চকরিয়ায় গ্রামবাসীর ওপর দুর্বৃত্তের হামলা, ২৬ বাড়িতে আগুন, নিহত ১

মাতামুহুরী নদীতে জেগে ওঠা জমির দখল নিতে কক্সবাজারের চকরিয়ার খিলছাদক গ্রামে দুর্বৃত্তদের হামলায় একজন নিহত ও কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। হামলায় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ২৬টি বসত ঘর। চালানো হয়েছে লুটপাট।
কক্সবাজারের চকরিয়ার খিলছাদক গ্রামে অন্তত ২৬টি বসতবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে দৃর্বৃত্তরা। ছবি: স্টার

মাতামুহুরী নদীতে জেগে ওঠা জমির দখল নিতে কক্সবাজারের চকরিয়ার খিলছাদক গ্রামে দুর্বৃত্তদের হামলায় একজন নিহত ও কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। হামলায় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ২৬টি বসত ঘর। চালানো হয়েছে লুটপাট।

আজ বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের মাতামুহুরী নদী তীরের খিলছাদক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মনোয়ারা বেগম (৫৫) ওই গ্রামের মোজাহের আহমদের স্ত্রী।

আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের চকোরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

চকোরিয়া থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থল থেকে জানান, কৈয়ারবিলের খিলছাদক অংশে মাতামুহুরী নদী সিকিস্তির জায়গার দখল নিতে এই তাণ্ডব চালিয়েছে পাশ্ববর্তী ইউনিয়নের একদল গ্রামবাসী। যারা এই হামলায় জড়িত তাদের শনাক্তে চেষ্টা চলছে।

গ্রামবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে গ্রামের বড় অংশ মাতামুহুরী নদীর ভাঙনে বিলিন হয়ে যায়। তবে কয়েকবছর ধরে নদীতে তলিয়ে যাওয়া সেইসব জায়গা জেগে উঠছে। যাদের জায়গা তারা সেখানে বসতি গড়ে তোলে। কিন্তু নদীর ওপারের বরইতলীর গোবিন্দপুর গ্রামের সশস্ত্র লোকজন এপারে এসে বার বার জেগে উঠা জায়গা দখলে নেওয়ার চেষ্টা চালায়।

তারা বলেন,  আজ ভোররাতে শতাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী ফাঁকা গুলি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি হামলা চালায়। কমপক্ষে ২৬টি বাড়িতে লুটপাট চলে। পরে বসতবাড়িগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এতে সব বাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। লুট করা হয় গবাদী পশুও।

হামলায় আহতদের মধ্যে কয়েকজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন, মারা যাওয়া বৃদ্ধার স্বামী মোজাহের আহমদ (৭০), ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ন আহবায়ক সাজ্জাদ হোসেন (২৫),মো. মুরাদ (২৩)আবু ছালেক (৪২),  নবীর হোছাইন (৫০), গুলিবিদ্ধ হয়েছেন  মো. বাবলু (২২) ও মো. আলম (৪৫)।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ, থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমান, উপজেলা ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা মো. সাইফুল হাছান, হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর আমিনুল ইসলাম,  বরইতলী ও কৈয়ারবিল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জালাল আহমদ সিকদার ও মক্কী ইকবাল হোসেন। 

ইউএনও সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, ‘হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা তৈরি করে জমা দিতে ইতোমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে এসব  পরিবারকে সরকারিভাবে সার্বিক সহায়তা দিয়ে পুনর্বাসন করা যায়। এছাড়াও প্রাথমিকভাবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারগুলোকে সহায়তা দেওয়া হবে।’

কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত ২৬ পরিবারকে প্রাথমিকভাবে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে এক বস্তা করে চাল, দুই বান্ডিল ঢেউটিন ও সরকারিভাবে আরো দুই বান্ডিল করে ঢেউটিন দেওয়া হয়েছে। যাতে তাদের খাদ্য ও বাসস্থান নিশ্চিত হয়। তাছাড়া সরকারিভাবেও তাদেরকে সার্বিক সহায়তা দেওয়া হবে। আর যারাই এই হামলার সঙ্গে জড়িত তাদের খুঁজে বের করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে।’ 

পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Fashion brands face criticism for failure to protect labour rights in Bangladesh

Fashion brands, including H&M and Zara, are facing criticism over their lack of action to protect workers' basic rights in Bangladesh, according to Clean Clothes Campaign (CCC)..One year after a violent crackdown by state actors and employers against Bangladeshi garment workers protesting

Now