বঙ্গোপসাগরে রেকর্ড হওয়া সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’

Amphan Final-1.jpg

ভারত ও বাংলাদেশে আগামীকাল বিকালের মধ্যে আঘাত হানতে যাচ্ছে সুপার সাইক্লোন ‘আম্পান’। সিএনএন জানিয়েছে, এটি বঙ্গোপসাগরে এখন পর্যন্ত রেকর্ড হওয়া সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়।

গতকাল রাতে মার্কিন যৌথ টাইফুন সতর্কতা কেন্দ্র জানায়, বঙ্গোপসাগরে রেকর্ড করা ঝড়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আম্পান, যার বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ২৭০ কিলোমিটার (ঘণ্টায় ১৬৫ মাইল)। আম্পানকে আটলান্টিক মহাসাগরের হ্যারিকেন ক্যাটাগরি-৪ এবং পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের সুপার টাইফুনের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২৪৫ কিলোমিটার বেগে ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত হানবে।

সিএনএন বলছে, এটি বঙ্গোপসাগরে আঘাত হানা দ্বিতীয় সুপার সাইক্লোন। এর আগে, ১৯৯৯ সালে সর্বশেষ সুপার সাইক্লোনে প্রায় ১৫ হাজার গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারায়।

করোনাভাইরাস মহামারির ঝুঁকিতে থাকা ভারত ও বাংলাদেশের কয়েক কোটি মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এই সুপার সাইক্লোন। বুধবার বিকালের মধ্যে এটি ভারত ও বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে।

ভারতীয় কর্মকর্তারা জানান, পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার উপকূলীয় অঞ্চলের তিন লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন।

ভারতের জাতীয় দুর্যোগ ত্রাণ বাহিনীর (এনডিআরএস) মহাপরিচালক সত্য নারায়ণ প্রধান জানান, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সাধারণত পাঁচ লাখ মানুষ থাকতে পারে। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে সামাজিক দূরত্বের নিয়ম মানায় এখন সেই সক্ষমতা দুই লাখে নেমেছে।

বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান সিএনএনকে বলেন, ‘উপকূলীয় অঞ্চল থেকে প্রায় ২০ লাখ মানুষকে ১২ হাজারেরও বেশি আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ভারতে এক লাখেরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ হাজারেরও বেশি।

সিএনএন জানায়, একইসঙ্গে দুই দুর্যোগ মোকাবিলা করা উভয় সরকারের পক্ষেই চ্যালেঞ্জ। বিশেষত, আশ্রয়কেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বেশ কঠিন।

সত্য নারায়ণ প্রধান বলেন, ‘এটা দ্বিগুণ চ্যালেঞ্জের। উদ্ধার কাজের সময় আমাদের কর্মীদের বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক, গ্লাভস ব্যবহার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

ভারতের ওড়িশা রাজ্যের বিশেষ ত্রাণ কমিশনার প্রদীপ জেনা বলেন, ‘মহামারি ও ঘূর্ণিঝড় দুটোর মধ্যে ভারসাম্য রেখেই আমাদের কাজ করতে হবে। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে আমরা সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেব না। কারণ যাদের বাড়ির কাঠামো ভালো, তারা নিজ বাড়িতেই সুরক্ষিত থাকবেন। দুর্যোগের সময়ে আশ্রয়কেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলাটা সম্ভব নাও হতে পারে।’

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারণে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতেও ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারের সমুদ্রের কাছেই উখিয়া উপজেলায় ঝুঁকিপূর্ণ জমিতে বাস করছে। বিশ্বের এই বৃহত্তম শরণার্থী শিবিরে গত সপ্তাহেই প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

4h ago