লঞ্চে সামাজিক দূরত্ব না মেনে যাত্রী পরিবহন
বরিশাল ও পিরোজপুরে শুরু হয়েছে লঞ্চে যাত্রী পরিবহন। তবে, প্রত্যেকটি লঞ্চে হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ স্বাস্থ্যরক্ষা বিধি মেনে চলার কথা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রেই ব্যতিক্রম দেখা গেছে। দীর্ঘ বন্ধের পর প্রথম দিনই যাত্রীদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
বরিশাল নদী বন্দর পরিদর্শন করে দেখা গেছে, তিনটি লঞ্চ সুরভী-৯, অ্যাডভেঞ্চার-৯ ও সুন্দরবন-১১ বরিশাল থেকে ঢাকা ছেড়েছে। এসব লঞ্চের সবগুলো কেবিনের টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। অধিকাংশ লঞ্চের ডেকে ভিড় দেখা গেছে। শুধুমাত্র সুন্দরবন লঞ্চে জীবাণুনাশক টানেল, তাপমাত্রা পরীক্ষার ব্যবস্থা ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে দেখা গেছে। কিন্তু, ডেকের কোথাও সামাজিক দূরত্ব মানা হয়নি। কর্তৃপক্ষ লঞ্চঘাটে ঢুকতে জীবাণুনাশক টানেল স্থাপন করেছে।
সুন্দরবন-১১ লঞ্চের ডেকের যাত্রী গিয়াস জানান, তিনি কেবিন না পেয়ে ডেকে এসে দেখেন এখানেও ভিড়।
সাইফুল আলম নামের আরেক যাত্রী জানান, অফিস খোলা থাকায় বাধ্য হয়ে ঢাকা যাচ্ছেন। অন্য যাত্রী ফাতেমা জানান, তিনি ঢাকায় বসবাস করেন। লকডাউনের কারণে বাড়িতে এসেছিলেন, এখন কাজের জায়গায় ফেরত যাচ্ছেন।
বিআইডব্লিউটিএ’র সহকারী পরিচালক আজমল হুদা মিঠু জানান, লঞ্চ মালিকদের স্বাস্থ্য বিধি মেনে লঞ্চ পরিচালনার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সুন্দরবন নেভিগেশন কোম্পানির সুপারভাইজার জাকির হোসেন জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে তারা কেবিনের ১৭০ টি টিকেটের সম্পূর্ণ বিক্রয় করেছেন।
সুরভি লঞ্চের মালিক রিয়াজুল করিম জানান, আগামী দুই এক দিনের মধ্যে আরও ভিড় হতে পারে। কোনো ভাড়া বাড়ানো হয়নি বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতির সহসভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু জানান, লঞ্চের সংখ্যা বাড়লে সামাজিক দূরত্ব মানা সম্ভব হবে। শুধু মাত্র স্বল্প সংখ্যক লঞ্চ চলাচল করায় ভিড় মনে হচ্ছে।
ডেকে যাত্রীদের ভিড় থাকলেও এখানে জেলা প্রশাসনের কোন ম্যাজিস্ট্রেট দেখা যায়নি।
বরিশাল জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভিড়ের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘তিনটি ডেকে আর যাতে যাত্রী না উঠতে পারে সেজন্য নির্দেশ দিয়েছি।’
অন্যদিকে, পিরোজপুর থেকেও স্বাভাবিক হয়েছে লঞ্চ চলাচল। হুলারহাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে বিকেলে ছেড়ে যাওয়া দুটি লঞ্চে ওঠার সময় যাত্রীদের শারিরীক দূরত্ব নিশ্চিত করা যায়নি। আগের মতোই সবাই হুড়োহুড়ি করেই উঠেছেন লঞ্চে।
আজ বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে চারটার মধ্যে এম ভি পারাবত- ১৪ এবং মর্নিংসান- ৯ নামের লঞ্চ দুইটি হুলারহাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। লঞ্চ দুটি ভান্ডারিয়া থেকে ছেড়ে আসার পর হুলারহাট লঞ্চ টার্মিনালে ঘাট দেয়।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী যাত্রীদের স্বাস্থ্যসুরক্ষার জন্য সব ধরণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন হুলারহাট লঞ্চ টার্মিনালের ইজারাদার মজনু তালুকদার।
লঞ্চ চলাচলের সার্বিক বিষয় সম্পর্কে খোঁজ নেওয়ার জন্য বিকেলে হুলারহাট লঞ্চ টার্মিনাল পরিদর্শন করেন পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য লঞ্চ কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করছে। তাদের সার্বিক সহযোগীতার জন্য পুলিশ কাজ করছে।
Comments