বাউফলে যুবলীগ নেতা নিহতের মামলা মেয়র ও প্রথম আলোর সংবাদিকসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে

পটুয়াখালীর বাউফলে যুবলীগ নেতা তাপস কুমার দাস খুনের ঘটনায় বাউফল পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক জুয়েলসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এই মামলায় প্রথম আলোর বাউফল প্রতিনিধি এ বি এম মিজানুর রহমানকে ২০ নম্বর আসামি করা হয়েছে।

পটুয়াখালীর বাউফলে যুবলীগ নেতা তাপস কুমার দাস খুনের ঘটনায় বাউফল পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক জুয়েলসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এই মামলায় প্রথম আলোর বাউফল প্রতিনিধি এ বি এম মিজানুর রহমানকে ২০ নম্বর আসামি করা হয়েছে।

নিহতের ভাই পঙ্কজ কুমার দাস বাদী হয়ে সোমবার রাতে বাউফল থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ওই দুজন ছাড়াও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুর রহমান হাসান, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ রাহাদ জামসেদ, বাউফল সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইউসুফকে আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্ত অন্যরাও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।

জানা গেছে, ঈদের আগের দিন জেলা পরিষদের সামনে একটি তোরণ নির্মাণকে কেন্দ্র করে এমপি আ স ম ফিরোজ এবং পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জিয়াউল হক জুয়েল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এই ঘটনায় যুবলীগের নেতা তাপস কুমার দাস (৩৪) গুরুতর আহত হন। ওই রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

সাংবাদিক মিজান বলেন, ‘আমাকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যেই আসামি করা হয়েছে।’

বাউফল থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নেওয়া হয়েছে। এই মামলায় একজন সাংবাদিক আসামি হওয়ার কথা অন্য সাংবাদিকদের মাধ্যমে জেনেছি। পুলিশ তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। নিরপরাধ কারও হয়রান হওয়ার অবকাশ নেই।’

এদিকে প্রথম আলোর সাংবাদিককে হত্যা মামলায় আসামি করা ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন, বাউফল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাচ্চুসহ কর্মরত সাংবাদিকরা। এ ছাড়াও, পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মিজানকে আসামি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অবিলম্বে মিজানকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

বাউফলের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আজ জিয়াউল হক জুয়েলের পক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। দুপুরে পৌর ভবনের ডা. এ এফ এম নাসির উদ্দিন সভা কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে মেয়রের লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনান তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবদুল লতিফ খান বাবুল।

লিখিত বক্তব্যে মেয়র বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে আমি যখন এলাকায় অসহায় মানুষকে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা দিচ্ছি তখন একটি মহল ঈর্ষান্বিত হয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে ঈদের আগের দিন বাউফল থানা সংলগ্ন জেলা পরিষদের ডাকবাংলোর সামনে বাউফল পৌরসভার উদ্যোগে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বাস্থ্যবিধি নির্দেশনা সংবলিত ব্যানার লাগাবার সময় নাজিরপুরের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুকের নেতৃত্বে ৩০-৪০ সন্ত্রাসী এসে বাধা দেয় এবং ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং বাউফল সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপারের মধ্যস্থতায় বিষয়টি নিষ্পত্তি করার জন্য থানার কনফারেন্স রুমে বৈঠক শুরু হয়। ওই বৈঠকে মেয়রসহ নাজিরপুরের চেয়ারম্যানও উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক চলাকালীন কালাইয়া ইউপির চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন মোল্লার নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন সন্ত্রাসী ফের ব্যানার স্থাপনে বাধা দেয়। পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিবেশ শান্ত করে। ওই সময় তাপস কুমার দাস নামের এক ব্যক্তি আহত হন এবং তিনি পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

সংবাদ সম্মেলনে তাপস হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করে ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago