলেন, ‘আমরা প্রায়ই বিভিন্ন বন্যপ্রাণী হত্যার সংবাদ শুনি। এলাকাবাসী উল্লাস করে বন্যপ্রাণী হত্যা করে। মৃত প্রাণির সঙ্গে সেলফি তোলে। বহু হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ থাকে সেসব ছবিতে। এরপরও বনবিভাগকে খুব একটা দৃষ্টান্তমূলক আইনি ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘শ্রীমঙ্গলের এই ঘটনাটি একই সঙ্গে নৈতিক অবক্ষয় ও আইন লঙ্ঘনের ধৃষ্টতা দেখিয়েছে। এর উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাই। প্রয়োজনে বনবিভাগের পাশে থাকবে আমার সংগঠন।’