আজ থেকে শুরু হচ্ছে বৈধতার আবেদন গ্রহণ, চলবে দেড় মাস
বহু প্রতীক্ষার পর আজ থেকে ইতালিতে বসবাসকারী বৈধ কাগজপত্রহীন অভিবাসীরা বৈধতার জন্য আবেদন করতে পারবেন। আইনে বলা হয়েছে, শুধু কৃষি ও গৃহস্থালির কাজের বিনিময়ে বৈধতা দেওয়া হবে। তবে, এই শর্তের বিরুদ্ধে ঘোর আপত্তি উঠেছে অভিবাসী পাড়ায়। প্রতিবাদী মানুষ খোলা চত্বরে নেমে এসেছেন। তারা বলেছেন, কোনো শর্ত চাই না। আমরা চাই— সবার জন্য স্টে পারমিট।
গতকাল রোববার ইতালির রাজধানী রোম ও ভেনিসের হাজারো অভিবাসী রাস্তায় নেমে আসেন। তারা শহরের প্রাণকেন্দ্রে জড় হয়ে বৈধতার আইন সংস্কারের দাবি জানান। রোম থেকে ‘সবার জন্য সোজর্ন বাস্তবায়ন কমিটি’র সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী বাচ্চু বলেন, ‘রোমের সমাবেশে এক হাজারেরও বেশি মানুষ একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ করেছে, দাবি জানিয়েছে’।
‘আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, শুধুমাত্র কৃষি ও গৃহস্থালির কাজের বিনিময়ে কাগজপত্র দিলে অধিকাংশ মানুষ বৈধতার বাইরে থেকে যাবে। মালিকপক্ষ ও দালাল চক্র মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করবে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে’, বলেন বাচ্চু।
তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ এর কারণে এই মুহূর্তে কেউ গৃহকাজের জন্য শ্রমিক রাখতে চাইবে না। অন্যদিকে, কৃষি কাজের জন্যও এত বিপুল শ্রমিক দরকার নেই। ফলে খুব অল্পসংখ্যক মানুষ আইনসম্মত উপায়ে বৈধ হতে পারবেন। অন্যদের মধ্যে বিষণ্নতা, বিদ্রোহ তৈরি হবে। এই সুযোগ গ্রহণ করবে দালাল চক্র। অভিবাসীদের ভুল বুঝিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেবে তারা। কমিউনিটিতে কাজের কন্ট্রাক্ট কেনাবেচা হবে।’
‘আমাদের দাবি পরিষ্কার— ইতালিতে অতীতে যারা কাজ করেছেন ও এখন করছেন, সবাইকে ডকুমেন্ট দিতে হবে’, যোগ করেন তিনি।
নূরে আলম সিদ্দিকী বাচ্চু জানান, দীর্ঘদিন পর রোমের সমাবেশে বাংলাদেশি কমিউনিটির সব শ্রেণির অভিবাসী ও সব সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
তিনি জানান, আগামী এক সপ্তাহ তারা পর্যবেক্ষণ করবেন যে সরকার তাদের দাবিতে কর্ণপাত করে কি না। অন্যথায় লাগাতার অবস্থানের মতো শক্ত কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবেন।
আজ থেকে ইতালিতে বৈধতার জন্য আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে। যা আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত চলবে। ইতালীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে অনলাইন ফরম পূরণ করে আবেদন করা যাবে। প্রধানত দুই শ্রেণির কাজের বিনিময়ে বৈধতার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। কৃষি ও গৃহস্থালির কাজ। এসব কাজের বিনিময়ে বৈধতার জন্য আবেদন করতে হবে কাজের মালিকের মাধ্যমে।
এই বিষয়ে নূরে আলম সিদ্দিকী বাচ্চু বলেন, ‘মালিকের বার্ষিক আয় কত, তা একজন শ্রমিকের পক্ষে জানা সম্ভব হয় না। এই সুযোগ নিয়ে দালাল ও অসৎ মানুষরা মালিক সেজে অভিবাসীদের সঙ্গে প্রতারণা করবে।’
উল্লেখ্য, গৃহস্থালির কাজের মালিকদের ২৭ হাজার ও কৃষিকাজের মালিকদের ৩০ হাজার ইউরো বার্ষিক আয় থাকতে হবে। অন্যথায় তাদের আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না। যারা ২০২০ সালের ৮ মার্চের পরে ইতালিতে এসেছেন, আসছেন তারা এবারের আইনে বৈধ হতে পারবেন না। একইভাবে ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবরের আগে যাদের স্টে পারমিট বাতিল হয়েছে, তারাও এই আইনে বৈধতার আবেদন করতে পারবেন না।
আরও পড়ুন:
Comments