বিড়ি-সিগারেট উৎপাদন বন্ধের প্রস্তাব নাকচ করল শিল্প মন্ত্রণালয়

ছবি: এএফপি

বিড়ি সিগারেটসহ তামাকজাত পণ্যের উৎপাদন, সরবরাহ ও বিক্রি সাময়িকভাবে বন্ধ করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। সরকারের রাজস্ব আয়, তামাক উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণের সঙ্গে কর্মসংস্থান ও বিদেশি বিনিয়োগের কথা বিবেচনায় তামাক পণ্যের উৎপাদন ও বিপণন চালু রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়।

তামাক পণ্যের উৎপাদন ও বিক্রি চালু রাখার ব্যাখ্যায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ শিল্পের সঙ্গে হাজার হাজার চাষি এবং শ্রমিকের কর্মসংস্থানের বিষয়টি জড়িত। জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হলেও শিল্পোন্নত বিশ্বসহ গোটা পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত তামাক শিল্প চালু রয়েছে। বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এককভাবে এ শিল্পের অবদান সবচেয়ে বেশি। আমাদের জাতীয় রাজস্ব আয়ের উল্লেখযোগ্য অংশ এ শিল্পখাত থেকে আসে।

এসব কারণে তামাক পণ্যের উৎপাদন বন্ধ করা এখন সমীচীন হবে না বলে মনে করছে শিল্প মন্ত্রণালয়।

এর আগে গতকাল মহামারি মোকাবিলায় সব ধরণের তামাক পণ্য উৎপাদন, সরবরাহ, বিপণন ও তামাকপাতা ক্রয়-বিক্রয় কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার এবং তামাক কোম্পানিগুলোকে দেওয়া অনুমতিপত্র প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তামাক গ্রহণকারীদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে মৃত্যুর উচ্চ ঝুঁকি বিবেচনায় বিড়ি সিগারেটসহ ধোঁয়াহীন তামাক পণ্য যেমন: গুল, জর্দা উৎপাদন ও বিক্রিতে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছিল ওই চিঠিতে।

তবে শিল্প মন্ত্রণালয় বলছে, হুট করে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে তামাক পণ্যের বিক্রি বন্ধ করা কঠিন। এতে কালোবাজারিরা উৎসাহিত হবে এবং বৈদেশিক মুদ্রা ও রাজস্ব আয় হারাবে সরকার। এ শিল্প সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিলেও, ধূমপায়ীরা এটি সেবন করবে। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত মোটিভেশন ছাড়া শুধুমাত্র সাময়িক উৎপাদন বন্ধ করে করোনাকালে ধূমপান প্রতিরোধ করা যাবে না।

দেশে শিল্প উৎপাদনে স্থবিরতার মধ্যে তামাক পণ্যের অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে শিল্প মন্ত্রণালয় বলেছে, বৈশ্বিক অর্থনীতির মতো বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতি যথেষ্ট চাপে হয়েছে এবং আগামী দিনে অনিবার্যভাবে এই চাপ বাড়বে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় শিল্প-কারখানা ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড অনেকটা স্থবির হয়ে রয়েছে। এতে করে প্রান্তিক পর্যায়ে অনেক লোক বেকার হয়ে গেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে নগদ অর্থ ও ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি গ্রহণ করলেও উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে সরকারের জন্য দীর্ঘদিন এটি চালিয়ে নেয়া কষ্টকর হবে। এই অবস্থায় বিদ্যমান কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং শিল্প উৎপাদন বন্ধ করলে, তা হবে জাতীয় মারাত্মক ক্ষতি।

Comments

The Daily Star  | English
Tarique Rahman on interim government

Interim govt must not be allowed to fail: Tarique addresses BNP rally

Thousands join BNP rally from Nayapaltan to Manik Mia Avenue

9h ago