ফরিদপুর, হবিগঞ্জ ও ঠাকুরগাঁওয়ে ৩ শিক্ষার্থীর ‘আত্মহত্যা’
ফরিদপুর, হবিগঞ্জ ও ঠাকুরগাঁওয়ে তিন শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তারা তিন জনই মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। আজ রবিবার ফল ঘোষণায় তারা অকৃতকার্য হওয়ার খবর পায়।
আজ দুপুর ২টার দিকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পৌরসভার কাফুরিয়া সদরদী এলাকায় ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় এক শিক্ষার্থীকে দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা।
দ্রুত ওই শিক্ষার্থীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ওই শিক্ষার্থী কাফুরিয়া সদরদী মহল্লার এক ওষুধ ব্যবসায়ীর মেয়ে। ভাই ও বোনের মধ্যে সে ছিল বড়।
সে অনিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে ভাঙ্গা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অকৃতকার্য হয়।
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, এর আগে গতবছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েও অকৃতকার্য হয়েছিল সে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মানিক মিয়া বলেন, ‘পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পর পর দুই বার এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে অকৃতকার্য হয়ে আত্মহননের পথ বেছে নেয় সে।’
তিনি বলেন, ‘পরিবারের সদস্যদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।’
হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায় দুপুর দেড়টার দিকে আরেক শিক্ষার্থীর ‘আত্মহত্যা’র খবর পাওয়া গেছে।
লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত শিক্ষার্থী লাখাই উপজেলার বেগুনাই গ্রামের বাসিন্দা। সে মাদনা এসইএসডি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় ওই শিক্ষার্থী বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঠাকুরগাঁওয়ে এক শিক্ষার্থী ‘আত্মহত্যা’ করেছে ও একই উপজেলায় অপর এক শিক্ষার্থী কীটনাশক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে।
আজ দুপুরে উপজেলার তিনুয়া ও বালিহারা গ্রামে পৃথক দুটি ঘটনা ঘটেছে বলে নিশ্চিত করেছেন হরিপুর থানার ওসি মো. আমিরুজ্জামান।
তিনুয়া গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষার্থীর বাবা জানান, তার মেয়ে হরিপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবছর অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে ব্যর্থ হয়ে ফলাফল পাওয়ার পর ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে।
তিনি আরও জানান, এসময় তিনি ও তার স্ত্রী বাড়ির পাশে বোরো ধান কাটতে যাওয়ায় মেয়ে বাড়িতে একা ছিল। প্রতিবেশীদের কাছে খবর পেয়ে বাড়িতে এসে ঝুলন্ত দেহ নামিয়ে হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অপরদিকে, উপজেলার বালিহারা গ্রামে অপর এক শিক্ষার্থী কীটনাশক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে বলে জানা গেছে।
সে মশানগাঁও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হতে ব্যর্থ হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই শিক্ষার্থী দুপুরে ফলাফল পেয়ে আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে কীটনাশক পান করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে পরিবারের সদস্যরা তাকে দ্রুত হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর অবস্থার অবনতি হলে তাকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সে সেখানে চিকিৎসাধীন।
Comments