‘আমি সুস্থ হয়ে উঠবো, সুস্থ হয়ে উঠতেই হবে’

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে। বর্তমানে তিনি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। করোনায় আক্রান্ত তার স্ত্রী নারী নেত্রী শিরীন হক ও ছেলে বারিশ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থাও উন্নতির দিকে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে। বর্তমানে তিনি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। করোনায় আক্রান্ত তার স্ত্রী নারী নেত্রী শিরীন হক ও ছেলে বারিশ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থাও উন্নতির দিকে।

আজ মঙ্গলবার দ্য ডেইলি স্টারকে এসব কথা জানিয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘আমার শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে। ভালো হয়ে উঠছি। গলায় ছোট ইনফেকশন হয়েছে। তবে, সেটা বড় কিছু না। ঠিক হয়ে যাবে। ভালো ও স্বাভাবিকভাবেই খেতে পারছি। রক্তে হিমোগ্লোবিন একটু কমে যাওয়ায় আজকে হয়তো এক ব্যাগ রক্ত নিতে হবে। সুস্থ হচ্ছি এবং নিজেই তা অনুভব করছি। স্বাভাবিক যে ওষুধ নেওয়ার কথা, যেগুলো দরকার, সেগুলো নিচ্ছি।’

‘এক্স-রে করা হয়েছে, ফলাফল ভালো এসেছে। এক্স-রেতে খারাপ কিছু পাওয়া যায়নি। ডাক্তাররা সিটি স্ক্যান ও এমআরআই করাতে বলেছেন। কিন্তু, রাজি হইনি’, বলেন তিনি।

‘কেন রাজি হননি?’— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কখনোই কোনো অপ্রয়োজনীয় কাজ করি না। চিকিৎসার ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় কাজ খুবই অপছন্দ করি। যা করা দরকার নেই, যে ওষুধ খাওয়া দরকার নেই, সেই পরীক্ষা ও সেই ওষুধ খাওয়া খুবই অদরকারি কাজ। আমি এটা পছন্দ করি না। এক্স-রেতে যখন কোনো বিষয় পরিষ্কার বোঝা যায় না, তখন সিটি স্ক্যান বা এমআরআই দরকার হতে পারে।  কিন্তু, আমার যেহেতু এক্স-রে করা হয়েছে এবং এতে পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে যে পরিস্থিতি উন্নতির দিকে, সমস্যা নেই, সেই কারণে সিটি স্ক্যান বা এমআরআই করার কোনো দরকার নেই। এজন্যেই করাইনি।’

‘তার মানে আপনার নিজের চিকিৎসা নিজেই করছেন, নাকি চিকিৎসকদের পরামর্শ শুনছেন?’— উত্তরে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আমার চিকিৎসা ডাক্তাররাই করছে। আমি করছি না। কিন্তু, কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমি তাদের সহায়তা করছি। যেটা দরকার নেই, সেটা আমি করবো না। যে ওষুধের দরকার নেই, সেটা আমি খাচ্ছি না। ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনা করেই এটা করছি।’

‘আমি সুস্থ হয়ে উঠবো। আমাকে তো সুস্থ হয়ে উঠতেই হবে। অনেক কাজ বাকি। কিটের অনুমোদন এখনো আটকে থাকলো। মানুষ চিকিৎসাবঞ্চিত, বিশেষ করে গরিব মানুষ খুব কষ্টে আছে। তাদের জন্যে কত কিছু করার আছে। এমন সময় বেশিদিন অসুস্থ হয়ে থাকা যাবে না। সবার দোয়ায় আশা করছি ভালো হয়ে উঠছি’, যোগ করেন ডা. জাফরুল্লাহ।

স্ত্রী শিরীন হক ও ছেলে বারিশ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শিরীনের সামান্য জ্বর আছে। তবে, অন্য কোনো সমস্যা নেই। বারিশের জ্বর নেই। সে বেশ ভালো আছে। তারা দুই জনই বাসায় আইসোলেশনে রয়েছে।’

গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, শিরীন ও বারিশের শারীরিক অবস্থা এখন ভালো। বর্তমানে যে অবস্থা, তাতে মনে হয় না তাদের হাসপাতালে আসতে হবে কিংবা বিশেষ কিছু করতে হবে। শিরীন হকের রক্তের অনেকগুলো পরীক্ষা করা হয়েছিল। পরীক্ষার ফলে খারাপ  কিছু পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, গত ২৫ মে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত কিট দিয়ে পরীক্ষাতেই তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এরপরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) পিসিআর পরীক্ষাতেও তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ডা. জাফরুল্লাহর শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পরেই তার স্ত্রী শিরীন হক ও ছেলে বারিশ চৌধুরীরও করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।

আরও পড়ুন:

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করোনা পজিটিভ

বিএসএমএমইউর পরীক্ষাতেও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করোনা পজিটিভ

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পর শিরীন হক ও বারিশ চৌধুরীও করোনায় আক্রান্ত

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অবস্থা ‘স্থিতিশীল’

‘আমি ভালো আছি’

প্লাজমা থেরাপি নিয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর এবারের উদ্যোগ ‘প্লাজমা ব্যাংক’

আমাদেরই সবার আগে এই কিট বিশ্ববাসীর সামনে আনার সুযোগ ছিল: ড. বিজন

গণস্বাস্থ্যের কিট, বিজ্ঞানের বিশ্লেষণে দেশীয় রাজনীতি

২৫ দিনে ৩০১ শয্যার করোনা হাসপাতালের জন্ম অথবা অপমৃত্যু!

মুক্তিযুদ্ধ, গণস্বাস্থ্য, ডা. জাফরুল্লাহ ও মাছ চোর

Comments